শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ফন্দি

এশিয়ার উপ-আঞ্চলিক সড়ক চলছে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ

খ,আ,ম রশিদুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে | প্রকাশের সময় : ২৯ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০০ এএম

দক্ষিণ এশিয়ার উপ-আঞ্চলিক সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটতে যাচ্ছে। আশুগঞ্জ নদীবন্দরের সাথে আখাউড়া স্থলবন্দরকে সংযুক্ত করার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও এক্সিম ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত ২য় ভারতীয় নমনীয় ঋণ চুক্তির আওতায় আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া স্থলবন্দর মহাসড়ককে চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটি গৃহীত হয়। প্রকল্প মূল্য ৩ হাজার ৫শ’ ৬৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। ধরখার থেকে আখাউড়া স্থলবন্দরগামী হাইওয়ে সড়কে সরকারি অর্থ হাতিয়ে নিতে নতুন নতুন ভবন ও স্থাপনা তৈরির হিড়িক পড়েছে।

সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রকল্পটি ২০১৭ সালের ২০ জুলাই একনেকে অনুমোদিত হয়। প্রাথমিকভাবে ২০২১ সালের ৩০ জুন প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল, ভুটানের সাথে বাংলাদেশের নতুন সড়ক নেটওয়ার্ক যুক্ত হবে। এটি বাস্তবায়ন হলে দেশের অর্থনীতির চাকা অনেকটাই সচল হবে। বাংলাদেশের জন্য উপ-আঞ্চলিক করিডোর খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। পূর্বাঞ্চলের জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া দিয়ে নতুন হাইওয়ে নেটওয়ার্ক যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। পুরোপুরি ভূমি অধিগ্রহণ না করায় করোনাসহ কনসালটেন্টরা সময় মত কাজ করতে না পারায় কিছুট ধীরগতিতে চলছে ফোরলেন প্রকল্পের কাজ। ভূমি অধিগ্রহণ জনিত সমস্যা কেটে গেলে ও বর্ষার মওসুমের পরই বিভিন্ন স্থানে নতুন কার্যক্রম শুরু হবে।

জানা গেছে, দেশের গুরুত্বপূর্ণ আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে ৫০.৫৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কের প্রাথমিক কাজ এখন শুরু হয়েছে। এর অধীনে ১৬টি সেতু, ২টি রেলওয়ে ওভারপাস, ৩টি আন্ডারপাস, ৩৬টি কালভার্ট এবং ১০টি ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ হবে। প্রকল্পটিতে ৩টি পূর্তকাজের প্যাকেজ রয়েছে। ১ম প্যাকেজে আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে সরাইল পর্যন্ত ১২.২১১ কি. মি., ২য় প্যাকেজে সরাইল থেকে ধরখার পর্যন্ত ২৭.০৫৪ কি. মি. এবং ৩য় প্যাকেজে ধরখার থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ১১.৩১৫ কিলোমিটার মহাসড়ককে ধীর গতিসম্পন্ন যানবাহন চলাচলের পৃথক দুইটি লেনসহ চার লেন জাতীয় মহাসড়কে উন্নীত করা হবে। প্রকল্পে ১০৭.৫০ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ রয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পটিতে মহাসড়ককে ৪ লেন জাতীয় মহাসড়ককে উন্নীতকরণের জন্য ৩টি পূর্তকাজের প্যাকেজের মধ্যে ২টি প্যাকেজের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। বাকি ১টি প্যাকেজের দরপত্র আহবান করা হয়েছে। যার মূল্যায়ন কার্যক্রম চলমান। বর্তমানে পূর্ত কাজের দুইটি প্যাকেজের অধীনে সার্ভে কাজ, বিভিন্ন সেতুর স্থানে মাটি পরীক্ষা ও টেস্ট পাইলিং কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে পাইলের লোড টেস্ট কাজ চলছে। শিগগির মূলপাইলিং কাজ শুরু হবে।

আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে সরাইল বিশ্বরোড হয়ে আখাউড়ার ধরখার দিয়ে এ সড়কটি প্রতিবেশী দেশ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্তে গিয়ে পৌঁছবে। এরমধ্যেই এ সড়কের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ ও মাটি পরীক্ষণসহ প্রাথমিক সকল কাজ শুরু হয়েছে। ধরখার থেকে আখাউড়া স্থলবন্দরগামী হাইওয়ে সড়কে সরকারি অর্থ হাতিয়ে নিতে নতুন নতুন ভবন ও স্থাপনা তৈরির হিড়িক পড়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, প্রকল্পের শুরুতেই ডাটাবেজ, ভিডিও ফুটেজ ও মানচিত্র প্রস্তুত করে সংরক্ষণ করা হয়েছে। সরকারি অর্থ হাতিয়ে নেয়ার সুযোগ নেই। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের বাস্তব কাজ শুরু হবে।

বাংলাদেশ-ভারত চুক্তির আওতায় ফোরলেনের কাজটি ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়ন করছে। এতে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা। ২০ শতাংশ দেবে বাংলাদেশ সরকার। অবশিষ্ট অংশ ভারত সরকার প্রদান করবে। প্রকল্পে ২৬৫ একর জমি অধিগ্রহণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ও ভারতের লাইন অব ক্রিয়েটের আওতায় ২টি প্যাকেজে এসব কাজ বাস্তবায়ন হবে। প্রকল্পের কাজ পুরোদমে শুরুর কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

আখাউড়া উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, অন্যায়ভাবে সম্ভাব্য সড়কের পাশে স্থাপনা করায় সম্প্রতি বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়। তারা মুচলেকা দিয়ে গেছে। সরকারি অর্থ হাতিয়ে নিতে স্থাপনা নির্মাণ করা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রকল্পের ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার শাহরুল আমিন জানান, বাড়তি অর্থ হাতিয়ে নেয়ার কোন সুযোগ নেই। জেলা প্রশাসক হায়াৎ উদ দৌলা খান বলেন, ভূমি অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাবকৃত স্থানের ভিডিও আগেই করা আছে। নুতন করে স্থাপনা নির্মাণের ক্ষতিপূরণ কেউ পাবেন না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন