পুলিশ ভাই পিটিয়েছে। অন্যান্যরা সহায়তা করেছে। মৃত্যুর পর স্বামীর লাশ লেবু গাছে ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার দেওয়া হয়। এমনিভাবে ১৬৪ ধারায় বিচারকের কাছে স্বামী হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক নৃশংস বর্ণনা দিয়েছেন স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন (৩২)। তিনি সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বন্দকাঠি গ্রামের আবিদ হোসেন মোল্যার স্ত্রী। বুধবার (৪ নভেম্বর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘাতক স্ত্রীর জবানবন্দী রেকর্ড করেন, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসমিন নাহার।
স্বামী বেকার। বিধবা হওয়ার পর আবিদের সাথে বিয়ে হয় তার। বিয়ের আট/নয় মাস পার হলেও স্বামী কোনো কাজ না করে ঘুরে বেড়াতো। স্ত্রীর বাবার বাড়ী বন্দকাঠি গ্রামে থাকতো আবিদ হোসেন বাবু (২৮)। শ্বশুর বাড়িতে থাকলেও বাবু তার (স্ত্রীর) কথা না শুনে পুলিশ ভাই আরিফুলের বাড়ীতে যেয়ে তার বিরুদ্ধে নালিশ করতো। এমনিভাবে দিনের পর দিন সংসারে অশান্তি লেগেই থাকতো। জবানবন্দীতে স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন আরো বলেন, ঘটনার রাতে (৩ নভেম্বর) তিনিসহ তার ভাই আরিফুল ও অন্যান্য আত্মীয়স্বজনসহ মামলার এজাহারে উল্লেখিত আসামীরা পরিকল্পনা করে স্বামী আবিদ হোসেন বাবুকে তার বন্দকাঠি গ্রামের বাড়িতে মারপিট করা হয়। পুলিশ ভাই আরিফ প্রথমে পিটাতে শুরু করে। প্লাস, খেজুর গাছের কাটা ওয়ালা ডাল, হাতুড়ি দিয়ে নির্যাতন করে হত্যার পর তাকে বাড়ির পাশে একটি বাতাবী লেবু গাছে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। হত্যায় তিনিসহ অন্যান্য আসামীরা সহযোগিতা করে। প্রচার করা হয় স্বামী আবিদ হোসেন বাবু আত্মহত্যা করেছে।
কালিগঞ্জ থানার ওসি দেলোয়ার হসেন বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) সকালে ১৬৪ ধারার জবানবন্দীর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বন্দকাঠি গ্রামে সাবিনার বাড়ির পাশ থেকে নিহত বাবুর ওপর নির্যাতনে ব্যবহৃত খেজুরের কাটা, হাতুড়ি, প্লাস, রক্তমাখা জামা, লুঙ্গিসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।
এছাড়া,সাবিনার ছোট ভাই পুলিশ কনস্টেবল আরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি মাগুরা জেলার শালিখা থানাধীন হাজরাহাটি তদন্ত কেন্দ্রে কর্মরত ছিলেন। আরিফুলকে নিয়ে রাতে জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে অন্যান্য আসামীদের ধরার জন্য। ওসি আরো বলেন, আরিফুলকে আদালতে প্রেরণ করে জিঙ্গাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে। আন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে জোর চেষ্টা চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন