কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) এক প্রভাবশালী শিক্ষক নেতাকে মূল সনদ ছাড়াই পদোন্নতি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রারের সমন্বয়ে গঠিত সনদ যাচাই-বাছাইকরণ কমিটি কাজ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাবশালী এক শিক্ষক নেতাকে সহকারী অধ্যাপক পদ থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিতেই প্রচলিত নিয়মের তোয়াক্কা না করেই শিক্ষকদের এক পক্ষের চাপে এ কাজ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক জ্যৈষ্ঠ শিক্ষককের সাথে কথা বলা জানা যায়, কোন শিক্ষক যদি উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন সেক্ষেত্রে তার উচ্চশিক্ষা সংশ্লিষ্ট সনদপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দিয়ে সে সনদ নথিভুক্ত করার জন্য আবেদন করতে হয়। আগে সনদ নথিভুক্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের নিকট আবেদন করতে হতো। তবে বর্তমান ভিসি যোগদানের পর ছয় অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রারের সমন্বয়ে সনদ যাচাই-বাছাইকরণ কমিটি গঠন করে দেয়। এরপর হতে এই কমিটিই সনদ যাচাই-বাছাই করে নথিভুক্ত করার কাজ করতো।
তবে এ শিক্ষক নেতার ক্ষেত্রে সনদ যাচাই-বাছাইকরণ কমিটিকে এড়িয়ে সরাসরি ভিসি এই বিষয়টিকে সিন্ডিকেটে উত্থাপন করেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬তম সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হয়, শুধুমাত্র করোনাকালীন সময়ের জন্য অধীন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কিংবা প্রেসিডেন্ট/ ভাইস প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল প্যাডে ডিগ্রি অর্জনের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্নের বিষয়ে প্রত্যয়নপত্র কিংবা কমপিলেয়শন সার্টিফিকেট দাখিল করে উচ্চতর পদের জন্য আবেদন করতে পারবে। তবে বাছাই বোর্ডে অবশ্যই ওই সকল শিক্ষককে উচ্চতর ডিগ্রি অজর্নের মূল সনদ/ সাময়িক সনদ প্রর্দশন করতে হবে।
তবে প্রভাবশালী ওই শিক্ষক নেতা সনদের স্ক্যান কপি প্রদর্শন করেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একজন শিক্ষক নেতাকে পদোন্নতি দিতে একটি পক্ষের চাপে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনিয়মের পসরা সাজিয়েছে। এদিকে সনদ যাচাই-বাছাইকরণ-নথিভুক্ত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে তাদের সভার কার্যবিবরণী পাঠিয়ে কাজ না করার সিদ্ধান্ত জানান।
এবিষয়ে সনদ নথিভুক্তকরণ কমিটির আহবায়ক বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র দেব বলেন,‘ আপনি যেখান থেকে ঘটনাটি শুনেছেন, সেখান থেকে তথ্য নিন। বিষয়টি সম্পর্কে আপনি অবগত কিনা জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন,‘ এটা অরিজিনাল সার্টিফাকিটের স্ক্যান কপি বলে নথিভুক্ত কমিটি একমত হয়েছেন। তারপরও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মহোদয় বিষয়টি সিন্ডিকেটে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেখানে অধিকতর যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
যাচাই-বাছাইকরণ কমিটির কাজ না করার সিদ্ধান্ত
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন