নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জের নূর হোসেন এলাকায় নেই। কিন্তু তার হাতে গড়া অবৈধ সাম্রাজ্য এখনও বহাল আছে। এখনো লোকে তাকে চেয়ারম্যান হিসেবে ডাকে। অভিযোগ রয়েছে, নূর হোসেনের হয়ে প্রতিদিন সিদ্ধিরগঞ্জে চাঁদাবাজি, দখল ও মাদক ব্যবসা চালাচ্ছেন তার পরিবারের সদস্যরা। খুনের সঙ্গেও যুক্ত হয়েছেন কেউ কেউ। নতুন করে দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করতে তৎপর নুর হোসেনের ভাই নুর সালাম এবং তার ছেলে কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল। এ দুজনের দৌরাত্মে অসহায় হয়ে পড়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার মানুষ।
জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জে শতাধিক বাস কাউন্টার থেকে প্রতিদিন একশ’ টাকা করে চাঁদা তোলেন কাউন্সিলর শাহজালাল বাদলের লোকজন। এই টাকা যায় শাহজালালের পকেটে। এ ছাড়া এলাকায় কোনো জমি বিক্রি বা ক্রয় করা হলে সেই নুর হোসেনের আমলের মতোই চাঁদা দিতে হয় নুর হোসেনের ভাই-ভাতিজাকে।
ভুক্তভোগিরা জানান, নুর হোসেনের ভাই নুর সালাম ও তার ছেলে কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল সম্প্রতি মুচলেকা দিয়ে আসারও পরও বিবাদমান একটি জমিতে বালু ফেলে দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন নূর সালাম। রাতের আঁধারে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ট্রাক যাগে বালু ফেলে সিদ্ধিরগঞ্জের আটি এলাকার জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর এ ঘটনায় নুর সালামকে সহযোগীতা করছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং নুর সালামের ছেলে শাহজালাল বাদল। তাদের অত্যাচার নির্যাতনের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এলাকাবাসী ও অভিযোগ সূত্রমতে, সিদ্ধিরগঞ্জের আটি এলাকায় ৪১ শতাংশ জমি জনৈক আলফাতুন নেসার কাছ থেকে ক্রয় করেন সিদ্ধিরগঞ্জের সাবিন্দা মনির হোসেন বাবুল। তিনি নামজারি ও খাজনাসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষে জমিতে বাউন্ডার দেওয়াল করে ভোগ দখলে ছিলেন। স¤প্রতি বাবুল মারা যান। বাবুলের জামাতা ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শফিকুল ইসলাম ও বাবুলের ওয়ারিশরা এর মালিক হন। বাবুল মারা যাওয়ার পর আলেমুন নেছা ও নুর সালাম ওই জমি কথিত হেবা ও আম-মোক্তার নামা তৈরি করে তাদের বলে দাবী করেন। তারা ভূমি আপিল বোর্ড ও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আদালত, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), নারায়ণগঞ্জ সহকারী কমিশনার ভূমিতে মামলা করে হেরে যান। নুর সালাম ওই জমি দখল করার জন্য কয়েকবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। বাবুল বেঁচে থাকতেই তার কাছে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করলে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের আইজি, নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেন। বর্তমানে ওই জমি নিয়ে নারায়ণগঞ্জ দেওয়ানী মামলা নং- ১১৪/২০১৫ বিচারাধীন রয়েছে। মামলা বিচারাধীন অবস্থায় নুর সালাম এ জমিতে যাবেন না বলে গত বছরের ১৯ জুন নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক সার্কেলের কাছে লিখিত অঙ্গীকার নামা দেন। যার স্বাক্ষী হন তার ছেলে ও কাউন্সিলর শাহ জালাল বাদল। অঙ্গীকার নামা সত্বেও কয়েক দিন আগে নুর সালাম ও তার বাহিনী রাতের আধাঁরে ঐ জমি দখল করার উদ্দেশ্যে বালু ফেলা শুরু করে। কিন্তু এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলে নুর সালাম তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে পালিয়ে যায়। সন্ত্রাসীবাহিনী নিয়ে রাতের আধাঁরে জমি দখলকরার ঘটনায় এলাকায় শুরু হয়েছে তোলপাড়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল এসব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আপনারা সরেজমিন গিয়ে দেখেন জায়গাটা কার দখলে আছে? এছাড়া বিষয়টি আমার কাছে জানার কিছু নেই বলেও ফোন কেটে দেন তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন