রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বঙ্গবন্ধু লেবাসসর্বস্ব নয় ইনসাফের ইসলামে বিশ্বাসী ছিলেন

সেমিনারে জমিয়াতুল মোদার্রেছীন নেতৃবৃন্দ জন্মশত বার্ষিকীতে সারাদেশে সেমিনার-শীতবস্ত্র বিতরণ করবে জমিয়াতুল মোদার্রেছীন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০২ এএম

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লেবাস স্বর্বস্ব ইসলামে নয়, ইনসাফের ইসলামে বিশ্বাসী ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের একক ও সর্ববৃহৎ সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের প্রাক্কালে পাকিস্তান বেতার ও টেলিভিশনের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- “আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে, আমরা ইসলামে বিশ্বাসী নই, এ কথার জবাবে আমার সুষ্পষ্ট বক্তব্য, আমরা লেবাস স্বর্বস্ব ইসলামে বিশ্বাসী নই। আমরা বিশ্বাসী ইনসাফের ইসলামে। আমাদের ইসলাম হযরত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম এর ইসলাম, যে ইসলাম শিক্ষা দিয়েছে ন্যায় ও সুবিচারের অমোঘ মন্ত্র। যে দেশে শতকরা ৯৫ জনই মুসলমান সে দেশে ইসলাম বিরোধী আইন পাশের কথা ভাবতে পারেন তারাই ইসলামকে যারা ব্যবহার করেন দুনিয়াটা ফারস্থা করে তোলার কাজে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মহাখালীস্থ গাউসুল আজম কমপ্লেক্স মিলনায়তনে জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের উদ্যোগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘ইসলামের সেবায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান ও আজকের প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এক সেমিনার ও আলোচনা সভায় সংগঠনটির নেতারা এসব কথা বলেন।
মাদরাসা শিক্ষায় বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা তুলে ধরে তারা বলেন, মরহুম মাওলানা আবদুর রশিদ তর্কবাগীশকে চেয়ারম্যান করে মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের কার্যক্রম পুনরায় চালু করেন। তিনি ক্ষমতাসীন থাকাকালে মাদরাসার জন্য সরকারী অনুদান বন্ধের একটি প্রস্তাব সম্বলিত নথি বঙ্গবন্ধুর নিকট উপস্থাপন করা হলে তিনি ফাইলে লিখেন যে, মাদরাসা শিক্ষার জন্য যে বরাদ্দ এতদিন ছিল, সেটাই থাকবে। তবে ভবিষ্যতে এ বরাদ্দ আরো বাড়ানো যায় কি না এবং কতটা বাড়ানো যায় তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
জমিয়াত নেতৃবৃন্দ বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন মন-মানসিকতায় ধর্মপ্রাণ। ইসলাম প্রচার ও প্রসারের জন্য তিনি নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সাল থেকে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় বেতার ও টেলিভিশন কুরআন তেলাওয়াত দিয়ে শুরু এবং রাতে কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানমালার সমাপ্তি ঘটে। ১৯৭৫ সালের ২৮ মার্চ ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। ঢাকায় সীরাত মজলিশ গঠন করে ১৯৭৩ ও ১৯৭৪ সালে বায়তুল মোকাররম মসজিদ চত্বরে জাতীয় পর্যায়ে ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম উদযাপন মাহফিলের শুভ উদ্বোধন, বিশ্ব ইজতেমার জন্য টঙ্গিতে সরকারি জায়গা বরাদ্দ, কাকরাইলের মারকায মসজিদ সম্প্রসারণের জন্য জমি বরাদ্দ প্রদান। হজ্ব পালনের জন্য সরকারী অনুদানের ব্যবস্থা, শব-ই-বরাত, শব-ই-কদর উপলক্ষে ছুটি ঘোষণা। মদ-জুয়া-হাউজি-লটারী ও অসামাজিক কার্যকলাপ নিষিদ্ধকরণ ও শাস্তির বিধান, সরকারী অনুষ্ঠানে বিদেশী মেহমানদের জন্য মদ পরিবেশন বন্ধ করা। রেসকোর্স ময়দানের ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা বন্ধকরন, চট্টগ্রাম জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ কমপ্লেক্সকে ফাউন্ডেশনের অনুকূলে ন্যস্তকরণ, হজ্ব পালনে সরকারী অনুদানের ব্যবস্থা, হজ্ব ভ্রমনে কর রহিতকরণ, রাশিয়াতে প্রথম তাবলীগ জামাত প্রেরণ, ১৯৭৩ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধে আরব বিশ্বের পক্ষ সমর্থন ও সাহায্য প্রেরণ করেন। এছাড়াও ১৯৭৪ সালে ও আই সি সম্মেলনে যোগদান করে মুসলিম উম্মাহর সম্পর্ক সুসংহত করার উপর জোর তাগিদ দেন এবং ফিলিস্তিনি মুসলমানদের পক্ষে বলিষ্ঠ যুক্তি তুলে ধরেন। এককথায় বলা যায় বঙ্গবন্ধু নয় কোন ব্যক্তির, নয় কোন দলের বা নয় কোন গোষ্ঠীর, বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ।
ইসলামি ফাউন্ডেশনের গভর্নর, জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সহ-সভাপতি ও ঢাকা নেছারীয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ কাফীলুদ্দীন সরকার ছালেহীর সভাপতিত্বে সেমিনারে অধ্যক্ষ মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইসলামী অনুশাসন পালন ও আমলের পাশাপাশি আলেম-ওলামাদের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা ও ভক্তি অনেক বেশি। কারণ তিনি আউলিয়া কেরাম, আহলে সুন্নাতের উত্তরসূরি। আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার রাজনৈতিক জীবনেও দুইজন মাওলানার সান্নিধ্য পেয়েছেন। এদের একজন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, অন্যজন মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ। বঙ্গবন্ধুর সময়ে ইসলামী শিক্ষা, মাদরাসা শিক্ষার যেমন সার্বিক উন্নয়নের সূচনা হয়েছে। তাঁর সময়েই ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
মাদরাসা শিক্ষার বিষয়ে জমিয়তের কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি বলেন, মাদরাসা শিক্ষার সাথে জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সম্পর্ক অঙ্গাঅঙ্গি। এই শিক্ষার উন্নয়নের কাজ থেকে জমিয়াত এক দিনের জন্যও দূরে সরে থাকেনি। এই সরকারের সময়ে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা, শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার বৈষম্য নিরসনসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল কিছুই জমিয়াতের দাবির প্রেক্ষিতেই বাস্তবায়ন হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ৮ম শ্রেণির আরবি সাহিত্যের পাঠ্যসূচিতে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, স্মৃতিসৌধ অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে জমিয়াতের পরামর্শেই। এছাড়া মাদরাসার জন্য যে জনবল কাঠামো জারি করা হয়েছে সেটিও জমিয়াতের নেতৃত্বেই। এসময় তিনি সকল ক্ষেত্রে চাকরি জাতীয়করণের দাবি জানান।
জমিয়াতের বিরুদ্ধে নানা প্রপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে মন্তব্য করে সংগঠনটির মহাসচিব বলেন, জমিয়াতের ঐক্য ও সরকারের কাছ থেকে মাদরাসা শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দাবি আদায়ের সফলতা দেখে একটি গোষ্ঠী সব সময় ঈর্ষাণি¦ত হয়। এজন্য তারা সারাদেশে অনেক চেষ্টা করেছে, আমাদের শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রলোভন দেখিয়েছে। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। শেষে তারা প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে সকলকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে। তবে জমিয়াতের ঐক্য নষ্ট করতে পারেনি।
কর্মসূচি ঘোষণা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারাদেশের সকল মহানগর, জেলা, উপজেলা এবং প্রত্যেকটি মাদরাসায় ‘ইসলামের সেবায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভা করার ঘোষণা দেয়া হয়। একই সাথে বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনায় শীতবস্ত্র বিতরণ করতে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
জমিয়াতের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সেমিনারের প্রধান আলোচক অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আগামী দিনের বিশ্ব হচ্ছে মুসলমানদের, ইসলামের। ধীরে ধীরে ইসলামের বিজয় সম্প্রসারিত হচ্ছে। এজন্য স্রোতের বাইরে যাওয়া যাবে না। ইসলামী বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে এখন থেকেই মাদরাসা ও ইসলামী শিক্ষাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। আরবি ভাষা শিক্ষার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। আর এটি হবে মাদরাসা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাধ্যমেই।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ মাওলানা ড. মুহাম্মদ কাফীলুদ্দীন সরকার ছালেহী বলেন, আমরা যতই মাদরাসা শিক্ষা নিয়ে কাজ করছি, ততই আমাদের বিরুদ্ধে বিপরীত একটি পক্ষ কাজ করছে। তাই চোখ বন্ধ করে রাখলে হবে না, চোখ-কান খোলা রেখে কাজ করতে হবে। আমাদের যেন কেউ বিভ্রান্ত করতে না পারে সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ড. একেএম মাহবুবুর রহমান। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, আ খ ম আবুবকর সিদ্দীক, অধ্যক্ষ, দারুন্নাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসা, ডেমরা, ঢাকা, ড. মাওলানা মো. নজরুল ইসলাম আল-মারুফ, অধ্যক্ষ, হোসাইনিয়া দারুল উলুম কামিল মাদরাসা, মহাখালী, ঢাকা, মাওলানা মুহাম্মদ এজহারুল হক, অধ্যক্ষ, গাউছিয়া ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা, মোহাম্মদপুর, ঢাকা, মাওলানা আবু জাফর মো. ছাদেক হাসান, অধ্যক্ষ, দারুল ফালাহ্ ছালেহীয়া সাহেব আলী আলিম মাদরাসা, তুরাগ, ঢাকা, মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান, মুহাদ্দীস, হোসাইনিয়া দারুল উলুম কামিল মাদরাসা, মহাখালী, ঢাকা, মাওলানা মুহাম্মদ আতিকুর রহমান, অধ্যক্ষ, মানিকগঞ্জ ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা, মানিকগঞ্জ সদর, মাওলানা মো. আব্দুল জলিল মিয়া, অধ্যক্ষ, কুমরাদী ফাযিল মাদরাসা, নরসিংদী, মাওলানা মো. আব্দুল হাই, অধ্যক্ষ, কালাদী হাজী শাহাজ উদ্দীন কামিল মাদরাসা, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মাওলানা মো. নোমান ছিদ্দিকী, অধ্যক্ষ, মুগরাকুল মোহাম্মদীয়া আলিম মাদরাসা, নারায়ণগঞ্জ, মাওলানা মো. শাহজাহান মিয়া, অধ্যক্ষ, নারায়ণগঞ্জ ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা, নারায়ণগঞ্জ সদর, মাওলানা মুহাম্মদ খালিদ সাইফুল্লাহ, অধ্যক্ষ, ভ‚ইঘর দারুচ্ছুন্নাহ ইসলামিয়া ফাযিল মাদরাসা, নারায়ণগঞ্জ, মাওলানা মো. আব্দুল হাকিম মিয়া, অধ্যক্ষ, আমলিয়া মেন্দিপুর ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা, ডেমরা, ঢাকা, মাওলানা মো. ফারুক আহমদ হাওলাদার, সুপার, বাইতুল হুদা দাখিল মাদরাসা, পিরোজপুর, মাওলানা মো. বদিউল আলম, প্রধান মুহাদ্দীস, উত্তর বাড্ডা ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা, ঢাকা, মাওলানা মো. মুস্তাফিজুর রহমান, আরবি প্রভাষক, মাহমুদা খাতুন মহিলা কামিল মাদরাসা, আরমানীটোলা, ঢাকা, মাওলানা মো. তোজাম্মল হক, সহঃঅধ্যাপক, আদর্শ ইসলামি মিশন মহিলা কামিল মাদরাসা, মোহাম্মদপুর, ঢাকা, মাওলানা মো. মামুনুর রশিদ, প্রভাষক (আরবি), নাজমুল হক মদিনাতুল উলুম কামিল মাদরাসা, গোড়ান, ঢাকা, মাওলানা মো. আবুল হাশেম, অধ্যক্ষ, ডগাইর দারুচ্ছুন্নাত ফাযিল মাদরাসা, ডেমরা, ঢাকা, আবু জাফর মো. ছালেহ, মো. আলমগীর ভূইয়া, কে এম সাইফুল্লাহ, মো. আবুল কাসেম, মো. মহিউদ্দীন কামালী, মো. জমির খান প্রমুখ। সেমিনার ও আলোচনা সভায় জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মনোনিত নেতৃবৃন্দ স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বত:স্ফূর্তভাবে অংশ নেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Hosne Bari Manir ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:৫৩ এএম says : 0
আজ থেকে আপনার ভক্ত হয়ে গেলাম।হুজুর আই লাভ ইউ। ইনশাআল্লাহ
Total Reply(0)
Hadiul Islam ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:৫৩ এএম says : 0
চমৎকার বক্তব্য আল্লাহ্ আপনার সহায় হোক
Total Reply(0)
Ohe Dul Islam Panna ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:৫৩ এএম says : 0
সত্যি কথাগুলির জন্য হুজুরকে ধন্যবাদ।
Total Reply(0)
Md Shojib Hussain ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:৫৪ এএম says : 0
মাসাআল্লাহ সুন্দর কথা
Total Reply(0)
সভাপতি ও মহাসচিব মহোদয়, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন প্রধান কার্যালন মহাখালী,গুলশান,ঢাকা-১২১২ আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। বর্তমানে ইসলামি শিক্ষার সাথে বাস্তব শিক্ষার সমন্বয় ঘটিয়ে আজ মাদরাসার শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যাক্তিরা প্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে ইতিহাস অতীত থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ইতিহাসকে দিবালকের সূর্যের ন্যায় যা বহমান হয়ে চলছে এবং তৎপ্রেক্ষিতে মাদরাসাগুলোর সুপার, প্রিন্সিপাল এর দায়িত্ব পালন করে থাকেন। কিন্তু সাধারন শিক্ষায় শিক্ষিত শিক্ষকগণ উক্ত পদেরও স্বপ্ন দেখেন অথচ মাদরাসায় শিক্ষায় শিক্ষিত শিক্ষকগণকে হাই স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ কিংবা প্রধান শিক্ষক নিযুক্ত করার প্রস্তাবনা তারা পেশ করেনা। বরং মাদরাসার শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যাক্তিরা প্রশাসন থেকে শুরু করে যে যে স্থলে কর্মকান্ডে নিয়োজিত আছে তারা প্রশাসন পরিচালনা করে অর্জন করে আসছে সুনাম ও খ্যাতি, সততা সহ সেই কর্মস্থলে অধিকাংশ জায়গায় ইতিহাসের স্বর্ণাক্ষরে তাদের নাম বহমান ছিল আছে থাকবে। কিন্তু হঠাৎ করে কিছু মাদরাসার সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত শিক্ষক ভুঁইফোর সংগঠনের নামের পরিচয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে কিছু অযৌক্তিক দাবি পেশ করেছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে ও শেরপুর জেলার জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের পক্ষ থেকে চরমভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কেননা এরা পবিত্র ওহীর জ্ঞানের শিক্ষায় বঞ্চিত থাকায় এবং মাদরাসা শিক্ষার ওহীর জ্ঞানে অংশগ্রহণ না করায় কোরআন হাদিসের ভাষ্যমতে এরা অর্ধমূর্খ। তাই আমি দাবি করছি মাদরাসায় কোনো শিক্ষক সাধারন শিক্ষায় শিক্ষিত হলে কোরআন হাদিস প্রাথমিকভাবে দেখে দেখে পড়ার জ্ঞান থাকতে হবে এবং সুন্নাতে নববীর অনুসরণ ও অনুকরণের বাস্তব গুনাবলী থাকতে হবে। মর্মে,চাকরিতে শর্ত আরোপ উল্লেখ থাকা দরকার। গ্রন্থাগারিক নিয়োগে ফাজিল ও কামিল পাশ বিধির বিরোধিতা করছে এরা। মূর্খরা জানেনা মাদরাসায় কোরআন হাদিস ও উসুলেফেকাসহ অধিকাংশ কিতাবাদী আরবী,ফারসি ও উর্দুতে লিখা। শুধু সাধারন শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যাক্তি কিতাবের নামের প্রথম অক্ষরও শুদ্ধভাবে উচ্চারণ করতে পারেনা। তাদেরকে ঢুকানোর জন্য এরা দাবি করে বেড়াচ্ছে। এতে ২৮০ বছরের মাদরাসার ব্যাবস্থাপনার স্বকীয়তাকে ধ্বংস করে দেয়ার এক গভীর ষড়যন্ত্রের পায়তারা করে যাচ্ছে। এদেরকে জাতীয়ভাবে ও প্রশাসনিকভাবে রুখে দিতে হবে। মর্মে, কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি দেয়ার জন্য দাবি করছি। এ বিষয়ে উপজেলা, জেলা ও জাতীয়ভাবে প্রতিবাদসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর মাধ্যমে কোঠরভাবে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়ার জন্য সহানুভূতির সাথে স্ব-হৃদয় বিবেচনাপূর্বক সবিনয়ে নিবেদন করছি। নচেৎ বর্তমান সরকারের ইসলামি শিক্ষার সম্প্রসারণের অগ্রনী ভূমিকার সুনাম ক্ষুন্য করবে এরা এবং এদেশের হক্কানি উলামা একরাম, পীর মাশায়েখগন বিদেয়ী আত্মার অভিশাপ হতে আমাদের নাজাত পাওয়ার কোনো উপায় থাকবেনা এবং মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থাপনার স্বকীয়তা ভবিষ্যতে ধরে রাখা সম্ভব হবেনা।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন