বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

পুরান ঢাকার ছাদে সাকরাইনের নামে জনসমাগম হুমকিস্বরূপ

ডিজে পার্টি আতশবাজি ফানুস ও মাদক নিষিদ্ধ করুন- ডিএমপি কমিশনারের কাছে বাড়িওয়ালাদের চিঠি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ জানুয়ারি, ২০২১, ৬:৪৪ পিএম

পুরান ঢাকার ৮৩ বাড়িওয়ালা ও ব্যবসায়ী ডিএমপি কমিশনারের কাছে এক চিঠিতে হাজার হাজার বাড়ির ছাদে সাকরাইনের নামে জনসমাগমকে করোনার মাঝে জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। চিঠিতে বলা হয়, পুরান ঢাকায় সাকরাইন উৎসবের নামে সারারাত ছাদের ওপর ডিজে পার্টি, আতশবাজি, (দিনে ফানুস ওড়ানো) এবং মাদকের ব্যাপক ছড়াছড়ি হয়ে থাকে। এতে সাধারণ নাগরিকরা চরম ভোগান্তির শিকার হন। সাকরাইনে ডিজে পার্টি, আতশবাজি, ফানুস ও মাদক নিষিদ্ধের কার্যকরী নীতিমালা বাস্তবায়নের জোর দাবি জানানো হয় ঐ চিঠিতে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে মিন্টো রোডে ডিএমপি কমিশনার বরাবর পাঠানো এক চিঠি তারা এ আহবান জানান। চিঠিতে পুরোনো ঢাকাস্থ ব্যবসায়ী ও বাড়িওয়ালারা বলেন, আগামী ১৪-১৫ জানুয়ারী’ পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ‘সাকরাইন’ নামক একটি অনুষ্ঠান পালিত হতে যাচ্ছে। এ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, গোয়ালনগর, লক্ষীবাজার, সূত্রাপুর, গেন্ডারিয়া, লালবাগসহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকার ছাদগুলোতে নানান আয়োজন হয়। এর মধ্যে রয়েছে দিনে ঘুড়ি উড়ানোর প্রতিযোগীতা, ডিজে পার্টি, আতশবাজি-ফানুস ওড়ানো। এ বছরও একই ধরণ ও বড় পরিসরে এ উৎসব আয়োজন করা হবে বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

ব্যবসায়ী ও বাড়িওয়ালা বলেন, মূলতঃ সাকরাইন নামক এ আয়োজনে ব্যাপক জনসমাগম ঘটে। এ সময় শুধু পুরান ঢাকা নয় বরং নতুন ঢাকার জনগণও ছাদগুলোতে ভিড় জমাতে থাকে। অথচ করোনা মহামারীকালে যে কোন ধরণের জনসমাগমের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। এ বছর সাকরাইন উপলক্ষে হাজার হাজার ছাদে লক্ষ লক্ষ লোকের ভিড় তথা জনসমাগম ঘটার সম্ভবনা রয়েছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি ডেকে আনতে পারে।

তারা আরো বলেন, সাকরাইনকে কেন্দ্র করে প্রতিটি বাড়ির ছাদ থেকে ফানুস ওড়ানো ও আতশবাজি পোড়ানো হয়। অথচ ডিএমপির পক্ষ থেকে ২০১৮ সালে ফানুস ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়। এছাড়া ‘বিস্ফোরক আইন, ১৮৮৪ অনুসারে রঙিন আতশবাজি রাখা সম্পুর্ণ নিষিদ্ধ। বলার অপেক্ষা রাখে না, ফানুস ও আতশবাজি থেকে ভয়াবহ ধরণের অগ্নিকন্ড ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। স¤প্রতি থার্টি ফাস্ট নাইট উপলক্ষে ওড়ানো ফানুস থেকে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের রেজিন্সি টাওয়ার নামক একটি বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।

ব্যবসায়ী ও বাড়িওয়ালারা বলেন, আতশবাজির পরিবেশগত বিরূপ প্রভাব বিদ্যমান। আতশবাজির কারণে বায়ূতে বিষাক্ত কণা ছড়িয়ে পড়ে, যার দরুণ পাখিসহ বিভিন্ন প্রাণীর মৃত্যু ঘটে। এছাড়া বিস্ফোরকের উচ্চ ও ভীতিকর শব্দে অসুস্থ রোগীদের হৃদযন্ত্রজনিত রোগ বৃদ্ধি পায়। এসময় ছাদগুলোতে বিকট শব্দে রাতভর গান বাজানো হয়, যা চারপার্শে¦র জনগণকে মারাত্মক বিরক্ত করে। অথচ এত উচ্চ শব্দে গান বাজানো ‘শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬’ অনুসারে অপরাধ বটে। তারা আরো বলেন, সাকরাইন উৎসবের নামে চলে মদ-গাজা ও ইয়াবা সেবন ও ডিজে পার্টি। অথচ বাংলাদেশের আইনে জনসাধারণের জন্য মদ-গাজা-ইয়াবা’র মত মাদকের সেবন ও কেনাবেচার উপর রয়েছে নিষেধাজ্ঞা।

চিঠিতে আরো বলা হয়, মদ খাওয়া কিংবা ডিজে পার্টি নামক উশৃঙ্খলতা কখনই আমাদের সংস্কৃতির অংশ নয়। এ ধরনের অনুষ্ঠানের কারণে আমরা আমাদের সন্তানদের ‘নৈতিকতা’ নিয়ে চিন্তিত। ডিএমপিতে আবেদনকারীদের মধ্যে ছিলেন, ডিএসসিসি মেডিকেল রোড সাইড মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারি মুহম্মদ কবির হুসাইন মনা, নাজিরাবাজারের ব্যবসায়ী মুহম্মদ আল রাশিদ, নাসির উদ্দিন সরদার লেন ব্যবসায়ী ও বাড়িওয়ালা মোহাম্মাদ নজরুল ইসলাম, চকবাজার বেগমবাজারের ব্যবসায়ী মুহম্মদ কাউসার রহমান, সিদ্দিকবাজারের ব্যবসায়ী মুহম্মদ মোস্তাক, কাজী আলাউদ্দিন রোডের ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান, হোসনী দালান এলাকার বাড়িওয়ালা মুহম্মদ হাসু, মিডিফোর্ড রোডস্থ ব্যবসায়ী ফয়জুর রহমান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন