মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী ধর্ষণ ও খুনের দায়ে অভিযুক্ত ইফতেখার ফারদিন দিহানের বাসার সামনে তিনজনের সন্দেহজনক গতিবিধি দেখা গেছে সিসিটিভি ফুটেজে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার দিন আনুশকা ওই বাসায় প্রায় দেড় ঘণ্টা অবস্থান করেছিলেন। ওই সময় তিনজনকে সন্দেজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। তবে তাদেরকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এদিকে দিহানের বাসার দারোয়ান দুলাল মিয়া পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানান, দিহানের বাসায় ঘটনার দিন একাই গিয়েছিলেন ওই কিশোরী। ঘটনার পর দিহান একাই গাড়িতে করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। বাসার ভেতরে ও হাসপাতালে যাওয়ার সময় তাদের সঙ্গে কেউ ছিলো না। গত বৃহস্পতিবার ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন দিহানের বাসার দারোয়ান দুলাল মিয়া। পরে সোমবার মামলার সাক্ষী হিসেবে দুলাল মিয়াকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
তদন্তের সাথে সংশ্লিষ্ট পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, ৭ জানুয়ারি দুপুর ১২টা ১২ মিনিটে কলাবাগানে দিহানের বাসার সিঁড়িঘরের দিকে যায় ওই কিশোরী। দুপুর একটার দিকে বাসার সামনে রহস্যজনক গতিবিধির দেখা মেলে তিন ব্যক্তির। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর দুপুর ১টা ৩৬ মিনিটে বাসা থেকে বের হয় দিহানের গাড়ি।
ডিএমপির নিউমার্কেট জোনের এসি আবুল হাসান বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশের পুরো এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ আমরা বিশ্লেষণ করে দেখেছি। পাশাপাশি দিহানের ওই তিন বন্ধুর মোবাইল নম্বর ট্র্যাক করে ঘটনার সময় তারা কোথায় ছিল সেই লোকেশন বের করা হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে তাদের সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় আমরা ছেড়ে দিয়েছি। তবে তারা নজরদারির বাইরে নয়। প্রয়োজনে তাদের আবার হেফাজতে নেয়া হবে।
ডিএমপির রমনা বিভাগের ডিসি মো. সাজ্জাদুর রহমান বলেন, দারোয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার কাছে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে পরে জানানো হবে। এছাড়া আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী দু-এক দিনের মধ্যে দিহানের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হবে।
উল্লেখ্য গত ৭ জানুয়ারি রাজধানীর কলাবাগানে বন্ধু ইফতেখার ফারদিন দিহানের বাসায় গিয়ে মারা যান মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের এক শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় ওই দিনই মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে দিহানকে আসামি করে কলাবাগান থানায় মামলা করেন েেয়টির বাবা। পরে দিহান ও তার তিন বন্ধুকে কলাবাগান থানা পুলিশ আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাকি তিনজনকে ছেড়ে দিয়ে দিহানকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। শুক্রবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় দিহান। বর্তমানে সে কারাগারে রয়েছে। দিহানের ডিএনএ পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে আদালত।
জবানবন্দি দিলেন দারোয়ান
রাজধানীর কলাবাগানে ডলফিন রোডে মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত দিহানের বাসার দারোয়ান দুলাল মিয়া আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ এ জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এদিন দুপুরে কলাবাগান থানার দায়ের করা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা দারোয়ান দুলাল মিয়াকে সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি গ্রহণ করার জন্য আদালতে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এর আগে সোমবার মামলার সাক্ষী হিসেবে দুলাল মিয়াকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন