কাশিমপুর কারাগারে এবার এক বন্দিকে নারীসঙ্গের ব্যবস্থা করিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে খোদ কারা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কারাগার সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, কারাগারে থাকা হলমার্ক গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমদকে কারা কর্মকর্তাদের কক্ষেই নারীসঙ্গের ব্যবস্থা করা হয়। তুষার হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদের ভায়রা।
অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মো. আবরার হোসেন গত রাতে দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, বিষয়টি খুবই গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এ বিষয়ে তদন্ত কাজ চলছে। তদন্তে কাউকে অপরাধী পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হচ্ছে। আমরা নিরপেক্ষভাবে পুরো বিষয়টি তদন্ত করছি বলে কর্নেল মো. আবরার হোসেন মন্তব্য করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেন্দ্রীয় কারাগারের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, কারাগারের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, গত ৬ জানুয়ারি কারাগারে প্রবেশ পথে কর্মকর্তাদের কার্যালয় সংলগ্ন এলাকায় কালো রঙের জামা পরে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘোরাফেরা করছেন ঋণ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত হলমার্কের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমেদ। তিনি সেখানে আসার কিছু সময় পর বাইরে থেকে বেগুনি রঙের সালোয়ার কামিজ পরা এক নারী সেখানে প্রবেশ করেন। কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার রত্মা রায় ও ডেপুটি জেলার সাকলাইনের উপস্থিতিতেই এ ঘটনা ঘটে। তাদের সহযোগিতার বিষয়টিও সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে। দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে কারাগারের দুই যুবকের সঙ্গে ওই নারী কারা কর্মকর্তাদের কক্ষ এলাকায় প্রবেশ করেন। তাকে সেখানে অভ্যর্থনা জানান খোদ ডেপুটি জেলার সাকলায়েন। ওই নারী সেখানে প্রবেশ করার পর অফিস থেকে বেরিয়ে যান ডেপুটি জেলার সাকলায়েন। আনুমানিক ১০ মিনিট পর কারাগারে বন্দি তুষার আহমদকে সেখানে আনা হয়।
গাজীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ওই ঘটনায় গত ১২ জানুয়ারি গাজীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) আবুল কালামকে প্রধান করে গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উন্মে হাবিবা ফারজানা ও ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরীকে নিয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া ২১ জানুয়ারি অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক আবরার হোসেনকে প্রধান করে উপসচিব (সুরক্ষা বিভাগ) আবু সাঈদ মোল্লাহ ও ডিআইজি (ময়মনসিংহ বিভাগ) জাহাঙ্গীর কবিরকে সদস্য করে আরও একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ডেপুটি জেলার সাকলায়েনসহ গতরাতে তিন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে কারাগার সূত্রে জানা গেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন