নিম্ন মানের ভারতীয় গম আমদানিতে খাদ্যমান নিয়ে শঙ্কায় ভোক্তারা। বগুড়ার আদমদীঘি, সান্তাহার শহরসহ উত্তরাঞ্চলের হাটে-বাজারে গমের চেয়ে কম মূল্যে বিক্রি হচ্ছে আটা। বর্তমানে প্রতি কেজি দেশীয় সাদা গম বিক্রি হচ্ছে ২৯-৩০ টাকা। অন্যদিকে, আটা বিক্রি হচ্ছে ২৮-২৯ টাকায়। বাজার ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে।
বিএসটিআই এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় দেশীয় ভাল গমের সাথে আমদানি করা নিম্ন মানের গম দিয়ে উৎপাদন করা আটা বাজারজাত করা হচ্ছে। জানা গেছে, বগুড়ার সান্তাহারের একটি ফ্লাওয়ার মিলে উৎপাদিত প্লাস্টিক বস্তায় বাজারজাত করা আম ও দোয়েল মার্কা আটা বিক্রি হচ্ছে ওই দামে। সরকার ২০১৩ সালে নিরাপদ খাদ্য আইন এবং ২০১৫ সালে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠন করে। কিন্তু ল্যাবরেটরি পরীক্ষা করা ছাড়া স্থানীয় হাট-বাজার ওকলকারখানায় দেখা যায় না বিএসটিআই এবং বিএফএসএকে।
এ বিষয়ে খায়রুল ইসলাম নামের এক ভোক্তা বলেন, ল্যাবরেটরি পরীক্ষা জন্য পাঠানো নমুনা তারা ভালো মানেরই পাঠায়। নিরাপদ পণ্য পরীক্ষা করলে অনিরাপদ মিলবে না এটাই স্বাভাবিক। নিরাপদ সনদ নিয়ে ভেজাল পণ্য বাজারজাত করা হচ্ছে কি না সেটা কঠোর ভাবে পর্যবেক্ষণ করার ব্যবস্থা না করে শুধু ল্যাবরেটরি পরীক্ষা নামে প্রহসন বন্ধ করা জরুরী।
স্থানীয় ভোক্তারা জানান, স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত নিরাপদ পণ্য হিসেবে নিয়মিত আজমেরীর আটা কিনতাম। কিন্তু ভারত এবং অন্য দেশ থেকে নিম্নমানের গম আমদানির বিষয়টি দেখা ও জানার পর থেকে গম ও আটার মান নিয়ে ভোক্তাদের মাঝে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সান্তাহারের আজমেরী ফ্লাওয়ার মিল কর্তৃপক্ষ চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি প্রায় ২৪৬৮ মেট্রিক টন ভারতীয় এবং একই মাসে কানাডা থেকে প্রায় ৬০ হাজার মেট্রিক টন ও ২৩০০ মেট্রিক গম আমদানি করে। কাগজপত্রে ভারতীয় গমের মান এক্সপোর্ট স্ট্যান্ডার্ড বলা হয়েছে। কিন্তু চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সান্তাহার রেলওয়ে মালগুদাম পয়েন্টে খালাস করার সময় ২০১৮-২০১৯ সাল লেখা গমের বস্তার ভিতরে ও বাহিরে পোকায় কাটা এবং পোকা আক্রান্ত গম দেখা যায়। পক্ষান্তরে কানাডা থেকে আমদানি করা গমের কাগজপত্রে গমের মান গ্রেড-২, ওয়েস্টার্ণ রেড স্প্রিং হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে যে, দেশীয় ভাল মানের গমের সাথে আমদানি করা ভারতীয় নিম্নমানের গম দিয়ে আটা উৎপাদন করার কারণে কম মূল্যে আটা বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে।
পাশাপাশি আমদানি করা এসব গম ছোট মিল মালিক ও গম ব্যবসায়ীদের মাঝে বিক্রি করেছে আমদানিকারক। গমের চেয়ে কম বা একই মূল্যে কেনা আটার নামে ভোক্তাগণ কি কিনছে এবং খাচ্ছে তা খতিয়ে দেখা এবং প্রতিরোধের যেন কেও নেই। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য আজমেরী ফ্লাওয়ার মিলের মালিক রাকেস সাহা’র মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোনকল কেটে দেয়ায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন