পতেঙ্গায় কর্ণফুলীর তীরে চট্টগ্রাম বন্দরের হাজার কোটি টাকা মূল্যের ৫২ একর জমিতে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান আজ সোমবার শুরু হচ্ছে। সকাল ৮টা থেকে ছয়জন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহস্রাধিক সদস্য উচ্ছেদ অভিযান শুরু করবে। ছোটবড় পাকা আধ-পাকা অবৈধ এক হাজারের বেশি স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিতে প্রস্তুত ২২টি বুলডোজার, স্ক্যাভেটর, ট্রাকসহ দুই শতাধিক শ্রমিক।
বড় ধরনের এ উচ্ছেদ অভিযান তদারক করছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান। উচ্ছেদ অভিযান সফল করতে গতকাল রোববার বন্দর ভবনে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন সভায় অভিযানের সার্বিক প্রস্তুতি পর্যালোচনা এবং বেশ কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভায় র্যাব-পুলিশ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএ, চট্টগ্রাম ওয়াসা. ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরুর আগে এলাকার বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। বন্দরের আহবানে সাড়া দিয়ে অনেকে তাদের স্থাপনা সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন। চট্টগ্রাম বন্দরের এস্টেট বিভাগের সহকারি ম্যানেজার জিল্লুর রহমান বলেন, বন্দরের হাজার কোটি টাকা মূল্যের ৫২ একর জমি দখলমুক্ত করতে এ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ওই এলাকায় সহস্রাধিক অবৈধ স্থাপনা রয়েছে।
তবে অনেকে ইতোমধ্যে কিছু স্থাপনা সরিয়ে নিয়েছেন। বাকি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। এ জন্য সাত শতাধিক পুলিশ, একশ র্যাব সদস্য এবং দুই শতাধিক আনসার সদস্য প্রস্তুত রয়েছে। দুইশ শ্রমিক অভিযানে থাকবে। পুরো এলাকাকে ছয়টি জোনে ভাগ করে ছয় জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একযোগে অভিযান শুরু হবে।
কর্ণফুলীর দুপাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে আদালত দুই মাসের সময় বেধে দেয়। চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তারা জানান, এ সময়ের মধ্যে উচ্ছেদ অভিযান শেষ করতে বাধ্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে লালদিয়ার চরের বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের দাবি উঠে। তবে বন্দরের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, যারা সেখানে বসবাস করছেন তারা ভাড়া বাড়িতে আছেন। একটি চক্র বন্দরে র জমি দখল নিয়ে ঘর তৈরী করে ভাড়া আদায় করেছে। ফলে তাদের পুনর্বাসনের কোন সুযোগ নেই। শনিবার চট্টগ্রাম বন্দরের এক সভায় বিষয়টি লালদিয়ার চর পুনর্বাসন বাস্তবায়ন কমিটির নেতা এবং স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলদের জানিয়ে দেওয়া হয়। এর আগেও লালদিয়ার চর এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। তবে বন্দরের বিশাল জমি তখন একটি বেসরকারি কোম্পানিকে দেওয়া হয়। সেখানে গড়ে উঠেছে বেসরকারি কন্টেইনার ডিপো। লালদিয়ার চরের বাকি ৫২ একর জমিতে চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব কন্টেইনার টার্মিনাল গড়ে তোলা হবে বলে জানান বন্দরের কর্মকর্তারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন