ময়মনসিংহের গৌরীপুরে আধিপত্য দ্বন্দ্বে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পৌর সদরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পৌর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
রবিবার দুপর ১টার দিকে উপজেলার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুই পক্ষের ১২ জন আহত হয়েছে বলেও দাবি সংশ্লিষ্টদের।
খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন গৌরীপুর থানার ওসি খান আ: হালিম সিদ্দিকী। তিনি জানান, স্থানীয় মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলামের সমর্থকদের সাথে এমপি পুত্র যুবলীগ নেতা তানজীর আহম্মেদ রাজীবের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। তবে এতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আছে। পৌর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পৌর মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলামের সাথে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহম্মেদের পুত্র তানজির আহম্মেদ রাজীবের সাথে দ্বন্দ্ব চলছিল। বিগত পৌর নির্বাচনে মেয়র রফিক বিজয়ী হলে এ দ্বন্দ্ব আরো প্রকট আকার ধারন করে। ফলে পৌর নির্বাচনের পর এমপি পুত্র রাজীব পৌরসভা এলাকায় যায়নি। রবিবার ৭মার্চের অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য রাজিব তাঁর সমর্থকদের নিয়ে হোন্ডা বহরে পৌর এলাকার বাসস্ট্যান্ডে পৌছঁলে তাদেরকে রেললাইনের পাথর নিক্ষেপ করে প্রতিহত করার চেষ্টা চালায় মেয়র গ্রুপের নেতাকর্মীরা। এ সময় দু’পক্ষের মাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতিতি নিয়ন্ত্রন করলে যুবলীগ নেতা রাজীব তার সমর্থকদের নিয়ে শহরে ফিরে আসে। বর্তমানে এ ঘটনায় পৌর এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করলেও দু’পক্ষের ভেতরে ভেতরে রণ প্রস্তুতি চলছে বলেও দাবি স্থানীয় আওয়ামীলীগের একাধিক সূত্রের। তাদের ভাষ্যমতে, এ দ্বন্দ্বের জের ধরে যে কোন সময় বড় ধরনের সংর্ঘষ পারে।
ময়মনসিংহ জেলা যুবলীগের সদস্য এমপি পুত্র তানজির আহম্মেদ রাজীব জানান, ৭ মার্চের অনুষ্ঠান ও শাহগঞ্জের একটি খেলার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করার জন্য দুপুরে গৌরীপুর রেললাইন সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌছলে মেয়র রফিকের উপস্থিতিতে তাঁর সমর্থকরা আমার হোন্ডা বহরে রেললাইনের পাথর নিক্ষেপ করে হামলা চালায়। এ সময় বিষয়টি বুঝতে পেরে আমার কর্মীরা প্রতিহতের চেষ্টা করলে পাথরের আঘাতে কমপক্ষে ১০ নেতাকর্মী আহত হয়। খবর পেয়ে ওসি ঘটনাস্থলে আসলে পুলিশের উপস্থিতিতেই মেয়র সমর্থকরা দ্বিতীয়বার হামলার চেষ্টা চালায়। রাজিব দাবি করেন, বিগত নির্বাচনে আমি নৌকার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলাম। রফিক আমাকের টাকার প্রস্তাব দিয়েও তাঁর পক্ষে নিতে পারেনি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি আমার উপর হামলা চালিয়েছেন। এর আগেও তিনি আমার পিতা স্থানীয় সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহম্মেদকে ফোনে হুমকি দিয়েছিলেন।
তবে পৌর মেয়র সৈযদ রফিক জানান, ৭ মার্চের অনুষ্ঠান শেষে বাসায় ফেরার পথে পৌরসভার সামনে এমপি পুত্র রাজীব স্থানীয় সন্ত্রাসী ও ডাকাতা দলের সদস্যদের নিয়ে আমাকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিত ভাবে আমার উপর হামলা চালানোর উদ্দেশ্যে গুলি করে। তবে গুলিটি লক্ষভ্রষ্ট হওয়ায় আমার কোন ক্ষতি হয়নি। তিনি দাবি করেন, এ সময় রাজীবের সন্ত্রাসীদের হামলায় দেলোয়ার ও আলআমীন নামের আমার দুই সমর্থক আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন