রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

জার্মানিতে ‘ক্যাটকলিং’ বন্ধে এক তরুণীর সংগ্রাম

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ মার্চ, ২০২১, ৫:১৬ পিএম

জার্মানিতে প্রতি তিনজন নারীর একজন রাস্তায় মৌখিক যৌন হয়রানির শিকার হন। সারাহ এভারার্ডের হত্যা লন্ডনে নতুন করে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা ও হয়রানির ঘটনায় বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জার্মানিতে এক তরুণী ‘ক্যাটকল আইন’ প্রণয়নের জন্য প্রচারণা শুরু করেছেন।

‘হেই! ব্লন্ডি,’ ‘বেবি এদিকে এসো’ এ ধরনের মন্তব্য, সিটি দেয়া বা অশ্লীল অঙ্গভঙ্গিকে অনেক পুরুষ এখনো প্রশংসা হিসেবে দেখে। অথচ একজন নারীর জন্য এটা হয়রানি। ক্যাটকলিং হলো অপরিচিত নারীদের প্রতি যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ এবং বাজে মন্তব্য করা, যা রাস্তাঘাটে এবং ইন্টারনেটে হরহামেশাই ঘটছে। আর জার্মানিতে এজন্য কোন শাস্তি নেই।

জার্মানির হেসেনের ২০ বছর বয়সি শিক্ষার্থী এবং সমাজকর্মী আন্তোনিয়া কোয়েল এ ধরনের অপরাধ বন্ধে আইন প্রণয়নের জন্য প্রচারণা শুরু করেছেন। গত বছরের আগস্টে অনলাইন পিটিশন শুরু করেছেন, যেখানে জার্মানির আইন ও বিচার মন্ত্রণালয় এবং কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে এ ধরনের হয়রানি বন্ধে আইন করার জন্য। এরমধ্যে ৭০ হাজার মানুষ পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন। পিটিশনে বলা হয়েছে ‘হয়ত সব পুরুষ এই কাজ করে না। কিন্তু প্রত্যেকটা মেয়েকে এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। ক্যাটকলিং, যাকে মৌখিক যৌন হয়রানি বলা হয়। ‘ক্যাটকলস’কে কোনভাবেই প্রশংসা ভাবা উচিত নয়। এটা নারীদের দমিয়ে রাখার এবং পুরুষের ক্ষমতা প্রদর্শনের হাতিয়ার।’

হালে-ভিটেনব্যর্গের অধ্যাপিকা আনিয়া স্মিড জানালেন, জার্মান আইনে জনসমক্ষে মৌখিক হয়রানি বা অপমানের জন্য সর্বোচ্চ দুই বছরের শাস্তি বা জরিমানার বিধান আছে। কিন্তু কোন পুরুষ যদি একজন নারীকে বলে ‘দারুণ ফিগার’ তাহলে সেটাকে ‘ভার্বাল এবিউস’ হিসেবে ধরা হয় না। তাই আনিয়া স্মিডের মতে ক্যাটকলিং এর জন্য আলাদা আইন হওয়া উচিত। এটাকে আলাদা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা উচিত। ২০১৮ সালে ফ্রান্সে এ ধরনের একটি আইন হয়েছে, যেখানে অপরাধীকে সর্বোচ্চ ৭৫০ ইউরো জরিমানা গুণতে হয়। পর্তুগাল, বেলজিয়াম আর নেদারল্যান্ডসেও ক্যাটকলিং বেআইনি।

ফাউন্ডেশন ফর ইউরোপিয়ান প্রোগ্রেসিভ স্টাডিজ এর জরিপ অনুযায়ী, জার্মানিতে প্রতি তিনজন নারীর একজন রাস্তায় এ ধরনের মৌখিক হয়রানির শিকার হন। কোয়েল জানান, এটাও ঠিক যে সব নারী এটাকে যৌন হয়রানি হিসেবে দেখেন না। তবে কোন নারীর যদি এ ধরনের উক্তি বা কথা ভালো লাগে সেটা তার ব্যাপার। এরকম কারো দৃষ্টান্ত তুলে ধরে অন্যদের খারাপ লাগাটাকে ছোট করার কোন সুযোগ নেই।

অবশ্য জার্মানিতে এই আইন করা সহজ হবে না বলে অনেকের মত। সমালোচকদের প্রশ্ন এখানে তথ্য উপাত্ত প্রমাণ করবে কীভাবে এবং অপরাধীকে সনাক্ত করা হবে কীভাবে? তাই কোয়েলে নারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যাতে তারা সম্ভব হলে এগুলো রেকর্ড করে রাখেন বা প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে রাখেন। তবে অনলাইন হয়রানির ক্ষেত্রে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে রাখাটা সহজ।

আনিয়া স্মিডের মতে, এ ধরনের অপরাধ কমাতে সমাজের সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করা উচিত। তিনি কোয়েলের পিটিশনকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, সমাজে আরও সচেতনতা প্রয়োজন। পিটিশনে অনেক মানুষ স্বাক্ষর করেছেন। এখন জার্মান পার্লামেন্টের বিশেষ কমিটি এটা খতিয়ে দেখবেন। এরপর বর্তমান আইনের সাথে মিলিয়ে দেখবেন আদৌ নতুন আইনের প্রয়োজন আছে কিনা। এরপর পার্লামেন্টে এ নিয়ে বিতর্কের পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে। সূত্র: ডয়চে ভেলে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Jack+Ali ১৭ মার্চ, ২০২১, ৯:৫২ পিএম says : 0
Rule by he Law of Your creator then all of you can live in peace without any sort of sexual harrassment.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন