দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি বাড়ছে অমর একুশে বইমেলায়। শুরুর দিকে দশনার্থীর আগমন কম থাকলেও বাড়তেছে মেলায় আগতদের সংখ্যা। পাঠকদের আগমন বাড়ার সঙ্গে বিক্রিও বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিক্রয়কর্মীরা। তারা বলছেন, করোনার কারণে অন্যান্য ব্যবসায়ীদের মত তারাও ক্ষতির শিকার। মেলার কারণে গেলো এক বছরের ক্ষতি পোষানো সম্ভব না হলেও মেলার ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং পাঠকের আগমনে কিছুটা হলেও উপকৃত হবেন তারা।
মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, বিকেলের পর থেকেই মেলায় পাঠক-দর্শনার্থীদের আগমন বাড়ে। সন্ধ্যার পর পাঠকের আনাগোনা আরও বেড়ে যায়। আর এ সময়গুলোতে মেলার বিক্রিবাট্টাও খারাপ না বলে জানান বিভিন্ন প্রকাশনীতে দায়িত্বরতরা। ঐতিহ্যের ব্যবস্থাপক আমজাদ হোসেন কাজল বলেন, অন্যান্য বছরের অনুপাতে বিক্রি একই রকম। আগামী শুক্রবার থেকে বিক্রি বাড়তে পারে বলে আমরা মনে হয়। মঙ্গলবার মেলার দ্বার খোলে বেলা তিনটায়। এর পর থেকেই মেলায় আসতে শুরু করেন পাঠকরা। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই প্রবেশ করতে হয় পাঠকদের। তবে মাস্ক পরে মেলার ভেতরে প্রবেশ করলেও প্রাঙ্গণে অনেককেই মাস্ক খুলে ঘুরতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে মেলার তথ্যকেন্দ্র থেকে বারবার সর্তকবার্তা দেওয়া হয় দর্শনার্থীদের। প্রকৃতিতে ঋতুরাজ বসন্ত চললেও ভালোই গরম পড়া শুরু হয়েছে। এই আবহাওয়ার প্রভাব পড়ছে বইমেলায়। তাইতো একটু স্বস্তি পেতে দুপুর এড়িয়ে বেলা পড়ার পর বইমেলাতে আসছেন দর্শনার্থীরা। তবে যারা দূর থেকে আসছেন বই প্রেমের কাছে গরমভীতি তুচ্ছ তাদের। তবে বেশির ভাগ বইপ্রেমী মেলায় আসছেন সন্ধ্যার পর। বিশেষ করে চাকরিজীবীরা সারাদিনের কাজ শেষ করে পরিবার পরিজন নিয়ে মেলায় আসার জন্য সন্ধ্যার পরের সময়কে বেঁচে নিচ্ছেন। বইমেলা সরজমিনে পরিদর্শন করে এমন চিত্রই দেখা গেছে। বিকেলের সময়টাতে তরুণ তরুণীদের উপস্থিতি বেশি হলেও পিছিয়ে নেই বয়স্করা। ঘুরছেন এক স্টল থেকে আরেক স্টলে। মেলা প্রাঙ্গণে কথা হয় কুস্টিয়া ইসলামিক বিশ^বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করা তারেক আহমেদের সাথে। প্রতিবছর মেলায় আসার সুযোগ না হলেও এবার মেলায় এসেছেন। তিনি বলেন, বইমেলায় যতটা না বই কিনতে আসা, তার চেয়ে ভালো লাগছে বই দেখতে। ঘুরে ঘুরে বই দেখে ঘন্টার পর কাটিয়ে দেয়া যায়। স্কুল কলেজ জীবনের বন্ধুদের সাথে দেখা হচ্ছে সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছি। এতেই ভালো লাগছে।
বইমেলায় সর্বস্তরের পাঠকদের পাশাপাশি আসছেন কবি-লেখকরাও। তারা মেলায় ঘুরছেন এবং আড্ডা দিচ্ছেন পরিচিতদের সঙ্গে। আর তাদের দেখে ছবি তুলছেন ভক্তরাও। এভাবেই প্রাণের উচ্ছ¡াস বয়ে যাচ্ছিল সন্ধ্যাকালীন বইমেলা। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, এবার মেলার স্টলগুলো বেশ বড়সড়, মেলায় বিস্তৃতিও অনেক বেড়েছে। এতে পাঠক স্বাচ্ছন্দ্যে বই দেখতে পারছেন। তবে, বইমেলা জমলেও ক্রেতা কম বলে জানান বিক্রেতারা। তাদের আশা, যত দিন যাবে ততই পাঠক-ক্রেতাদের আগমন বাড়বে। বিক্রি হবে বই। বিভিন্ন স্টলের বিক্রেতারা জানান, এখনও ক্রেতা কম। তবে সন্ধ্যাবেলায় একটু বেশি বই বিক্রি হয়। তারা আরও বলেন, প্রতি বছরের মতো মেলার মাঝামাঝি সময় থেকে শেষের দিকে মানুষের সমাগম ঘটে। এসময় বই বিক্রি বেশি হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন