শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

চলতি বছরে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও ঝুঁকি অনেক

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০৩ এএম

অর্ধশতকের সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের দিকে যাচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতি। কিন্তু অঞ্চলভেদে প্রবৃদ্ধিতে ফারাক এবং বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণে মহামারী-পূর্ব সময়ের অর্থনৈতিক কার্যক্রম ধরতে অনেক সময় লাগবে। খবর ব্লুমবার্গ। ট্রিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রে। গত নির্বাচনে ট্রাম্পের পরাজয়ের মাধ্যমে সাবেক এ প্রেসিডেন্টের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিরও পতন হয়। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) অর্ধবার্ষিক বৈঠকে জো বাইডেনের নেতৃত্বে বিশ্ব অর্থনীতির ঝান্ডাবরদারের ভূমিকাও অবতীর্ণ হয় যুক্তরাষ্ট্র। গত শুক্রবার মার্কিন অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক একটি খবরও সামনে আসে। দেশটিতে গত মার্চে নতুন কর্মী নিয়োগের পরিমাণ গত আগস্ট-পরবর্তী সর্বোচ্চে দাঁড়িয়েছে। গত বছর সফলতার সঙ্গে করোনা মোকাবেলার পাশাপাশি অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে নেতৃত্ব দিচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীন। এশিয়ার আরো কয়েকটি দেশও করোনা পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবুও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের চিত্রটা যেন ২০০৮ সালের আর্থিক সংকট-পরবর্তী পরিস্থিতির সঙ্গে মেলানো যাচ্ছে না। ভ্যাকসিন সরবরাহ এবং আর্থিক সহায়তার বিষয়গুলো যেন অঞ্চল ও দেশভেদে ভিন্ন। এতে বেশির ভাগ উদীয়মান অর্থনীতি এবং ইউরো অঞ্চলের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তার ওপর নতুন করে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধিতে ফ্রান্স ও ইতালির মতো দেশ ফের লকডাউন ঘোষণা করেছে। একই চিত্র দেখা যাচ্ছে এশিয়ার অনেক উন্নয়নশীল ও উদীয়মান অর্থনীতিতে। গত সপ্তাহে আইএমএফ প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বলেন, বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি চিত্র ইতিবাচক হলেও বিভিন্ন অংশের মধ্যে ফারাক চিত্রের কারণে তা বিপজ্জনক রূপ নিতে পারে। সব দেশে সব মানুষের কাছে এখনো ভ্যাকসিন পৌঁছায়নি। এখনো অসংখ্য মানুষ চাকরি হারাচ্ছে এবং দারিদ্র্য ক্রমেই বাড়ছে। অনেক দেশই বেশ পিছিয়ে পড়েছে। ২০২১ সালে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি আশা করছে ডব্লিউটিও। ২০২২ সালে তা দাঁড়াতে পারে ৪ শতাংশ। কিন্তু মহামারী থেকে পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মাত্রায় পৌঁছতে অন্য দেশগুলোর অনেক কাঠখড় পোহাতে হবে। ২০২৪ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ৩ শতাংশের নিচেই থাকবে। মহামারীর আগেও এ পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল। পর্যটন ও সেবা খাতের ওপর নির্ভরশীল অর্থনীতিগুলো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছে আইএমএফ। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকেও এ চিত্রটি উঠে এসেছে। ২০২১ সালের প্রথম প্রান্তিকে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১ দশমিক ৩ শতাংশ। তবে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের চিত্রটা বেশ অসম ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি যেখানে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, সেখানে সংকুচিত হচ্ছে ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাজ্য ও জাপানের অর্থনীতি। উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর মধ্যেও পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে চীন থেকে বেশ পিছিয়ে পড়েছে ব্রাজিল, রাশিয়া ও ভারত। সার্বিকভাবে চলতি বছর ৬ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস ব্লুমবার্গ ইকোনমিকসের, যা ১৯৬০-এর দশকের পর সর্বোচ্চ বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস। তবে ইতিবাচক এ চিত্রের বিপরীতে শঙ্কার জায়গা হচ্ছে অব্যাহত করোনা হুমকি, যুক্তরাষ্ট্রের একের পর এক প্রণোদনা প্যাকেজ যা বৈশ্বিক অর্থনীতিকে ঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারে এবং বৈষম্য আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে। ব্লুমবার্গ।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন