শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ঢাকায় ঢুকছে বাইরের বাস : লোকাল বাসে ভাড়ার নৈরাজ্য

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০২১, ১১:৩৫ এএম

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার-আরোপিত সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধে বন্ধ থাকার কথা ছিল গণপরিবহন। তবে দুদিন যেতে না যেতে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে আজ বুধবার থেকে ঢাকাসহ দেশের সিটি করপোরেশনগুলোতে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার।

নতুন এই সিদ্ধান্তে বাইরের গণপরিবহন সিটিতে প্রবেশ করতে পারবে না বলে জানিয়েছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বাইরের গণপরিবহনগুলো প্রবেশ করছে রাজধানী ঢাকায়।

বুধবার (৭ এপ্রিল) সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শনিরআখড়া এলাকায় দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জের অসংখ্য বাস রাজধানীতে প্রবেশ করছে। একই সঙ্গে সিলেট, কুমিল্লা ও লাকসাম এলাকার দূরপাল্লার বাসগুলোকেও প্রবেশ করতে দেখা গেছে।

এ বিষয়ে ডিএমপি ট্রাফিকের ওয়ারী বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোবিন্দ চন্দ্র পাল বলেন, শুধু সিটি করপোরেশন এলাকায় বাস চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। যাত্রাবাড়ী পয়েন্ট দিয়ে বাইরের গাড়ি প্রবেশ করছে কি না সেটা আমরা তদারকি করছি। নির্দেশ অমান্য করে কেউ যদি গাড়ি নিয়ে আসে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে রাজধানীর লোকাল বাসগুলোতে চলছে যাত্রীদের আগে ওঠার প্রতিযোগিতা। ৬০ শতাংশ বৃদ্ধির পর ১০ টাকার ভাড়া ১৬ টাকা হওয়ার কথা থাকলেও বাসগুলো ২০ টাকার নিচে যাত্রী তুলছে না। গুলিস্তান থেকে যাত্রাবাড়ীর ভাড়া মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার হয়ে ১৫ টাকা। এই ভাড়া শতভাগ বাড়িয়ে নেয়া হচ্ছে ৩০ টাকা। পরিবহন শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভাড়ার বিষয়ে তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই। পুলিশ খোঁজও রাখে না, কে কতো ভাড়া নিচ্ছে। বরং বেশি ভাড়া আদায়ের বিষয়টি সবারই জানা বলে দাবি করেন গুলিস্তান- চিটাগাংরোড রুটের চালক আব্দুল বাতেন। তিনি বলেন, বেশি নিচ্ছি এটা ঠিক। তবে আমাদেরকেও বেশি দিতে হচ্ছে। এক ট্রিপে আগে দেড়শ টাকা দিতে হতো। এখন সেটা আড়াইশ’ হয়েছে।

ভাড়া বেশি চাওয়ায় কয়েকটি বাসে উঠতে গিয়েও নেমে আসেন গুলিস্তানগামী তরিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, এখান থেকে গুলিস্তানের বাস ভাড়া (ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে) সবসময়ই ১০ টাকা করে। কিন্তু ২০ টাকার কমে বাসে উঠতে দিচ্ছে না হেলপাররা। সরকারের উদ্ভট সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষের ওপর এমন জুলুম করার সাহস পায় বাস চালকরা।

মোটরসাইকেল চালকদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আফসানা খান বলেন, আমার অফিস মোহাম্মদপুরে। দ্রæত পৌঁছানোর জন্য অ্যাপে মোটরসাইকেল ব্যবহার করি। কিন্তু সরকারের নিষেধাজ্ঞায় সেটি বন্ধ রয়েছে। তাই এদের দ্বারস্থ হয়েছি। আগে গন্তব্যে ১৩০/১৫০ টাকায় যেতে পারতাম। কিন্তু এখন ২০০ টাকার কমে যেতে রাজি না।

মোটরসাইকেল চালক ইব্রাহিম বলেন, মোটরসাইকেল চালিয়েই এক বছর ধরে সংসার চালাচ্ছি। এটি বন্ধ হয়ে গেলে পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে। এখন তো অন্যান্য দিনের মতো যাত্রী পাই না। তাই ভাড়া একটু বেশি হতে পারে।

প্রসঙ্গত, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) বিকেলে নিজের সরকারি বাসভবন থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকাসহ দেশের সব সিটি করপোরেশন এলাকায় সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গণপরিবহন সেবা চালু থাকবে। এটি বুধবার সকাল থেকে কার্যকর হবে। তবে শহরের বাইরের কোনো পরিবহন শহরে প্রবেশ করতে পারবে না এবং বের হতেও পারবে না।
পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত দূরপাল্লায় গণপরিবহন চলাচল যথারীতি বন্ধ থাকবে বলেও জানান মন্ত্রী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন