সব ঋতুর চাইতে শীত ঋতু একেবারেই ভিন্নরকম। এই ঋতুর জন্য শিশু, নবজাতক ও বয়স্কদের জন্য বেশি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। ঠা-ার দিনে বাচ্চারা বেশি কাপড় নষ্ট করে। ধুতে কষ্ট হলেও শুকাতে সমস্যা হয়ে পড়ে। নবজাতক বাচ্চাদের জন্য অন্যঋতুর চাইতে এই ঋতুতে বেশি জামা প্যান্ট ও কাঁথার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। বাচ্চাদের জন্য মধ্যম সাইজের লেপ, তোষক ও কম্বল বানিয়ে অথবা কিনে নিতে পারেন। বাচ্চাদের একেবারেই ঠা-া পানিতে খেলতে দিবেন না। তাতে বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই তৈরি হয়। শীত মৌসুমে জ্বর, ঠা-া, কাশি, হাঁচি, নিউমনিয়া ইত্যাদি ধরনের রোগগুলো বেশি দেখা দেয়। বাচ্চাকে গরম কাপড় পরিয়ে, রাখবেন। তবে সেটা শীতের কমভাব বেশিভাব বুঝে পরাতে হবে। নবজাতক ও হাপুড় পাড়া অথবা টুক টুক করে হাঁটে এধরনের শিশুদের হাতমোজা, পা মোজা, কান টুপি পরিয়ে দিবেন। কেননা তারা তাদের কষ্টগুলো ব্যথাগুলো বুঝতে পারে না। সে জন্য ঘরের শুধু মা-ই নন অন্যান্য সকল সদস্যরা খেয়াল রাখবেন বাচ্চাটি কখন কি মুভমেন্ট করছে। কি চাইছে, কি তার প্রয়োজন! শীতের দিনে রোদ তেমন নেই বললেই চলে। সকাল সকাল গোসল সেরে নিবেন। কাপড় ধোয়ার ঝামেলাটা দুপুর গড়িয়ে করবেন না। কাপড় শুকাতে চাইলে ভরা দুপুরের আগেই কাপড় শুকাতে দিবেন। যদি ভেঁজা থেকে থাকে তাহলে বারান্দায় অথবা খাটের স্টানে ছড়িয়ে দিয়ে ফ্যান ছেড়ে দিবেন। যে রুমে ফেন ছেড়ে কাপড় শুকাবেন সে রুমে বাচ্চাদের না রাখাই ভাল হবে। চুলাতে অনেকেই কাপড় শুকায়। এতে যেমন আরাম তেমন বিপদ। চুলার আগুন বাড়িয়ে রেখে কখনই রান্না ঘর থেকে বের হবেন না। রান্না ঘর ত্যাগ করার পূর্বে চুলার আঁচ কমিয়ে রাখবেন অথবা বন্ধ করে রাখবেন। আপনার একটু সচেতনতায় রক্ষা পেতে পারেন বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে। ছোটদের পাশাপাশি বৃদ্ধরাও শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পান না। অনেক বয়স্করা আছেন যারা ঠিকমত হাত পায়ের যতœ নেন না, রেগুলার গোসলও করেন না। পানি কম খাওয়ার জন্য প্রস্রাবের মধ্যে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভবনা থাকে। নিয়মিত গোসল ও যতেœর অভাবে স্কিন ডিডিজের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এই ধরনের সমস্যার হাত থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবেন। নিয়মিত গোসল করতে না চাইলে কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করবেন তাতে ঠা-া লাগবে না। শরীর হালকা থাকবে। নানা রোগের হাত থেকেও রক্ষা পাওয়া যাবে। শীত মৌসুমে জ্বর, ঠা-া, কাশি, হাঁচি, গলা ব্যথা, কান ব্যথা, নিউমনিয়া ইত্যাদি ধরনের রোগের আগমন বেশি ঘটে থাকে। শীতে রঙ্গীন তাজা শাক সবজির প্রচুর সমারহ হয়ে থাকে। তাই এই সময় প্রচুর শাক সবজি, ফলমূল, পানি ও পানি জাতীয় খাবার খাবেন। লাল ও সবুজ রঙের শাকে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং লোহা পাওয়ার জন্য নির্ভরশীল খাদ্য। বাচ্চা ও বৃদ্ধরা কখনও ভাল খায় আবার কখনও তেমন কিছু খেতে চায় না। তাই তাদের রুচির কথা ভেবে খাবারের খাদ্যমান ঠিক রেখে ভিন্ন জাতীয় খাবার তৈরি করবেন। তাতে তাদের খাবারের আগ্রহ বেড়ে যাবে। আপনি যে মেন্যু তৈরি করে তাদের খাওয়াবেন তাতে যেন প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, শর্করা, স্নেহ পদার্থসহ সকল ধরনের ভিটামিন থাকে। শীতে বিকেলেই ঠা-ার প্রভাব শুরু হয়ে যায়। তাই আগ থাকতেই কিছু শুকনো খাবার সংরক্ষণ করে রাখবেন। বয়স্কদের একটু পর পরই খিদে পায় কিন্তু ঠা-ার জন্য সকালে ঘরের সদস্যদের উঠতে দেরি হয়ে যায়। তাই তাদের খিদা নিবারণের জন্য তার রুমে কোন কৌটা বা বক্সে কিছু শুকনো খাবার ও পানি দিয়ে রাখবেন। শীতের উপকরণ লেপ, তোষক, কাঁথা ইত্যাদি ব্যবহারের পূর্বে ঝেড়ে রোদে শুকিয়ে ব্যবহার করবেন এতে পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। যদি পারেন প্রতিদিন সকালে ব্যবহারের কাঁথা, লেপ, কম্বল, বাচ্চাদের কাঁথা বালিশ ইত্যাদি রোদে গরম করে ব্যবহার করবেন। তাতে ঘুমাতে খুব আরামবোধ লাগবে। ব্যবহৃত গরম কাপড়, শাল, চাদর ও গরম করে নিতে পারেন। তাতে কাপড় ভালো থাকে। ঘরের বয়স্ক সদস্যদের প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই কম থাকে। তাই তাদের উপর এই বয়সে রোগের আক্রমণ বেশি থাকে। রোগের এই আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে বাসায় কমন জাতীয় কিছু ঔষধ রেখে দিবেন। বাচ্চা ও বয়স্ক উভয়ের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ খাওয়াবেন। ঘরের সদস্যদের নিয়মিত যতœ ও সচেতনতাই বাচ্চা ও বৃদ্ধদের সুস্থ্য থাকতে সক্ষম করে সাহায্য করে।
য় শারমীন সুলতানা নূপুর
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন