প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল সাগর উপকূলীয় বরগুনা জেলায় একটানা ৩/৪ মাস যাবৎ অনাবৃষ্টি থাকায় আউশ বীজতলা ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল কৃষকরা প্রতিবছরের মতো এ বছরও আউশের হাইব্রিড, উফসি ও স্থানীয় জাতের বীজতলা তৈরি করে।রোদের তীব্রতায় আউশ বীজ ফেটে চৌচির হয়ে যাওয়ায় কৃষকরা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে জেলায় চলতি মৌসুমে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৭৩৬ হেক্টর জমিতে আউশ বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। একটানা ৭-৮ মাস যাবৎ কোনো বৃষ্টির দেখা নাই। বৃষ্টির উপর বেশী ভরসা করেই বীজতলা তৈরি হয়ে থাকে।
বরগুনা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বৃষ্টি না হলে বীজতলা থাকবেনা। খাল-জলাশয় শুকিয়ে পানি শূন্য হয়ে গেছে। নদীর পানি লবণাক্ত হওয়ায় বীজ তলায় নদীর পানিও ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
কৃষকরা জানিয়েছেন, বীজতলায় এখনই পানির বেশি প্রয়োজন ও আদর্শ সময়। তাই বৃষ্টির জন্য আরও অপেক্ষা করতে হলে আউশ মৌসুমে ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে। কৃষক মো. ফরিদ হোসেন বলেন, কয়েক দশক ধরে চাষাবাদ করে আসছি কিন্তু এমন অবস্থা কখনও দেখিনি। এভাবে চলতে থাকলে চাষাবাদে দেরি হবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার পৌরসভা সহ ৭টি ইউনিয়নে-সর্বত্রই কমবেশি ভুগছেন চাষিরা। বিভিন্ন এলাকায় জমি ফেটে চৌচির হয়ে উঠেছে। এতে কৃষকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শুধু আউশ বীজতলা নয় বৃষ্টি না হওয়ায় অন্যান্য ফসল হলুদ, মরিচ, পাঠ, শাকসবজি ক্ষেতও শুকিয়ে যাচ্ছে। নদী থেকে পানি এনে সেচ দেবার ব্যবস্থাও বর্তমানে নেই লবণাক্ততার কারণে।
বরগুনার চালিতাতলী গ্রামের কৃষক গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি ১২ শতাংশ জমিতে বীজতলা করেছি। একটি মেশিন এনে পুকুরের পানি দিয়ে বীজতলায় সেচ দিচ্ছি। সকলের পক্ষে মেশিন দিয়ে সেচ দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা। বৃষ্টি না হলে অল্প দিনের মধ্যই বীজতলা পুড়ে যাবে।
বরগুনার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এসএম. বদরুল আলম বলেন, বৃষ্টি না হলে আউশ বীজতলার ক্ষতি পুষিয়ে উঠা অসম্ভব হবে। কেউ কেউ পুকুরের পানি বীজতলায় ব্যবহার করলেও তাদের সংখ্যা কম। সাধারণ এই মৌসুমে বৃষ্টির উপর নির্ভর করেই আউশ বীজতলা তৈরি করে কৃষক। সঠিক সময় বীজ রোপণ করতে না পারলে আউশ উৎপাদনও ব্যাহত হবার আশঙ্কা করছেন তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন