টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ইটভাটায় অপরিকল্পিতভাবে টানা বিদ্যুতের তারে স্পষ্ট হয়ে জইন উদ্দিন নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। ভাটার মালিকের গাফিলতিতে ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের ছলিম নগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জইন উদ্দিন ছলিম নগর গ্রামের মনোরুদ্দিনের ছেলে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে মির্জাপুর থানায় নিয়ে আসে। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, জইন উদ্দিনের বাড়ি সংলগ্ন একই গ্রামের হাজী সুলতান উদ্দিনের এইচএসবি নামে একটি ইটভাটা রয়েছে। ভাটায় শ্রমিকদের থাকার জন্য ভাটামালিক সেখানে একটি দু’চালা টিনের ঘর নির্মাণ করেন। পরে সেখানে অপরিকল্পিতভাবে ঝঁকিপূর্ন উপায়ে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করেন। প্রায় দুইশ মিটার দূর থেকে সরু তার বাঁশের খুঁটিতে বেঁধে দু’চালায় বিদ্যুত সংযোগের ব্যবস্থা করেন। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ উপায়ে শ্রমিকদের থাকার ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ করেন ভাটা মালিক।সরু তার দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় একাধিক স্থানে লিক হয়ে দু’চালা টিনের ঘর বিদ্যুয়ায়িত হয়। ভাটা সংলগ্ন বাড়ির বাসিন্দা আজাহার সিকদার জানান, সকালে জইন উদ্দিন মাঠে গরু বেঁধে দিয়ে ওই দু’চালার পাশ দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় বিদ্যুয়ায়িত টিনের বেড়ার সঙ্গে বৃদ্ধের শরীরস্পর্শ হলে তিনি বিদ্যুৎস্পষ্ট হন। এ ঘটনা দেখে আজাহার সিকদার এগিয়ে গিয়ে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তিনি নিজেও বিদ্যুয়ায়িত হয়ে ছিটকে দুরে পড়ে যান। পরে তার আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে জইন উদ্দিনকে উদ্ধার করলেও ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। সোমবার ঘটনা স্থলে গিয়ে দেখা গেছে, ইটভাটার এক পাশ থেকে অন্য পাশে চিকন বাঁশের সাহায্যে প্রায় দুইশ মিটার দৈর্ঘ বিদ্যুতের লাইন টানা হয়েছে। সরু তার বাঁশের খুটির মাথায় বেঁধে দু’চালা টিনের ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ করা হয়েছে। দীর্ঘ দিনেও বাঁশের খুটি ও তার সংস্কার না করায় বাঁশের খুটি হেলে পড়েছে এবং একাধিক স্থানে তার লিক হয়ে তামা বের হয়ে আছে। তারের তামার সঙ্গে দু’চালার টিনের সংযোগ এক হয়ে ঘরটির টিনের বেড়া বিদ্যুতায়িত রয়েছে। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ওই ঘরে কোন শ্রমিক না থাকলেও ভাটামালিক গাফিলতি করে বিদ্যুৎ সংযোগটি বিচ্ছন্ন করেননি। সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করলে তরতাজা মানুষটির এভাবে মৃত্যু হতো না। জইন উদ্দিনে স্ত্রী ভানু বেগম অভিযোগ করে বলেন, এটা স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। তার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এই হত্যার বিচার দাবি করেন। এ ব্যাপারে এইচএসবি ইটভাটার মালিক হাজী সুলতানের ছেলের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, নিহত জইন উদ্দিন তাদের আত্মীয়। বিষয়টি স্থানীয় ভাবে মীমাংসা করা হবে বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি মির্জাপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. জাকির হোসেন বলেন, এভাবে অনুমোদন ছাড়া পাশ্বসংযোগ নেয়ার সুযোগ নেই। এ ঘটনার দায় ভাটা মালিককেই নিতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাছিমুজ্জান উদ্দিন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন