যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতি ও চরম স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে যবিপ্রবি’র শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগরে চেয়ারম্যান ড. মো. আমজাদ হোসেন গতকাল বৃহস্পতিবার যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক ড. আব্দুর রউফ, কোষাধ্যক্ষ ড. সাহেদুর রহমান, সদস্য কিশোর কুমার, ড. ফরহাদ বুলবুল, সুমন রহমান, ড. হুমায়ুন কবীরসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনের সীমাহীন দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার শেষ নেই। তিনি পছন্দসই ব্যক্তিদের দিয়ে গঠনকৃত কমিটির সুপারিশের মাধ্যমে প্রতিমাসে ৬০ হাজার টাকা উত্তোলন করে সরকারের আর্থিক ক্ষতি করেন। সদ্য বিদায়ী উপাচার্য ড. আনোয়ার হোসেন তিন বছর ১১ মাসে শিক্ষক, কর্মচারী নিয়োগ, বিধিবহির্ভূতভাবে পদোন্নতি প্রদান ও এক বিভাগ থেকে অন্যবিভাগে স্থানান্তর, ভবন নির্মাণে অনিয়ম, অনুমোদনবিহীন বিভাগ চালু করাসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে নিজে লাভবান হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, দুদকসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দেয়া হলেও কোন প্রতিকার মেলেনি।
তিনি আরো বলেন, উপাচার্য পদে থাকায় তিনি প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করতেন। কিন্তু এখন তিনি ওই পদে না থাকায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে দিনপ্রতি মাত্র ১২৫/- টাকা ভাড়া দিয়ে উপাচার্যের নির্ধারিত বাংলো সম্পূর্ণ ব্যবহার করেন এবং বাংলোর সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন।
উপাচার্যের নিয়োগপত্র মোতাবেক সার্বক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করবেন মর্মে শর্ত থাকলেও উপাচার্য প্রায়ই ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত থাকেন। যবিপ্রবির ‘শেখ রাসেল জিমনেসিয়াম’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়ের উপস্থিতিতে গত ১৪/১১/২০২০ তারিখে উপাচার্য কর্তৃক যবিপ্রবি’র উচ্চমানের গবেষকদের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক (যিনি বিশ্ব সেরা টপ ২% গবেষক হিসেবে নির্বাচিত) অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনের নামের সাথে যবিপ্রবির উপাচার্যের নামের মিল থাকায় নিজেকে সেরা গবেষক (টপ ২% গবেষক) হিসাবে মিথ্যাচার করে শিক্ষক সমিতি-২০২০ এর নিকট থেকে সম্মাননা গ্রহণ ও নিজে মিডিয়াবাজি করেন। যবিপ্রবির উপাচার্য যবিপ্রবিতে যোগদান করার পর থেকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে গবেষণা ভাতা হিসেবে মাসিক ৩,০০০/- টাকা গ্রহণ করেন অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বসেরা গবেষকদের মধ্যে থাকা সত্তে¡ও শিক্ষক ড. ইমরান খান, ড. জাভেদ হোসেন খান ও ড. আমিনুল ইসলামসহ অন্যান্য সকল শিক্ষকদেরকে মাসিক গবেষণা ভাতা হিসেবে মাত্র ১৫০০/- টাক প্রদান করা হয়। উপাচার্যের অনিয়মের উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইকবাল কবীর জাহিদের মদদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত অমান্য করে পিএইচডি ডিগ্রি বিহীন ৩৫ বছরের অধিক বয়সে ফিরোজ কবিরকে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক পদে নিয়োগ প্রদান করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন