রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রধান দুই ঘাতক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

রাজধানীর পল্লবীতে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ মে, ২০২১, ১২:০০ এএম

রাজধানীর পল্লবীতে নিজ সন্তানের সামনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে সাহিনুদ্দীনকে হত্যা মামলার অন্যতম দুই আসামি ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে। গত শনিবার দিবাগত রাতে মো. মনির গোয়েন্দা পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পল্লবীর ইস্টার্ন হাউজিং এলাকায় ওই মামলার এজাহারভুক্ত পাঁচ নম্বর আসামি মো. মানিক র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়।

হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি আউয়ালকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এদিকে হত্যাকান্ডের ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, নিহতের ঘাড়ে একের পর এক কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে মনির। গত শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে পল্লবীর সাগুফতা হাউজিং এলাকায় বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় মনিবর নিহত হয়। তার লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

গতকাল সকালে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের মিরপুর জোনাল টিমের এডিসি মো. সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে পল্লবীর সাগুফতা হাউজিং এলাকায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের মিরপুর বিভাগের একটি জোনাল টিমের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে গুরুতর আহত হয় মো. মনির। পরে তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পুলিশের দু’জন সদস্য আহত হয়েছেন।

পল্লবী থানার এসআই বুলবুল বলেন, নিহতের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। নিহত মনির পল্লবীর চাঞ্চল্যকর সাহিনুদ্দীন হত্যা মামলার ৬ নম্বর আসামি এবং হত্যাকাণ্ডের সাথে সে সরাসরি জড়িত ছিল।
গত ১৬ মে বিকেলে জমির বিরোধের মীমাংসার কথা বলে সাহিনুদ্দীনকে পল্লবী থানার ডি ব্লকের একটি গ্যারেজের ভেতর নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয়। প্রকাশ্য দিবালোকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা আকলিমা বেগমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৭ মে পল্লবী থানায় হত্যা মামলাদায়ের করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ১৬ মে বিকেল ৪টার দিকে সুমন ও টিটু নামের দুই যুবক সাহিনুদ্দীনকে জমির বিরোধ মেটানো হবে জানিয়ে ফোন করে ডেকে নেয়। সাহিনুদ্দীন মোটরসাইকেলে পল্লবীর ডি ব্লকের ৩১ নম্বর সড়কের ৪০ নম্বর বাসার সামনে যায়। সেখান থেকে সুমন ও টিটুসহ ১৪-১৫ জন মিলে তাকে টেনে-হিঁচড়ে ওই বাড়ির গ্যারেজে নিয়ে যায়। এ সময় সাহিনুদ্দীনের ছয় বছরের ছেলে মাশরাফি গেটের বাইরে ছিল।
গ্যারেজে ঢুকিয়ে সাহিনুদ্দীনকে চাপাতি, চায়নিজ কুড়াল, রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে তারা। এরপর তাকে ওই গ্যারেজ থেকে বের করে ৩৬ নম্বর বাড়ির সামনে নিয়ে আবার কুপিয়ে ফেলে রেখে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

আকলিমার অভিযোগ, পল্লবীর সেকশন-১২ বুড়িরটেকের আলীনগর আবাসিক এলাকার হ্যাভেলি প্রোপার্টিজ ডেভেলপার লিমিটেডের এমডি এবং লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি এম এ আউয়ালের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ভাড়া করা স্থানীয় সন্ত্রাসীরা সাহিনুদ্দীনকে হত্যা করেছে। পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের ১০ একর জমি জবরদখলে বাধা দেয়ায় তাকে খুন করা হয়।

মামলার প্রধান আসামি লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি ও ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এম এ আউয়াল। অপর আসামিরা হলেন- ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সুমন, মো. আবু তাহের, মুরাদ, মানিক, মনির, শফিক, টিটু, কামরুল, কিবরিয়া, দিপু, আবদুর রাজ্জাক, মরণ আলী, লিটন, আবুল, বাইট্যা বাবু, বড় শফিক, কালু ওরফে কালা বাবু, নাটা সুমন ও ইয়াবা বাবু। আসামিরা সবাই পল্লবী থানা এলাকার বাসিন্দা।
গত বৃহস্পতিবার সকালে ভৈরব এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি আউয়ালকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এছাড়া এ ঘটনার মাস্টারমাইন্ড মো. সুমন বেপারী (৩৩) এবং মো. রকি তালুকদারকে (২৫) গ্রেফতার করা হয়েছে।
র‌্যাবের কর্মকর্তারা বলছেন, ঘটনার চার-পাঁচদিন আগে মূল পরিকল্পনাকারী নির্দেশদাতা ও মামলার প্রধান আসামি আউয়ালের কলাবাগান অফিসে ২ নম্বর আসামি আবু তাহের ও ৩ নম্বর আসামি সুমন হত্যাকাণ্ডের চূড়ান্ত পরিকল্পনা করে। বিষয়টি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয় সুমনকে। সুমনের নেতৃত্বে প্রায় ১০-১২ জন কিলিং মিশনে অংশ নেয়।

জমি বিরোধের মীমাংসার কথা বলে আগে থেকেই সাহিনুদ্দীনকে ঘটনাস্থলে আসতে বলা হয়েছিল। প্রথমে সুমন, মনির, মানিক, হাসান, ইকবাল ও মুরাদসহ ১০-১২ জন ধারালো অস্ত্র দিয়ে সাহিনুদ্দীনকে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে। ঘটনার শেষ পর্যায়ে শরীরের ওপরের অংশে মনির এবং হাঁটু ও হাত-পায়ে কুপিয়ে মানিক সাহিনুদ্দীনের মৃত্যু নিশ্চিত করে।

তিনজন ৪ দিনের রিমান্ডেঃ প্রকাশ্যে ছেলের সামনে সাহাবুদ্দীনকে কুপিয়ে হত্যার মামলায় তিনজনের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তারা হলেন- শরীফ, টিটু ও ইকবাল। গতকাল রোববার তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদেরকে দশ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার হোসেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মণ্ডল তাদের প্রত্যেককে চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (13)
মোঃ+দুলাল+মিয়া ২৪ মে, ২০২১, ১২:৪৮ এএম says : 0
মনির ও মানিক কে হত্যার পলিসি হলো এম পি আউয়াল কে বাঁচানে ।এই সমস্ত পলিটিক্স এম পি আউয়াল এবং রেপ এবং কি উপরের সরকারের মন্ত্রীদের চালাকি।আসল খুনি দুই জনকে হত্যা মতলব কি । আউয়াল এম পি এখন যদি বলেন আমি এদের বলি নাই এবং মিটিং ও করি নাই,আউয়াল এম পির কোটি কোটি টাকা আছে টাকা দিয়ে এই দুই জনকে ক্রস ফায়ার করে হত্যা করাইয়াছে। যেহেতু সে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। শেষ পযন্ত এইটা হবে ,আউয়াল এম পি কে জামিন দিবে ,আউয়াল এম পি জামিনে মুক্তি পেয়ে যাবেন,এবং কেইছ চলতেই থাকবে,হাজিরা দিতেই থাকবে এই ভাবে দশ পনরে বসর চলে যাবে,শেষ পযন্ত কিছুই হবে না টাকার কাছে সবাই গোলামে পরিনত হবে,আর শেষ পযন্ত ছেলে সামনে বাবা কে হত্যা করলে ,সেই ছেলে দশ পনরে বসরে বড় হবে,মাকে নিয়ে বাবার হত্যা জন্য কোট কাঁচারিতে দৌড়াতে থাকবে,আইনজীবী নিয়োগ করবে শেষ পযন্ত বাবা কে হত্যাতে করিলেই বাবার সামান্য যা আছে এই গুলিও সাপের পোটে যাবে ,ঐ ছেলেটি বিচার ও পাবে না এবং কি সব কিছু শেষ হবে ,কেইছ আর কেইছ করে,কথা বলতে শুনিয়াছি,আমও গেলো ছালাও গেলো বাবা ও চলে গেলো সম্পদ ও চলে গেলো।এই হবে শেষ পযন্ত। আপনারা শেষ পযন্ত দেখবেন কি হয়,এই দেশে বর্তমানে সংসদীয় পদ্ধতি করে সব কিছু দলীয় ভাবে হয়ে থাকে। শেষ পযন্ত দেখবেন এই দুই জনকে হত্যা করার মতলব আউয়াল এম পি কে বাচাইয়া দেওয়া,আপনারা যাচাই করে দেখেন আউয়াল এম পি কোটি কোটি টাকা খরছ করাইয়া এই দুই খুনী কে ও হত্যা করাইয়াছে। তার মতলব আউয়াল এম পি এক বন্দুকে দুই শিকার করেছে। হায়রে সোনার বাংলা এই বুজি তোমার কাজ এই বুজি তোমার ধর্ম।
Total Reply(0)
M Delwar Hossain ২৪ মে, ২০২১, ২:২০ এএম says : 0
উদেরকে মেরে ফেলে এই মহারতিকে(আওয়াল) বাঁচানোর আয়োজন মনে হচ্ছে।
Total Reply(0)
Mohammed Emam Gazi ২৪ মে, ২০২১, ২:২১ এএম says : 0
I waited for the crossfire of the main killer, Master Mind, to send a message to other masterminds, not in court, in this way the desired death of the people of Bangladesh is crossfire.
Total Reply(0)
প্রবাসী-একজন ২৪ মে, ২০২১, ২:২১ এএম says : 0
ক্রস-ফায়ারিং-এর একটা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা হলে আমার মনে হয় বাংলাদেশ গোল্ড মেডেল পাবে।
Total Reply(0)
Shakhawat Hossain ২৪ মে, ২০২১, ২:২১ এএম says : 0
Thanks RAB. Nobody will protest for this killing because they were poshu.
Total Reply(0)
Zaman Bulu ২৪ মে, ২০২১, ২:২২ এএম says : 0
নাটের গুরুকে বাঁচাতে,এতো নাটক। কয়েক দিন পর নাটের গুরুকে মুক্ত করে দেওয়া হবে ।
Total Reply(0)
Kawsar Mahmud ২৪ মে, ২০২১, ২:২২ এএম says : 0
মূল হোতা আড়াল করার জন্য‌ই ক্রসফায়ারের নাটক চলছে।
Total Reply(0)
Mohammed Emam Gazi ২৪ মে, ২০২১, ২:২২ এএম says : 0
আউয়াল কে অস্ত্র উদ্ধারে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। এবং বাংলাদেশের পুলিশ ও RAB ধন্যবাদ। ঐ দুই জনের মতোই হোক?
Total Reply(0)
Mohammed Azam ২৪ মে, ২০২১, ২:২৩ এএম says : 0
প্রধান ঘাতক, মাস্টার মাইন্ড এর ক্রসফায়ারের অপেক্ষা রইলাম,যাতে অন্য মাস্টার মাইন্ডদের বার্তা দেওয়া হয় আদালতে নয় এই ভাবে বাংলাদেশের মানুষের আকাংকিত মৃত্যু ক্রসফায়ার।।।
Total Reply(0)
Amir Shohag ২৪ মে, ২০২১, ২:২৩ এএম says : 0
আউয়াল কে অস্ত্র উদ্ধারে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি
Total Reply(0)
Mohammad Alauddin ২৪ মে, ২০২১, ২:২৩ এএম says : 0
এর পরেও,তদন্ত কমিটি গঠন।যেই হোক ছার দেওয়া হবে না।আরো কত কিছু।কিছু দিন পর নতুন নাটক হবে।
Total Reply(0)
মোঃ+দুলাল+মিয়া ২৪ মে, ২০২১, ২:২৯ এএম says : 0
আউয়াল এম পি কে বাঁচাতে কোটি কোটি টাকা খাইয়া আসল দুই খুনীকে হত্যা করা হয়েছে। যেহেতু আউয়াল এম পি নির্দোষ হয়ে যায়। সাহেব পিনিস কিন্তু আউয়াল এম পি বলবে ,ফিনিস বলেছে কিন্তু কে বলছে আমি জানি না এবং কি ফিনিস সেটাও জানিনা। আমার ঘরের কর্মচারী আমাকে বলেছে সাহেব। কাপড় ইস্ত্রি ফিনিস ইত্যাদি বলে আউয়াল এম পি বেঁচে যেতে পারে। খুনীর কন্ঠ কোথায় পাবে ,কি করে বুজবে খুনির কন্ঠ বিষয়টি কে অন্যক্ষাতে নিতে এবং আউয়াল এম পি বেঁচে যেতে কোটি কোটি টাকা দিয়ে এই দুই জনকে ক্রস ফায়ার করে হত্যা করেছে। দুর্নীতি কি ভাবে হয় দেখেন।পায়ে হাতে গুলি করে শুনে ছিলাম,(আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি),এইটা আগের জাতীয় সংগীত ,আর এই খুনের সংগীত আইনের লোক আউয়াল এম পি থেকে কোটি কোটি টাকা খাইয়া,আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় কি করবে,এই হইলে অবস্থা। বেইমান সব বেইমান।
Total Reply(0)
salman ২৪ মে, ২০২১, ৭:৪০ এএম says : 0
Master Mind ai X-MP & Satro leg neta SUMON noy keno?? Ade'r sobar CROSS FIRE chai. Ader Bachar odhikar nai.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন