বাংলাদেশে কোভ্যাক্স থেকে পাওয়া ফাইজার-বায়োনটেকের টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয় গত সোমবার। প্রথম দিনে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৩৬০ জনকে এই টিকা দেয়া হয়। টিকাগ্রহীতাদের ৭ থেকে ১০ দিন পর্যবেক্ষণ শেষে অন্যদের এই টিকা দেয়ার কর্মসূচি শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে তৃতীয় টিকা হিসেবে ফাইজার ব্যবহার করা হয়। টিকা দেয়ার পর ইতিমধ্যে ৭দিন অতিবাহিত হয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে ফাইজার-বায়োএনটেকের উদ্ভাবিত করোনার টিকায় অ্যালার্জি জনিত পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার খবর থাকলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এখনো তা পাওয়া যায়নি।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা পরীক্ষামূলক প্রয়োগকারীদে মধ্যে গত ১ সপ্তাহে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া যায়নি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, ফাইজারের টিকা যারা নিয়েছেন তাদের কাছ থেকে আমরা এখন পর্যন্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কোনো খবর পাইনি। তিনি বলেন, ফাইজারের টিকা প্রদানে আমরা সফল।
সার্বিক বিষয়ে জানতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হকের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করলে প্রথমে ব্যস্ত বলে কেটে দেন। পরে আর কল রিসিভি করেননি।
প্রথম দিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রথম ফাইজারের টিকা নেন মালিবাগের বাসিন্দা রাহাত চৌধুরী। রাহাত চৌধুরী জানান, প্রথমে টিকা নেয়ার আগ্রহ না থাকায় নিবন্ধন না করলেও পরে পরিবারের চাপে এপ্রিলে টিকাদান বন্ধ হওয়ার দুইদিন আগে নিবন্ধন করেছেন। তিনি বলেন, গত রোববার ফাইজারের টিকা নেয়ার জন্য এসএমএস আসে। সোমবার সবার আগে টিকা নিয়েছি এজন্য ভালো লাগছে। ইঞ্জেকশন পুশ করার সময় যে ব্যাথা লাগে তাও হয়নি। সবাইকে বলতে চাই টিকা নেয়া উচিত।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা জিগাতলার বাসিন্দা হারুনুর রশিদ জানান, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিতে গত মার্চে নিবন্ধন করলেও পরে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ায় টিকা নিতে পারেননি। সেরে ওঠার পর অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাদান বন্ধ হয়ে যায়। তিনি বলেন, ফাইজারের টিকার জন্য এসএমএস আসে মোবাইলে। গত সোমবার টিকা নিলাম, অস্বাভাবিক কোনো কিছু অনুভব করছি না।
স্বাস্থ্য অধিদফতরে একটি সূত্র জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ফাইজারের টিকার জন্য কোনো অগ্রাধিকার তালিকা তৈরি করা হয়নি। তবে বিদেশগামীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে। আমাদের শ্রমিকদের কোনো কোনো দেশে ফাইজার বা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেয়ার কথা বলে দেয়া হচ্ছে। তাদের অগ্রাধিকার দেয়ার বিষয়টি আমাদের চিন্তার মধ্যে আছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে তৃতীয় টিকার চালান হিসেবে টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকে পাওয়া মার্কিন ওষুধ কোম্পানি ফাইজার ও জার্মান জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানি বায়োএনটেকের তৈরি এক লাখ ৬২০ ডোজের চালান গত ৩১ মে দেশে এসে পৌঁছায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন