বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কমেছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে তাপমাত্রা। এদিকে দেশের প্রধান নদ-নদীর পানি ধীরে ধীরে কমতির দিকে রয়েছে। নদ-নদীসমূহের পানি হ্রাস বৃদ্ধির সঙ্গে অনেক জায়গায় নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে পটুয়াখালীতে ১০৫ মিলিমিটার। এ সময়ে দেশের বেশিরভাগ জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত, কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণ হয়েছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বোচ্চ ৩৩ ও সর্বনিম্ন ২৪.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, বর্ষার মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। মৌসুমী বায়ুর লঘুচাপের একটি বলয় ভারতের উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
আজ রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি-বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। এরপরের ৫ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
নদ-নদী প্রবাহ পরিস্থিতি : গতকাল পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহের ১০১টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গতকাল ৪৪টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৫৫টি স্থানে হ্রাস পায়। একটি স্থানে পানি অপরিবর্তিত থাকে। শুক্রবার নদ-নদীর ৬৩টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৩৭ স্থানে হ্রাস পায়। বৃহস্পতিবার ৭৮টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ২২টিতে হ্রাস পায়। বুধবার ৭৫টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ২২টিতে হ্রাস পায়। মঙ্গলবার ৬১টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৩৩টিতে হ্রাস পায়। বর্তমানে কোন নদী বিপদসীমায় নেই। সার্বিকভাবে পানি হ্রাসের ধারায় রয়েছে। তবে উজানে ভারতে অতিবৃষ্টি হলে ঢলের কারণে এবং অভ্যন্তরীণ ভারী বর্ষণ হলেও নদ-নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেতে পারে।
নদ-নদীসমূহের প্রবাহ পরিস্থিতি ও পূর্বাভাসে গতকাল পাউবো জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদের পানি স্থিতিশীল রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি এবং যমুনা নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে। গঙ্গা নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে, অন্যদিকে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকায় প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি স্থিতিশীল রয়েছে। তা আগামী ২৪ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে।
বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগের তথ্য-উপাত্ত উল্লেখ করে পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র পূর্বাভাসে গতকাল জানায়, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং এর সংলগ্ন ভারতের হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, আসাম, মেঘালয় প্রদেশে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এরফলে এ সময়ে দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার নদীসমূহের পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে কতিপয় স্থানে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন