সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাস্থ্য

ওষুধজনিত কারণে মুখের সমস্যা

| প্রকাশের সময় : ৯ জুলাই, ২০২১, ১২:০৬ এএম

মুখের অভ্যন্তরে রঙের পরিবর্তন বা পিগমেন্টেশন হয়ে থাকে ধাতব পদার্থ যেমন সীসা অথবা পারদ মাড়ির কোষে জমা হওয়ার কারণে। তবে বর্তমানে এধরনের ঘটনা খুবই বিরল। ফেনোথিয়াজিনস্ ওষুধ ব্যবহারের কারণে মুখের পিগমেন্টেশন হয়ে থাকে। ফেনোথিয়াজিনস্ সিজোফ্রেনিয়াসহ অন্যান্য সমস্যার জন্য মানসিক রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। পিগমেন্টেশন বলতে বোঝায় কালারিং বা রঙ। দীর্ঘমেয়াদে চর্মে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার এবং এন্টিসেপটিক মাউথওয়াশ ব্যবহারের কারণে জিহবার উপরিভাগে গাঢ় এমনকি কালো রঙের অর্থাৎ ডিসকালারেশন বা স্বাভাবিক রঙের পরিবর্তন হয়ে থাকে। সম্ভবত এটি হয়ে থাকে পিগমেন্ট (রঙ) গঠনকারী জীবাণুদের অধিক বংশবৃদ্ধির জন্য। আয়োডাইডস্, এন্টিথাইরয়েড ড্রাগ, ফেনোথিয়াজিনস্ এবং সালফোনেমাইডস্ ব্যবহারের কারণে লালাগ্রন্থি ফুলে যেতে পারে। অনেক ওষুধের কারণে জিহবার স্বাদের পরিবর্তন হয়ে থাকে। পেনিসিলামাইন, গ্রাইসিওফুলভিন, ক্যাপট্রোপিল এবং অন্যান্য এসিই ইনহিবিটরস্, কার্বিমাজোল ও মেট্রোনিডাজল সেবনের কারণে স্বাদের পরিবর্তন বা মুখের স্বাদ সাময়িকভাবে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

অনেক ওষুধই শুষ্ক মুখের সৃষ্টি করে বিশেষ করে ট্রাইসাইক্লিক বিষন্নতানাশক ওষুধ। অতিরিক্ত ডাইয়ুরেটিকস্-এর কারণেও জেরোসটোমিয়া বা শুষ্ক মুখের সৃষ্টি হয়। শুষ্ক মুখের কারণে র‌্যামপ্যান্ট ডেন্টাল ক্যারিজ, পেরিওডন্টাল রোগ এবং মুখের সংক্রমণ দেখা দিয়ে থাকে। এছাড়া মুখে জ্বালাপোড়া এবং নিশ্বাস নেয়ার সময় খারাপ গন্ধ হতে পারে। লিভার, কিডনি, অন্ত্রের রোগ, ডায়াবেটিক কিটোসিসের ক্ষেত্রে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। স্থানীয় কোনো কারণ পাওয়া না গেলে অন্যান্য কারণ অনুসন্ধান করে দেখতে হবে। দীর্ঘমেয়াদে ফিনাইটয়েন চিকিৎসার কারণে ফলেটের অভাব এবং ম্যাক্রোসাইটিক রক্তস্বল্পতা মাঝে মাঝে দেখা যেতে পারে। এছাড়া বেশি মাত্রায় অ্যাপথাস আলসার দেখা দিতে পারে। মুখের ঘাঁ বা আলসার হয়ে থাকে কোনো রোগীকে যখন কোষ বিনাশকারী ওষুধ দ্বারা চিকিৎসা দেয়া হয় বিশেষ করে মিথোট্রেক্সেট। এছাড়া পেনিসিলামাইন, ক্যাপট্রোপিল এবং এসিই ইনহিবিটরস্ দ্বারা চিকিৎসার কারণেও মুখে ঘাঁ দেখা দিতে পারে। ফেনোথিয়াজিনস্-এর কারণে মাঝে মাঝে ফেসিয়াল পেইন বা মুখে ব্যথা হতে পারে। ফিনাইটয়েনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে জিনজাইভাল হাইপারপ্লাসিয়া হতে পারে। কিন্তু মাঝে মাঝে সাইক্লোসপরিন অথবা নিফিডিপিন এবং কিছু ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার জাতীয় উচ্চরক্তচাপ চিকিৎসার ওষুধ ও জিনজাইভাল হাইপারপ্লাসিয়া সৃষ্টি করতে পারে। অতএব ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র দেখে বা নিজ থেকে মুখস্থ ওষুধ সেবন করবেন না। শরীরের কোথাও কোনো সমস্যা দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

ডা. মো. ফারুক হোসেন
মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ
মোবাইল : ০১৮১৭-৫২১৮৯৭
ই-মেইল: dr.faruqu@gmail.com

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন