শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

রাজশাহীর আড়ানী পৌরমেয়র মুক্তার অস্ত্র মামলায় ৪দিনের রিমান্ডে

বাঘা (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ জুলাই, ২০২১, ১২:৪৩ পিএম

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভার আলোচিত সেই মেয়র মুক্তার আলীকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজশাহীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ এর বিচারক আরিফুল হক এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জানা যায়,মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাঘা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তৈয়ব আলী আদালতের কাছে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। কিন্তু আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ওসি জানান, আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করায় মেয়র মুক্তার আলীকে জেল-হাজতে পাঠানোর প্রয়োজন হয়নি। তিনি এখন পুলিশ হেফাজতেই আছেন। রিমান্ড শেষে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে পাঠানো হবে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাতে এলাকায় এক প্রভাষকের বাড়িতে হামলা চালায়,মেয়র মুক্তারসহ তার লোকজন। এ সময় ওই প্রভাষক ও তার পরিবারের লোকজনকে মারধর করেন মেয়র নিজে ও তাঁর সহযোগীরা। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই রাতেই বাঘা থানা পুলিশের একটি দল আড়ানী পৌর মেয়রের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় তার বাড়িতে কয়েক ঘন্টা ধরে তল্লাশি করে-৭.৬৫ অটোমেটিক ১ টি বিদেশি পিস্তল,৭.৬৫ পিস্তলের ৪টি মেগাজিন,৭.৬৫ পিস্তলের ১৭ রাউন্ড তাজা গুলি,৭.৬৫ পিস্তলের ০৪ টি গুলির খোসা, ওয়ান শুটার ১ টি, দেশী তৈরী বন্দুক ১ টি,এয়ার রাইফেল ১টি, শট গানের ২৬ রাৎন্ড গুলি,১০ গ্রাম গাঁজা,৭ পুরিশা হেরোইন ২০ পিচ ইয়াবা,১৮ লক্ষ টাকার স্বাক্ষর করা চেক ও নগদ ৯৪ লক্ষ ৯৮ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মেয়র মুক্তার আলী পালিয়ে যায়। তবে তার স্ত্রী জেসমিন আকতার (৪০) তার ২ ভাতিজা,নবাবের ছেলে হাসান (২৫) ও সামরুলের ছেলে শান্ত (২৩) কে আটক করে পুলিশ। অস্ত্র এবং মাদক উদ্ধারের ঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে বুধবার থানায় দুটি মামলা করা হয়। আসামি হন মেয়রও। এরপর শুক্রবার ভোররাতে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশি তার ভাইরার বাড়ী থেকে মুক্তার আলী ও তাঁর শ্যালক রজন আলীকে গ্রেফতার করা হয়।
এরপর তাকে নিয়ে আড়ানী পৌরসভার পিয়াদাপাড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে চালানো হা। সেখানে মেলে আরও এক লাখ ৩২ হাজার টাকা, ফেন্সিডিল, গাঁজা ও ধারালো চাকু। এ ঘটনায় অস্ত্র ও মাদক আইনে আরও দুটি মামলা করে পুলিশ।
বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, বুধবার ও শুক্রবার দায়ের হওয়া দুটি অস্ত্র মামলায় মেয়র মুক্তারের রিমান্ড চাওয়া হয়। একই সঙ্গে মুক্তার ও তাঁর শ্যালকের পক্ষে তাঁদের আইনজীবী জামিন আবেদন করে। সন্ধ্যায় শুনানির সময় বিচারক জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে শুধু মেয়রের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।এরপর তাঁকে পুলিশ হেফাজতেই নেওয়া হয়েছে। আর শ্যালক রজনকে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে প্রেরণ করা হয়।
ওসি আরও জানান, গত বুধবার মেয়রের স্ত্রী এবং দুই ভাতিজাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের রিমান্ড চাওয়া হয়নি। তবে তাঁদের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেছিলেন। আদালত তাদেরও জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন।
মুক্তার আলী ছিলেন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। পরে হন কাউন্সিলর। ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে হন মেয়র। এ বছর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েও পাননি। ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে ভোট করে জয়ী হন। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় ভোটের সময় পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। তার বিরুদ্ধে আগে থেকেই পাঁচটি মামলা ছিল। গত বুধবার থেকে আরও পাঁচটি মামলা হওয়ায় এখন তিনি ১০ মামলার আসামি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন