শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

হজ ফরজ হওয়ার কারণ

লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক

এ. কে. এম ফজলুর রহমান মুনশী | প্রকাশের সময় : ১৩ জুলাই, ২০২১, ১২:০০ এএম

আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত আল কোরআনে এরশাদ করেছেন : ‘নিঃসন্দেহে সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের (ইবাদতের) জন্য নির্ধারিত হয়েছে, যা মক্কায় অবস্থিত এবং সারা বিশ্বের মানুষের জন্য হেদায়েত ও বরকতময়।’ (সুরা আলে ইমরান : আয়াত-৯৬)।

এই আয়াতে কারিমায় সুস্পষ্টভাবে বলে দেয়া হয়েছে যে, আল্লাহর ঘর কাবা শরিফ মক্কায়। এই ঘরই হচ্ছেÑ হজ ফরজ হওয়ার কারণ। আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি এবং এই ঘরের সম্মান প্রদর্শনই হলো হজ। এই ফরযিয়্যাতকে আল্লাহপাক নিজের স্থিরকৃত করেছেন। আল কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে : ‘আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে মানুষের কর্তব্য হচ্ছেÑ আল্লাহর ঘরের হজ করা, সে লোকের জন্য যার সেখান পর্যন্ত যাতায়াতের সামর্থ্য আছে।’ (সুরা আল ইমরান : আয়াত-৯৭)। এই আয়াতের নির্দেশ অনুসারে আল্লাহর ঘর পর্যন্ত যাতায়াত সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যয়, সুযোগ-সুবিধা এবং শক্তি সামর্থ্যরে অধিকারী প্রত্যেক ব্যক্তির ওপর হজ করা ফরজ। আল্লাহর নির্দেশক্রমে বিশ্বনবী হজরত মোহাম্মাদ মুস্তাফা (সা.) ও হজ ফরজ হওয়ার ঘোষণা এভাবে প্রদান করেছেন : ‘আল্লাহর ঘরের হজ ফরজ যদি তোমার তথায় যাতায়াতের সামর্থ্য থাকে।’ তাই, এ কথা স্পষ্টতই বলা যায় যে, হজ কর্মের দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয় এবং ইহা আল্লাহর ঘরের প্রতি সম্মানপ্রদর্শনের মোক্ষম পন্থা। আল্লাহ তায়ালার নির্দেশক্রমে এই পৃথিবীর বুকে সর্বপ্রথম ইবাদতের ঘর হিসেবে ফিরিশতাগণ কাবা গৃহকে মক্কায় নির্মাণ করেন। অতএব, কাবা গৃহই পৃথিবীর সর্বপথম উপাসনালয়, তারপর হজরত আদম (আ:) ও বিবি হওয়া (আ:) পৃথিবীতে আগমনের পর আল্লাহপাক জিব্রাঈল (আ:) এর মাধ্যমে তাদের কাবাগৃহ নির্মাণের আদেশ দেন। আদেশ মোতাবেক তারা ফিরিশতাদের চিহিৃত নির্মাণশৈলীর ওপর কাবাগৃহ নির্মাণ করেন। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা তাদের এই গৃহ তাওয়াফ করার নির্দেশ দেন।

হজরত আদম (আ:) নির্মিত কাবাগৃহ হজরত নূহ (আ:)-এর মহাপ্লাবনে বিধ্বংস্ত হয়ে যায়। তারপর হজরত ইব্রাহিম (আ:) আল্লাহর হুকুমে প্রাচীন ভিত্তির ওপর কাবাগৃহ পুনঃনির্মাণ করেন। পরবর্তীকালে এক দুর্ঘটনায় কাবাগৃহের প্রাচীর ধসে গেলে জুরহাস গোত্রের লোকেরা এটি পুনঃনির্মাণ করেন। এভাবে কয়েকবার বিধ্বস্ত হওয়ার পর একবার আমালেকা সম্প্রদায় ও একবার কুরাইশরা এ গৃহ নির্মাণ করেন। কুরাইশদের নির্মাণ কাজে পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.) ও শরিক ছিলেন এবং তিনিই ‘হাজারে আসওয়াদ’ কে যথাস্থানে নিজ হাতে স্থাপন করেছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ইন্তেকালের পর হজরত আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের (রা:) কাবাগৃহ সংস্কারসহ নতুন করে নির্মাণ করেন। এ নির্মাণ বেশি দিন টিকেনি। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের (রা:) হাজ্জাজ বিন ইউসুফের নিকট পরাজিত ও শাহাদাত বরণ করলে অত্যাচারী হাজ্জাত বিন ইউসুফ কাবাগৃহকে পুনঃনির্মাণ করে, যা অদ্যাবধি কালের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
মুক্তিকামী জনতা ১৩ জুলাই, ২০২১, ৩:২২ এএম says : 0
আল্লাহ তাআলার একটি বিশেষ বিধান হজ। শারীরিক ও আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান নারী-পুরুষের ওপর হজ ফরজ।
Total Reply(0)
সোয়েব আহমেদ ১৩ জুলাই, ২০২১, ৩:২২ এএম says : 0
হজ্জের মাধ্যমে মুসলমানদের ইহলৌকিক ও পারলৌকিক জীবনের সৌভাগ্যের দোওয়ার খুলে যায়, ইহরাম বাধা গায়ে হাজীর লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ( হে রাব্বে কারিম হাজির আমি তোমার দরবারে হাজির) এ ধমনি মুলত আল্লাহর নির্দেশিত ইবরাহীম (আঃ) এর আহমানের সাড়া দিয়ে এগিয়ে যায়।
Total Reply(0)
নোমান মাহমুদ ১৩ জুলাই, ২০২১, ৩:২৩ এএম says : 0
আল্লাহ তায়া’লা আমাদেরকে এই আলোচনার উপর আমল করার তাওফিক দান করুক। (আমিন)
Total Reply(0)
সফিক আহমেদ ১৩ জুলাই, ২০২১, ১০:১৯ এএম says : 0
হজ ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত। হাদিসে হজ আদায়কারীকে সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর মতো নিষ্পাপ বলে অভিহিত করা হয়েছে।
Total Reply(0)
কাওসার আহমেদ ১৩ জুলাই, ২০২১, ১০:২০ এএম says : 0
ইবাদতসমূহের মাঝে একমাত্র হজের ক্ষেত্রে অর্থ ও শারীরিক শ্রমের প্রয়োজন এবং সামর্থ্য থাকা জরুরি।
Total Reply(0)
তাজউদ্দীন আহমদ ১৩ জুলাই, ২০২১, ১০:২০ এএম says : 0
হজ মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সংহতি ও সাম্যের সপ্রতিভ প্রতীক। ইসলামের অন্যতম স্তম্ভও বটে। হজে আর্থিক ও কায়িক শ্রমের সমন্বয় রয়েছে। অন্য কোনো ইবাদতে যা একসঙ্গে পাওয়া না যায় না।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন