শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

হজ বা ওমরার সময় তালবিয়া পাঠ

লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক

এ. কে. এম ফজলুর রহমান মুনশী | প্রকাশের সময় : ১৪ জুলাই, ২০২১, ১২:০০ এএম

হজের বা ওমরার ইহরাম বেঁধে বাইতুল্লাহ শরিফের দিকে রওয়ানা হতেই উচ্চঃস্বরে কতিপয় কালিমা পাঠ করতে হয়। ইসলামের পরিভাষায় একে তালবিয়া পাঠ বলা হয়। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা:) হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন : রাসুলুল্লাহ (সা.) এই ভাষায় উচ্চঃস্বরে তালবিয়া পাঠ করতেন’ লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা, লাব্বাইকা লা শারীকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্ক, লা শারীকা লাক।’ এই কালিমার প্রথম শব্দ এবং বারবার উচ্চারিত শব্দ হচ্ছে- ‘লাব্বাইকা’। এই শব্দটি আরবি- ‘ইলবাব’ ও ‘তালবিয়াতুন’ হতে গৃহীত। তালবিয়াতুন-এর অর্থ হলো- হে আল্লাহ! আমি তোমারই সমীপে যথাযথভাবে একবারের পর আর একবার বারবার উপস্থিত হয়েছি। আর ইলবাব শব্দের অর্থ বিভিন্নভাবে করা হয়ে থাকে। যথা : (ক) ইলবাব অর্থ কোনো স্থানে দণ্ডায়মান হওয়া। (খ) এর অর্থ হে আল্লাহ! আমি তোমার আনুগত্য ও হুকুম পালনের কাজে একবারের পর আর একবার, বারবার দণ্ডায়মান হয়েছি, দাঁড়িয়েছি। (গ) এর অর্থ- হে আল্লাহ! আমি তোমার আহ্বানে একবারের পর একবার বারবার সাড়া দিয়েছি। আবার কেউ বলেন- এর অর্থ হলো- (ঘ) হে আল্লাহ! আমার সমস্ত সত্তা ও সমস্ত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কেবলমাত্র তোমার দিকেই নিবদ্ধ। এরূপ কালিমার মাধ্যমে তালবিয়া পাঠের মর্ম হলো- এই যে, হজ বা ওমরার ইহরাম বেঁধে যখন একজন লোক কাবাগৃহের দিকে যাত্রা করে, তখন সে মূলত: আল্লাহ তায়ালার আহ্বানে সাড়া দেয়। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে তাঁরাই সমীপে উপস্থিত হয়। কেননা, আল্লাহ তায়ালা তাকে তাঁর ঘরের হজ বা ওমরা করার জন্য আহ্বাান জানিয়েছে। সে এই আহ্বান কবুল করেই কাবাগৃহের দিকে যাত্রা করেছে এবং তালবিয়া পাঠ করে এর স্বীকৃতি প্রদান করছে।

বস্তুত : তালবিয়া কালিমার শব্দগুলো বড়ই প্রেরণাদায়ক, উদ্দীপনাপূর্ণ এবং ঈমান ও বিশ্বাসের তেজবীর্য প্রকাশক। হজ বা ওমরা আদায়কারী এই শব্দগুলো যখন কায়মনে উচ্চারণ করতে থাকে, তখন সে আর সাধারণ মানুষ থাকে না, বরং আল্লাহপাকের দাসত্ব ও আধিপত্যের অথই সাগরে হারিয়ে যায়, বিলীন হয়ে যায়। একইসাথে আল্লাহর নৈকট্য ও কুরবতের অমীয় সুধা পানে তৃপ্ত ও পরিতুষ্ট হয়ে উঠে। ইহজগতের কোনো কিছুই তার এই অভিযাত্রায় প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করতে পারে না। আর পারে না বলেই রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : ‘হজরত জিব্রাঈল (আ:) আমার নিকট আসলেন এবং আমাকে আদেশ করলেন, আমি যেন আমার সঙ্গী সাথীগণকে খুব উচ্চঃস্বরে তালবিয়া পড়তে আদেশ করি।’ (জামেয়ে তিরমিজি)।

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর এই আদেশ বলতে কি বোঝায় তা সম্পর্কে মতভেদ পরিলক্ষিত হয়। যেমন- (ক) বাহ্যত : মনে হয় তালবিয়া পাঠ করা ওয়াজিব। (খ) অধিক সংখ্যক ফিকাহটিদের মতে ইহা মুস্তাহাব। কেননা, তালবিয়া পাঠ করা হজ বা ওমরার নিদর্শন। (গ) একটি মত হলো- ইহা সুন্নাত। ইমাম শাফেয়ী ও হাসান ইবনে হাই, এই মত দিয়েছেন।

(ঘ) ইমাম আবু হানিফা, ইমাম আবু ইউসুফ ও ইমাম মোহাম্মাদ (রাহ:) তালবিয়া পাঠকে ওয়াজিব বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। কেননা, তালবিয়া পাঠ ছাড়া একজন লোক ইহরামকারী হতেই পারে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন