স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক সম্প্রতি ইউরোমানি অ্যাওয়ার্ডস ফর এক্সিলেন্স ২০২১-এ ‘বেস্ট ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বিগত তিন বছরের মধ্যে ব্যাংকটি তৃতীয়বারের মতো এই সম্মানজনক পুরস্কারটি অর্জন করলো। শুধু তাই নয়, এটি তাদের এই বছরে আজ অবধি অর্জিত সপ্তম বৃহৎ আন্তর্জাতিক পুরস্কার। বুধবার (১৪ জুলাই এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
কোভিড-১৯ এর নানা প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে বাংলাদেশের সমৃদ্ধির অব্যাহত যাত্রাকে সমর্থন করার লক্ষ্যে অঙ্গীকারবদ্ধ থাকার জন্য স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বিগত বছরেই মোট ২৫টি মুখ্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করে। এছাড়াও ব্যাংকটি ২০২০ সালে সর্বোচ্চ পরিমাণ সিএসআর-এ অবদান রাখা আন্তর্জাতিক ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে স্বীকৃতি লাভ করে। ২০২১ এর জন্য, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ কোভিড-১৯ এর প্রভাবে তৎক্ষণাৎ সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার লক্ষ্যে ১৩৫ মিলিয়ন টাকা (১.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) অর্থের একটি কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ব্যাংকটি দেশের জন্যে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা এবং তাত্ক্ষণিক সহায়তা নিশ্চিত করবে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করে দেশের দীর্ঘমেয়াদী বৃদ্ধিতে অবদান রাখবে।
নতুন এই অর্জন নিয়ে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বাংলাদেশ-এর সিইও নাসের এজাজ বিজয় বলেন, “বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেবা প্রদানকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা সবসময় বিশ্বাস করি, আমাদের জাতির জন্য যা কিছু মঙ্গলজনক, তা দীর্ঘমেয়াদে ব্যাংকের পক্ষেও শুভবার্তা বয়ে আনবে। এই বিশ্বাসের উপর নির্ভর করেই আমরা ব্যাংকের সকল পরিকল্পনা গ্রহণ করে থাকি। আজকের প্রাপ্ত এই অ্যাওয়ার্ডটি আমাদের এই বিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করেছে। এই অর্জনকে সম্ভবপর করে দেওয়ার জন্য আমি আমাদের গ্রাহক, রেগুলেটর এবং বৃহৎ ইকোসিস্টেমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-এর কোভিড-১৯ সংক্রান্ত গৃহীত উদ্যোগসমূহ অ্যাওয়ার্ড কমিটির এক অনন্য বিবেচ্য উপাদান ছিল। ছুটি এবং প্রণোদনা প্যাকেজের নীতি হওয়ারও আগ থেকে ব্যাংকটি তার ক্লায়েন্টদের অর্থ পরিশোধের সময়সূচী নিয়ে উল্ল্যেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে। ব্যাংকটি লোন এক্সটেনশন-এর সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে তাদের ক্লায়েন্টদের বেতন ও মজুরী পরিশোধের সুবিধা করে দেয়। এছাড়াও ব্যাংকটি ৬৩,০০০ কর্মীর জন্য ডিজিটাল ওয়েজ পেমেন্ট-এর প্রচলন করে এবং এই অনিশ্চয়ক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ব্যবসায়ের সুবিধার্থে ইউনিক ফাইন্যান্সিং প্রোগ্রাম চালু করে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে জনসাধারণের তাৎক্ষণিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্যে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ডেভেলপমেন্ট সেক্টর পার্টনারসদের সাথে নিয়োজিত আছে। ব্যাংকটি করোনা আক্রান্ত মানুষদের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান এবং প্রথমসারীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে দেশের এই সংকটময় পরিস্থিতিতেও পাশে রয়েছে। ব্যাংকটি ইউসিইপি বাংলাদেশ-এর সাথে এক যোগে কাজ করে যাচ্ছে। যার মাধ্যমে দেশের সেই সব মানুষের দক্ষতা বিকাশ এবং কর্মশক্তি পুনর্জীবিত করার কাজ করা হচ্ছে যারা এই মহামারীর আঘাতে জীবিকা হারিয়ে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশে ১১৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে নিরবচ্ছিন্ন উপস্থিতি বজায় রাখা স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, দেশের একমাত্র বহুজাতিক ইউনিভার্সাল ব্যাংক যা তাদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক এবং পণ্য কভারেজকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয়ভাবে দৃঢ় উপস্থিতি নিশ্চিত করে আসছে। ব্যাংকটি বাংলাদেশের অগ্রগতি ত্বরান্বিত লক্ষ্যে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পরিবহন ও নগর উন্নয়নে বৃহৎ বিনিয়োগকে সহজতর করে এক অঙ্গীকারবদ্ধ অংশীদারের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। গত বছর স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক রফতানি এবং আমদানিতে অর্থায়নের একটি বড় অংশ হিসাবে ভূমিকা পালন করে। পাশাপাশি, বৈদেশিক ব্যাংক কর্তৃক পাওয়ার জেনারেশন ফাইন্যান্সিং এবং এসএমই লেন্ডিং-এ অবদান রাখে। ঠিক একই সময়ে কার্ড স্পেন্ড, ধারাবাহিকভাবে বেড়ে উঠা ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবহারকারী এবং প্রচুর উদ্ভাবনী পণ্য চালু করার মধ্যদিয়ে ব্যাংকটি রিটেইল ফাইন্যান্স ব্যবস্থার শীর্ষস্থানীয় অধিকারী হয়।
ইউরোমানি ব্যবসায় ও ফাইন্যান্স সংক্রান্ত একটি ইংরেজি ভাষার মাসিক ম্যাগাজিন। এটি সর্বপ্রথম ১৯৬৯ সালে প্রকাশিত হয়। ম্যাগাজিনটি ইউরোমানি ইনস্টিটিউশনাল ইনভেস্টর পিএলসি এর একটি ফ্ল্যাগশিপ। ইউরোমানি বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকসমূহকে স্বীকৃতি প্রদানের লক্ষ্যে প্রতি বছর একটি অ্যাওয়ার্ড ইভেন্টের আয়োজন করে এবং ইউরোমানি এক্সিলেন্সের জন্য ইউরোমানি অ্যাওয়ার্ডের খবর প্রকাশ করে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন