চোরাই কাভার্ডভ্যান ও প্লাস্টিক পণ্য তৈরির কাঁচামালসহ সংঘবদ্ধ চোরচক্রের ২ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।
এসময় তাদের কাছ থেকে ১টি কাভার্ড ভ্যান ও সউদীআরব থেকে আমদানিকৃত ৩৩৪ বস্তা (প্রতি বস্তায় ২৫ কেজি করে মোট ৮ হাজার ৩৫০ কেজি) প্লাস্টিক পণ্য তৈরির কাঁচামাল উদ্ধার করা হয়। গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আযোজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গোয়েন্দা সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) মো. শরীফুল ইসলাম। গ্র্রেফতারকৃতরা হলো- মো. লিটন ও বেলাল হোসেন শিবলু। একটি মামলার প্রেক্ষিতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় অভিযান করে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রওয়ানা দেয়া একটি কাভার্ডভ্যান ছিনতাই হয়েছে বলে আমরা তথ্য পাই। ওই তথ্যের ভিত্তিতে যাত্রাবাড়ী ধলপুর থেকে কাভার্ডভ্যানসহ দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, ছিনতাই করা কাভার্ডভ্যানে ছিল প্লাস্টিকের দানা, যা সউদীআরব থেকে আমদানিকৃত। গুড লাক ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি কাভার্ডভ্যানে করে এসব ঢাকা ও গাজীপুরে পাঠিয়ে থাকে। গ্র্রেফতারদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের সেনবাগ থেকে ৩৩৪ বস্তা প্লাস্টিক পণ্য তৈরির কাঁচামাল জব্দ করা হয়েছে। যার মূল্য প্রায় ২০ লাখ টাকা। তিনি আরো বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার দুজন জানান, অনেক দিন ধরেই তারা কারখানায় ব্যবহৃত কাঁচামাল ও উৎপাদিত মালমালসহ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানসহ চুরি করতেন। তারা এই কাভার্ডভ্যানটি চুরির জন্য দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা করেছিলেন। এ চক্রের একজন দক্ষ ড্রাইভার রয়েছে। তিনি নিজের আসল পরিচয় গোপন করে ট্রাক বা কাভার্ডভ্যানের হেলপার হিসেবে কাজ নেন।
পরবর্তী সময়ে সুযোগ বুঝে মালামালসহ গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যান। চুরির কাজের সময় তিনি ১টি নতুন মোবাইল ও সিম ব্যবহার করতেন, যাতে চুরি সম্পন্ন করার পরে কেউ তাকে শনাক্ত করতে না পারেন। মোবাইলটি তিনি শুধুমাত্র চোরচক্রের সদস্যদের সাথে যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করতেন। তারা চুরি করা মালামাল গোপন জায়গায় লুকিয়ে রেখে বিক্রি করতেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।
কাভার্ডভ্যান মালিক বা কাঁচামাল সরবরাহকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি কিংবা কাভার্ডভ্যান মালিকদের উচিত চালক ও হেলপারদের পরিচয়, জাতীয় পরিচয়পত্র সংরক্ষণ করা। যাতে পরবর্তীতে কোনো অপরাধ সংঘঠিত হলে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়।
কাভার্ডভ্যানে জিপিএস ট্রাকিং ডিভাইস ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, জিপিএস ট্রাকিং ডিভাইস ব্যবহার করলে সহজে গাড়ীর অবস্থান সনাক্ত করা সম্ভব। আর এধরণের চুরি বা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলে কেউ লুকাবেন না বা গোপনে নেগোসিয়েশন করবেন না।
তিনি আরো বলেন, চুরির মালামাল চক্রের সদস্যরা গোপন জায়গাতে নিয়ে রাখতেন। পরে তা বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নিতেন। গ্রেফতার আসামীদের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেফতারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন