খুলনাঞ্চলে শসার প্রধান মোকাম বাগেরহাটের চিতলমারীতে হঠাৎ দরপতন হওয়ায় কৃষকরা বিপাকে পড়েছে। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি শসা ৩০ থেকে ৪০ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে তা ৫ টাকায় নেমেছে।
কৃষক সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ জুলাই প্রতি কেজি শসার দাম ছিল ৩৫ টাকা। প্রতি মণ ১ হাজার ৪০০ টাকা। গতকাল চিতলমারী সদর বাজার আড়তে প্রতি কেজি শসা বিক্রি হয়েছে ৫ থেকে ৬ টাকা দরে। যার প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ২০০-২৪০ টাকায়। মাত্র ৭-৮ দিনের ব্যবধানে এ দরপতনে চাষিরা হতাশ হয়ে পড়েছে। সবজি চাষিদের দাবি, সবাই ব্যস্ত কৃষক ঠকানোর নেশায়। এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে আর এ অঞ্চলের মানুষ সবজির চাষ করবে না।
উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় মোট ৩ হাজার ২০৩ একর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। এরমধ্যে এক হাজার ৫৫৩ একর জমিতে শসা ও ৫০৮ একর জমিতে করলা চাষ হয়েছে। বাকি এক হাজার ১৪২ একর জমিতে পুঁইশাক, লাউ, ঢেঁড়স, ডাটা, চিচিংগা, পানিকচু, চালকুমড়া, মিষ্টিকুমড়া ও বেগুনসহ বিভিন্ন সবজির চাষ হয়েছে। কম সময়ে অল্প পুঁজিতে বেশি লাভ হওয়ায় এ উপজেলার চাষিরা শসা চাষে বেশি ঝুঁকেছেন। তাদের কঠোর পরিশ্রমে উৎপাদিত শসা বাজারজাত শুরু হয়েছে। এ উপজেলার উৎপাদিত শসা ও করলা ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও কুমিল্লা, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষের চাহিদা মেটায়।
শসা বিক্রি করতে আসা কয়েকজন চাষি জানান, করোনার ক্রান্তিকালকে উপেক্ষা করেও তারা ব্যাপক সবজির চাষ করেছেন। বহুকষ্টে উৎপাদিত শসাসহ বিভিন্ন সবজি মোকামে (আড়তে) আসতে শুরু করেছে। কিন্তু এখানে শসার দাম একেবারে কমে গেছে। তাই ব্যাংক, এনজিও ও সুদে কারবারিদের দেনায় জর্জরিত সবজি চাষিরা ফসলের হঠাৎ এ দরপতনে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। দাম কমাটা ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট কিনা তা তদারকি করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।
চিতলমারী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা অসীম দাশ বলেন, আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় এ বছর শসার এ উপজেলায় শসার বাম্পার ফলন হয়েছে। শহরের মানুষ গ্রামে আসায় দাম কমেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে হয়তো চাষিরা শসার ন্যায্যমূল্য ফিরে পাবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন