বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

ফুলপুরে যৌতুকের জন্য মাদকসেবী স্বামীর নির্যাতনে গৃহবধুর মৃত্যুর অভিযোগ

ফুলপুর (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৬ জুলাই, ২০২১, ৪:৫৯ পিএম

ময়মনসিংহের ফুলপুরে যৌতুকের বলি হয়েছেন নুসরাত জাহান মীম (২০) নামে এক গৃহবধূ।মায়ের বুকের দুধের জন্য কাঁদছে নিহত মীমের ৬ মাসের কন্যা শিশু সিয়া। যৌতুকের জন্য মাদকসেবী স্বামী ইকবাল হোসেন সবুজের নির্যাতনের কারণে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত সাড়ে ৯ টায় তার মৃত্যু হয়। মীম ফুলপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ রোড সংলগ্ন পৌরসভার গোদারিয়া গ্রামের মৃত বাবুল ড্রাইভারের মেয়ে।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ৪ বছর আগে আমুয়াকান্দা এলাকার মৃত আদম আলীর ছেলে ইকবাল হোসেন সবুজের সাথে প্রেমের সম্পর্ক হয় নুশরাত জাহান মীমের।পরে ২০১৮ সালে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর ব্যবসার কথা বলে প্রথমে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক নেয়। এরপর আবারও ১০ হাজার টাকা যৌতুকের জন্য মীমকে চাপ দেয় সবুজ। সিয়া নামে ছয় মাসের এক কন্যা সন্তান রয়েছে মীমের। প্রায় এক বছর যাবৎ যৌতুক সহ বিভিন্ন জিনিসের বায়না করে মারপিট করা হতো মীমকে। কিন্তু প্রেমের বিয়ে বলে মাকেও কিছু না জানিয়ে সব নীরবে সহ্য করেন মীম। অবশেষে সপ্তাহখানেক আগে পাষণ্ড স্বামী সবুজ যৌতুকের জন্যে মীমকে পিঠা বানানোর বেলান দিয়ে বেদম মারপিট করে। এক পর্যায়ে বাচ্চার ন্যাকড়া গলায় পেঁচিয়ে তাকে টানাহেঁচড়া করে ও দেয়ালের সঙ্গে লাগিয়ে মাথায় আঘাত করে। পরে মারাত্মক আহত অবস্থায় মীমকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় মীম মারা যায়। কোতোয়ালী থানা পুলিশ মীমের লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়নাতদন্ত শেষ করার পর পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করেন। পরে রবিবার রাতেই পৌরসভার গোদারিয়া এলাকায় বাবার বাড়ীতে মীমের লাশ দাফন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নিহতের মা সুরাইয়া আক্তার বাদী হয়ে রবিবার রাতে ফুলপুর থানায় ইকবাল হোসেন সবুজ ও তার মা সহ ৩ জনকে নামে ও অজ্ঞাত আরো ৩ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকে পালিয়েছে মীমের স্বামীসহ পরিবারের লোকজন। পুলিশ আসামিদের ধরতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

মীমের মা সুরাইয়া বেগমের কান্না ও আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে উঠে। কান্নারত অবস্থায় তিনি বলেন, কয়েক দফা মেয়ের সুখের জন্য কয়েক লক্ষ টাকার মালামাল ও নগদ অর্থ দেওয়া হয় যৌতুক লোভী পরিবারকে। এরপরও মেয়ের ওপর সবসময় শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার আর নির্যাতন চালানো হতো। ভয় ও মানসন্মানের জন্য মেয়ে মীম তা প্রকাশ করতেন না। আমার এতিম মেয়ে। স্বামী মারা যাওয়ার পর ছেলে ও মেয়েকে নিয়েই বেঁচে আছি। বুকের ধন ক্যাইড়া নিলো ওরা। আমি শুধু আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই। আমি আর কিছুই চাই না।

ফুলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন