গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তার সঙ্গে প্রেম ও চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্য পদ হারানো নিয়ে আজও দিনভর সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার শীর্ষে ছিল আলোচিত চলচ্চিত্র নায়িকা পরীমনি। সাম্প্রতিক বোটক্লাব কাণ্ডে দায়েরকৃত মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে পরীমনির প্রেম নিয়ে তোলপাড় চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এদিকে একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে পরীমনির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। শনিবার তার সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে সমিতি। এনিয়েও ফেসবুকে নানা মন্তব্য করেছেন দেশের সচেতন নাগরিক সমাজ।
জানা যায়, তদন্ত করতে গিয়ে চলচ্চিত্র নায়িকা পরীমণির সঙ্গে পরিচয় হয় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার গোলাম সাকলায়েন শিথিলের। সেই সূত্র ধরে গড়ে উঠেছিল প্রেমের সম্পর্ক। সর্বশেষ পরীমনি সেই পুলিশ কর্মকর্তার বাসায় এসে অবস্থান করেন প্রায় ১৮ ঘণ্টা। পরীমনি গ্রেফতারের পর অকপটে স্বীকার করেছেন সবকিছু। বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় চলছে পুলিশেও।
গোলাম সাকলায়েন শিথিল ও পরীমনির সম্পর্ক নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ ও একটি গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করেছে বলে জানা যায়। পুলিশ কর্মকর্তারা পরীমনির কাছ থেকেও জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন। এনিয়ে দিনভর তোলপাড় চলে ফেসবুকে।
জৈষ্ঠ্য সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন, ‘‘চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির বক্তব্য হতাশাজনক। কোন ব্যক্তির ব্যক্তিগত অপকর্মের দায় সংগঠন নিতে পারে না— এ পর্যন্ত ঠিক আছে। তারা বার বার বলেছে, শিল্পীদের স্বার্থরক্ষা তাদের মূল দায়িত্ব। তাহলে শিল্পীদেরকে যারা পঙ্কিলতার কর্দমাক্ত নিক্ষেপ করেছে, ব্যক্তিগত লালসা চরিতার্থ করতে যারা এই শিল্পাঙ্গনকে কলুষিত করছে, সৃজনশীল শিল্পের টানে রুপালি জগতে আসা মেয়েদেরকে যে সমস্ত প্রোমোটার নানা প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে ব্যক্তিগত ভোগ, লিপ্সা চরিতার্থের পথে টেনে এনেছে, তাদের বিচার অবশ্যই দাবি করা উচিত ছিল শিল্পী সমিতির। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্রিফিংয়ে, মিডিয়ার রিপোর্টে কেবলমাত্র শিল্পীদের নাম উচ্চারিত হচ্ছে, কিন্তু যারা গাড়ি-বাড়ি দিয়েছে, বিদেশে লেজার ট্রিপে নিয়ে গেছে, লেট নাইট পার্টি তে বিনোদিত হয়েছে, তাদের নাম না বলে কেবল শিল্পীদের নামে বলা হচ্ছে কেন এই প্রশ্নটিই তোলাও শিল্পী সমিতির জন্য অত্যন্ত যৌক্তিক ছিল। তাহলে শিল্পীদের স্বার্থ রক্ষায় তাদের দাবি গ্রহণযোগ্য হতো। গণমাধ্যমের রিপোর্টে দেখেছি পরীমনি শিল্পী সমিতিতে খুব বেশি পাত্তা দিত না ফলে এই সমিতির নেতাদের তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছিল। সংবাদ সম্মেলন, এবং আগে-পরে সমিতির নেতৃবৃন্দের বক্তব্যে এর প্রতিফলন খুঁজে পেতে পারেন অনেকে।’’
পরীমনির আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদেরও গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে কামাল হোসাইন লিখেছেন, ‘‘রূপ-যৌবন দেখিয়ে,বিভিন্নজনের কাছে শুয়ে, মাদক ব্যবসা করে একটু নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে ছিলো কিন্তু এখন তার দাঁড়ানো পা ভেঙ্গে দেয়া হচ্ছে। পাপ বাপরেও ছাড়েনা, নায়িকা হওয়ার জন্য প্রথম স্বামীসহ তিন তিনটি স্বামী ত্যাগ করেছে। শিল্প-সংস্কৃতির নামে মাদক ব্যবসা, যৌন ব্যবসা, রূপ-যৌবনের ব্যবসা,যাকে এখন নাকি ডিজিটাল পতিতা বলা হয়,পতিতাবৃত্তি করে ন্যাকামি কান্নার ব্যবসা বন্ধ হোক। এদের জন্য আজ আমাদের ঐতিহ্যবাহী শিল্প-সংস্কৃতি ধ্বংসের পথে, বাংলা চলচ্চিত্র ধ্বংসের পথে, জানেনা অভিনয় অথচ পরিচালক, প্রযোজকদের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে হয়েছে নায়িকা। কিন্তু পরিমণির শয্যাসঙ্গী রাঘববোয়ালদের গ্রেফতার করবে কে?এইসব তথাকথিত পরীমনিদেরকে আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদেরকে ও গ্রেফতার করে জনসম্মুখে দেখানো হোক।এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক।’’
তদন্ত কর্মকর্তার সাথে প্রেমে জড়ানো নিয়ে সাইদুল আখন্দ লিখেছেন, ‘‘এটাই পরিমনির পুঁজি, এরা শরীর বিক্রি করে ইনকাম করে, এরা শরীর বিক্রি করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়, এরা শরীর বিক্রি করে যশ খ্যাতি সম্মান সংগ্রহ করে, এরা শরীরকে কাজে লাগিয়ে আইন-আদালত পুলিশকে নিজের আয়ত্তে আনতে চাইবে এটাই স্বাভাবিক। .. ব্যাংক বলে কথা, এই ব্যাংক তো অফুরন্ত।’’
ক্ষোভ জানিয়ে রাকিব শিকদার লিখেছেন, ‘‘পরীমনি একটা নষ্ট মেয়ে দেশের ভাবমূর্তি একদম নষ্ট করে দিয়েছে নোংরা কর্মকান্ডকে ঘৃনা জানাই, ওর সাথে যে কয়টি সম্পৃক্ত ছিলো সব কয়টি গ্রেপ্তার করে কঠিন শাস্তির দাবি জানাচ্ছি পুলিশ প্রশাসন সহ বিচার বিভাগকে।’’
সদস্যপদ স্থগিত নিয়ে রনি শেখ লিখেছেন, ‘‘এখন কেন সদস্য পদ বাতিল করবেন আগেতো সবি জানতেন, এখন কেন দূর সময়ে দূর ব্যবহার করবেন খুজ করেন চলচ্চিত্র অনেক আছে এরকম আরো খারাপ কাজে লিপ্ত আর এরা নিজে থেকে খারাপ হয় না তাদের দুর্বলতার সুযোগ আপনারা কাজে লাগান আগে শরীর পরে তাদের চান্সদেন অভিনয়ে।’’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন