নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, গত ৭ তারিখ থেকে সরকার ৩ দিনের গণটিকা কর্মসূচি শুরু করেছে। কিন্তু এই ৩ দিনে গণটিকা কর্মসূচি গণ প্রতারণায় পরিণত হয়েছে। এটি করোনা মোকাবেলায় সরকারের ব্যর্থতা আড়াল করার চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। আজ সোমবার দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাকিব আনোয়ার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে মান্না আরও বলেন, সরকার জনগণের জীবন নিয়ে তামাশা করছে।
তিনি বলেন, সরকারি হিসাব মতে যেখানে ২৬ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন প্রয়োজন সেখানে তারা সোয়া কোটি ডোজ টিকা নিয়ে কর্মসূচির নামের আগে ‘গণ’ জুড়ে দিয়েছে। 'গণ' শব্দের অর্থই বদলে দিয়েছে সরকার। গণটিকার নামে নতুন এক নাটিকার অবতারণা করেছে তারা। প্রতিদিন এসব টিকা কেন্দ্রে হাজার হাজার মানুষ এসে লাইনে দাঁড়াচ্ছে। কিন্তু কয়েক শ টিকা দেবার পর বাকিদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এর মধ্যেও আবার আওয়ামী কোটা আছে, ছাত্রলীগ–যুবলীগ কোটা আছে। এই কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার রীতিমত সার্কাস করেছে। আর এতে ভোগান্তিতে পড়েছে টিকা নিতে আগ্রহী সাধারণ জনগণ।
ডাকসুর সাবেক এই দুইবারের ভিপি বলেন, সরকার বলেছে এই মাসের শেষে ১ কোটি ডোজ টিকা আসবে। এই টিকা তো এখন যারা প্রথম ডোজ পাচ্ছেন তাদের দ্বিতীয় ডোজ দিতেই শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু তারপর কি সেই ব্যাপারে সরকারের কোনো সুস্পষ্ট বক্তব্য নেই। তারা বলছে দেড় কোটি ডোজের টাকা চীনকে অ্যাডভান্স করা হয়েছে, রাশিয়ার সাথে কথা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে সরকারের উদ্দেশ্যে মান্না বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ মিলিয়ে মোট ছাত্র আছে প্রায় ৩২ লাখ। শিক্ষক এবং স্টাফ মিলিয়ে সংখ্যাটা ৩৫ লাখ হবে। আপনারা তো দিনে ৩০ লাখ টিকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সকল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়ে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে টিকা কেন্দ্র করে একদিনে না পারেন, দুইদিনে এই ৩৫ লাখ টিকা দিয়ে দেন।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, আমি এই মুহূর্তে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে, শিক্ষার্থীদের টিকা দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার জোর দাবি জানাচ্ছি। আর কবে নাগাদ অ্যাডভান্স করা দেড় কোটি টিকা আসবে, কত টাকায় চুক্তি হয়েছে, কত টাকা পরিশোধ করা হয়েছে - সেসব তথ্য সুস্পষ্টভাবে জনগণকে জানাতে হবে। বাকীদের সাথে কি কথা হয়েছে, কোনো চুক্তি হয়েছে কিনা, সেসব প্রতিষ্ঠান/দেশ থেকে কত টাকায় ভ্যাকসিন কেনা হচ্ছে সেসব তথ্যও জানাতে হবে। সরকার জনগণের টাকায় ভ্যাকসিন কিনবে আর জনগণ সে সম্পর্কে কিছুই জানতে পারবে না, সেটা তো হতে পারে না। নিজেদের অর্থনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য একবার এক চুক্তি করে দেশের মানুষের জীবনকে, দেশের শিক্ষা ও অর্থনীতিকে এতগুলো দিনের জন্য অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলেছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন