শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

সাভারে মালিকানা দ্ব›েদ্ব ৬ টুকরো প্রিন্সিপাল

ঘটনাস্থল সাভার : আঙিনা খুঁড়ে লাশের ৫ টুকরো উদ্ধার : গ্রেফতার ৩

স্টাফ রিপোর্টার, সাভার থেকে | প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০২১, ১২:০১ এএম

মালিকানা ও কলেজের লভ্যাংশ নিয়ে দ্ব›েদ্বর জের ধরে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয় কলেজ প্রিন্সিপাল মিন্টু চন্দ্র বর্মনকে। গতকাল আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকায় রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের আঙিনার মাটি খুড়ে দেহের ৫ খন্ড ও বিচ্ছিন্ন মাথা রাজধানীর আশকোনার একটি ডোবা থেকে উদ্ধার করে র‌্যাব।
এর আগে গত ১৩ জুলাই আশুলিয়ার জামগড়া সংলগ্ন বেরন এলাকার রূপায়ন মাঠের নিজ বাসা স্বপ্ন নিবাস থেকেই নিখোঁজ হয় মিন্টু চন্দ্র বর্মণ। নিখোঁজের পর থেকেই তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটি বন্ধ পায় স্বজনরা। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে অবশেষে ২২ জুলাই আশুলিয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন মিন্টুর ছোট ভাই দীপক চন্দ্র বর্মণ।
এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় তিনজনকে। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী র‌্যাব লাশের টুকরো উদ্ধার করে। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- রবিউল ইসলাম, মোতালেব ও বাদশা। রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক এবং পার্টনার মালিক তারা। নিহত মিন্টু চন্দ্র বর্মন কলেজের প্রিন্সিপাল ও পার্টনার মালিক। সে লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের বাড়াইপাড়া গ্রামের শরত বর্মনের ছেলে।
র‌্যাব-৪ এর কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান বলেন, গত ২২ জুলাই আশুলিয়া থানায় ওই শিক্ষক নিখোঁজের জিডি করেন তার পরিবার। ওই ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবও তদন্ত শুরু করে। পরে হত্যাকারী মূলহোতাসহ তিনজন গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নরসিংহপুর রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের আঙিনার মাটি খুড়ে মিন্টু চন্দ্র বর্মনের দেহের ৫ খন্ড উদ্ধার করা হয়।
অভিযান শেষে কলেজের সামনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের বলেন, প্রথমে ৭ জুলাই মিন্টুকে হত্যার পরিকল্পনা করে গ্রেফতার ৩ জন। পরে ১৩ জুলাই স্কুলটিতে কোচিং পরবর্তী সময়ে ১০৬ নম্বর কক্ষে তাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে হত্যাকান্ড ঘটানো হয়। মিন্টু বর্মণের সুনাম ও খুব ভালো শিক্ষক হওয়ায় পেশাগত হিংসা শুরু করেন গ্রেফতারকৃতরা।
প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ নিয়েও তাদের মধ্যে মনোমালিন্য ছিল। এরই জের ধরে মিন্টু চন্দ্র বর্মণকে প্রথমে পার্টনার মালিক বাদশা হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে। পরে রবিউল ও বাদশা মিলে তাকে হত্যা করে স্কুলটির ১০৬ নম্বর কক্ষে ৬ টুকরো করে। এরপর মাথা রাজধানীর আশকোনার একটি ডোবায় ফেলে দেয়। পাশাপাশি ৫ টুকরো স্কুলের আঙিনায় পুতে রাখে। এরপর থেকে রবিউল পলাতক ছিল।
গত রোববার মধ্যরাতে রবিউলকে আব্দুল্লাহপুর থেকে, বাদশাকে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থেকে আর মোতালেবকে আশকোনা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে রবিউলের দেওয়া তথ্যমতে স্কুলের আঙিনা থেকে মিন্টুর শরীরের ৫টি খন্ড উদ্ধার করা হয়।
নিহতের ছোট ভাই দীপক চন্দ্র বর্মন জানান, তারা সাত বছর ধরে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় বসবাস করতেন। তিনি সেখানকার আমিন মডেল টাউন স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষকতা করেছেন। দুই বছর আগে মিন্টু চন্দ্র বর্মণসহ চারজন মিলে জামগড়া এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে সাভার রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। যার প্রিন্সিপালের দায়িত্বে ছিলো মিন্টু। কিন্তু হঠাৎ ভাই উধাও হয়ে যায়। আজ জানলাম তার পার্টনাররাই তাকে হত্যা করেছে। তিনি হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন