রাঙামাটিতে পৃথক অভিযানে পার্বত্য চুক্তি বিরোধী উপজাতীয়দের সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফের তিন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে অস্ত্রসহ আটক করেছে সেনাবাহিনী। জেলার দুই উপজেলা বাঘাইছড়ি ও নানিয়ারচরে অভিযান পরিচালনা করে তিন সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে বলে দায়িত্বশীল সেনাসূত্র নিশ্চিত করেছে। আটককৃতরা হলো রূপায়ন চাকমা (৩৮), ওমর চাকমা (৩৪) ও রকেট চাকমা (২২)।
জানা যায়, গতকাল শুক্রবার ভোর রাতে করেংগাতলী আর্মি ক্যাম্প থেকে ৪.৫ কি.মি. উত্তর দিকে উত্তর বাংগালতলী থেকে ওমর চাকমা (৩৪) ও রকেট চাকমা (২২) নামে ২ বিচ্ছিন্নতাবাদী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে আটক করেছে সেনা অপারেশন দল। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বাঘাইহাট জোন এই বিশেষ অপারেশনটি পরিচালনা করে। ওমর চাকমা (৩৪) এবং রকেট চাকমা (২২) দীর্ঘদিন ধরে করেংগাতলী এলাকায় চাঁদাবাজি, হত্যা ও ধর্ষণের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত ছিল। ওমর চাকমা ও রকেট চাকমাকে গ্রেফতার করার পর তল্লাশিপূর্বক তাদের কাছ থেকে একটি এলজি পিস্তল, দুই রাউন্ড অ্যামোনিশন, চাঁদা সংগ্রহের রশিদ বই, মোবাইল ও ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি অভিযান শেষে উক্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদেরকে বাঘাইহাট সেনা ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয় এবং তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
অপরদিকে, নানিয়ারচরে নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযানে রূপায়ণ চাকমা (৩৮) নামে এক ইউপিডিএফ (প্রসিত) গ্রæপের সক্রিয় কর্মীকে অস্ত্র ও সরঞ্জামাদিসহ আটক করা হয়েছে।
নানিয়ারচর জোনের সুদক্ষ দাশের তথ্যসূত্রে জানা যায়, ১৩ আগস্ট রাত প্রায় আড়াইটার দিকে গোপন তথ্যর ভিত্তিতে কুতুকছড়ির হাজাছড়ি এলাকায় সেনাবাহিনী বিশেষ অপারেশন চালিয়ে প্রসিত খীসার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফের সক্রিয় সন্ত্রাসী রূপায়ণ তালুকদার (চাকমা)কে দুইটি জাতীয় পরিচয়পত্রসহ ১টি বিদেশি তৈরি (থ্রিনটথ্রি) রাইফেল, ৫ রাউন্ড অ্যামুনেশন, ৩টি মোবাইল ফোন, ২টি চাঁদা আদায়ের রশিদসহ আটক করা হয়। পরে তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নানিয়ারচর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
নিরাপত্তাবাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, পাহাড়ে আবারো জোরেশোরে সশস্ত্র তৎপরতা শুরু করেছে এ অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী ও পার্বত্য চুক্তি বিরোধী উপজাতীয় আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো। নিজেদের মধ্যে আধিপত্যের লড়াইসহ পার্বত্যাঞ্চল থেকে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজির লক্ষ্যে নানা ধরণের দেশি-বিদেশি অস্ত্র সংগ্রহ থেকে শুরু করে নানা ধরণের সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রহের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা।
সাম্প্রতিক সময়ে দুর্গম পাহাড়ে এই বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীরা একত্র হয়ে সশস্ত্র তৎপরতা বৃদ্ধি করলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা নিরাপত্তা বাহিনীকে বিষয়টি অবহিত করলে সেনাক্যাম্প থেকে ঘটনার সত্যতা পেয়ে অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন