মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহিলা

রিও অলিম্পিকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিজয়ী কিশোরী

প্রকাশের সময় : ৪ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মধ্যম আয় ও সীমিত সম্পদের দেশ বাংলাদেশ। মেধা মননে, শিল্প-সংস্কৃতিতে, শিক্ষা যোগ্যতায় বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে একটা সম্ভাবনার দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কয়েকজন নারী। বিভিন্ন প্রতিযোগিতার ভেতর দিয়ে বাংলাদেশকে তুলে ধরেছে বিশ্ব দরবারে। প্রতিযোগিতায় তাদের ধারাবাহিক সাফল্য দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। এদের মধ্যেÑ টানা ১৭ দিন বিশ্ববাসীকে মাতিয়ে রেখে ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থকে’ বিদায় জানিয়েছে ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামে স্বাগতিক ব্রাজিল। বিশ্বের দুইশর বেশি দেশের অ্যাথলেটদের অংশগ্রহণে জমজমাট আয়োজন ছিল সেখানে। পুরুষের পাশাপাশি মেয়েরাও চমক দেখিয়েছে নানা কলাকৌশলের ক্রীড়ানৈপুণ্যের। একের পর এক স্বর্ণ জিতে নজর কেড়েছে বিশ্বের, রয়েছে বাংলাদেশি মেয়ের নামও। অলিম্পিকে কখনও কোনো পদক জিততে পারেনি বাংলাদেশ। তবে রিওর আসরে একটি সোনার পদকের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের নামও। ভারসাম্যের অসামান্য নিদর্শন আর দুর্দান্ত শারীরিক কলাকৌশল দেখিয়ে জেতা রিদমিক জিমন্যাস্টিক্সের সোনার পদকটি বাংলাদেশেরও বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশি বাবা আর রুশ মার ঘরে জন্ম নেওয়া মার্গারিটা মামুন। রিটা রিদমিক জিমন্যাস্টিকসে অলিম্পিক শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন। মার্গারিটার জন্ম মস্কোতে। বাবা বাংলাদেশি, মা রাশিয়ান। রিদমিক জিমন্যাস্টিকসে রিটার আসা তার মাকে দেখে। জুনিয়র লেভেল থেকেই বহু আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলছেন মার্গারিটা। এই লেভেলে কিছু দিন তিনি খেলেছেন বাংলাদেশের হয়েও। সিনিয়র লেভেলে ফিরে যান রাশিয়ায়। অলিম্পিকের অল অ্যারাউন্ড ইভেন্টে মার্গারিটা মামুন ৭৬ দশমিক ৪৮৩ পয়েন্ট পেয়ে স্বর্ণ জয় করেন। রাশিয়ার রিদমিক জিমন্যাস্ট দলের প্রধান কোচ বাংলাদেশি কন্যা রিটার নাম দিয়েছেন ‘দ্য বেঙ্গল টাইগার’। ‘বাংলার বাঘিনী’ ডাক নামটা আছে আন্তর্জাতিক জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে থাকা রিটার পরিচিতিতেও।
বাংলাদেশি কন্যা প্রিয়াঙ্কা মিস ওয়ার্ল্ড জাপান-২০১৬
মিস ওয়ার্ল্ড জাপান-২০১৬ সুন্দরী প্রতিযোগিতার ‘মিস জাপান’ খেতাব অর্জন করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কন্যা প্রিয়াঙ্কা ইউসিকা ঘোষ। গতবারের চ্যাম্পিয়ন এরিয়ানা মিয়ামুটোকে টপকে মিস জাপানের মুকুট পরেন ২২ বছর বয়সী প্রিয়াঙ্কা। গত ৫ সেপ্টেম্বর টোকিও শহরে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। আগামী ডিসেম্বর মাসে ওয়াশিংটনে মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন তিনি। প্রিয়াঙ্কা ইউসিকা ঘোষের পূর্ব পুরুষের বাড়ি বাংলাদেশের ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার মালিকান্দা গ্রামে। তিনি সম্ভ্রান্ত ঘোষ পরিবারের কন্যা। প্রিয়াঙ্কার জন্ম জাপানে হলেও তার বাবা অরুণ ঘোষের জন্ম ও বেড়ে ওঠা দোহারের মালিকান্দা গ্রামে। পরিবারের দেওয়া তথ্য মতে, ১৯৮৫ সালের ২১ আগস্ট তার বাবা অরুণ ঘোষ বাংলাদেশ থেকে জাপানে চলে যান। সেখানে গিয়ে কয়েক বছর পর জাপানি নারী নাউকোর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর পার্মানেন্ট রেসিডেন্সশিপ পেয়ে সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯৯৪ সালের ২০ জানুয়ারি অরুণ-নাউকো দম্পতির ঘর আলোকিত করে জন্ম নেয় একটি কন্যাসন্তান। পরিবারিক পদবির সঙ্গে মিলিয়ে তার নাম রাখা হয় প্রিয়াঙ্কা ইউসিকা ঘোষ। প্রিয়াঙ্কার শিক্ষাজীবনের কিছু সময় কেটেছে ভারতে। পশ্চিমবঙ্গের সুধীর মেমোরিয়াল স্কুলে স্ট্যান্ডার্ড টু ও থ্রি ক্লাসে দুই বছর পড়েছে। এরপর আমেরিকায় পড়াশোনা শেষ করে জাপানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে সে। জাপানে ফিরে মডেলিংয়ের সঙ্গে যুক্ত আছে প্রিয়াংকা। সেই ধারাবাহিকতায় এ বছর সে মিস জাপান নির্বাচিত হয়েছে। তার এ অর্জনে আমরা গর্বিত ও আনন্দিত।
গ্লোবাল ভিডিও কম্পিটিশনে তানজিনা বিজয়ী
গ্লোবাল ভিডিও কম্পিটিশনে ৬০টিরও বেশি দেশ থেকে অংশগ্রহণকারী প্রায় ৪০০ প্রতিযোগীকে পরাজিত করে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কিশোরী তানজিনা নওশিন বিজয়ী হয়েছে। এই প্রতিযোগিতার আয়োজক যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অন ফাইন্যান্সিং গ্লোবাল এডুকেশন অপরচুনিটি যা এডুকেশন কমিশন হিসেবে পরিচিত। আয়োজকদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছেÑ তরুণ প্রজন্ম ভবিষ্যৎ শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে কী ভাবছে, সে বিষয়ে তাদের মতামতভিত্তিক ৩০ সেকেন্ডের ভিডিওর মাধ্যমে এই প্রতিযোগিতা হয়। কানাডায় জন্মগ্রহণ করা তানজিনা (১৯) এখন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে। তার বাবা সিলেট থেকে কানাডায় অভিবাসী হয়ে টরেন্টোতে ব্যবসা করছেন। তানজিনার বাবা নুরুল মোস্তফা রায়হান জানান, আমার মেয়ের জন্ম ও বড় হওয়া কানাডায় হলেও সে উত্তরাধিকার সূত্রে বাংলাদেশের সংস্কৃতি পেয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন তার মেয়ের কৃতিত্ব কানাডা ও বাংলাদেশের জন্য সুনাম বয়ে আনবে। প্রতিযোগিতায় ১৩ থেকে ৩০ বছরের বয়সী মেয়েরা অংশগ্রহণ করে। এতে প্রতিযোগীদের দুটি প্রশ্ন করা হয়েছে, যার উত্তর তাদের ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে দিতে হয়েছে। প্রশ্ন দুটি ছিল : (১) আপনার ভবিষ্যতের প্রস্তুতির জন্য কোন শিক্ষাকে সেরা মনে করেন? (২) আপনি ভবিষ্যতে কী ধররের বিদ্যালয় দেখতে চান?

য় শাহনাজ বেগম

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন