শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

সৎ সাহস থাকলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন: এমরান সালেহ প্রিন্স

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ আগস্ট, ২০২১, ২:৫৬ পিএম

সৎ সাহস থাকলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে জনপ্রিয়তা যাচাই করতে আওয়ামী লীগকে চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-নেতারা বলে থাকেন যে, আওয়ামী লীগ সরকারের জনপ্রিয়তা আরও বেড়েছে।

দলের পক্ষ থেকে আমরা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি, আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বলে কিচ্ছু নেই, তাদের জনপ্রিয়তা এখন শুণ্যের কোঠায়।

পুলিশের বন্দুক আর গুম-খুন-মামলা-জেল দিয়ে ভয়ঙ্কর শাসন কায়েম করে মানুষকে দমন করা হচ্ছে।

সৎ সাহস থাকলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে জনপ্রিয়তা যাচাই করার জন্য এর আগেও আমরা আওয়ামী লীগকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছিলাম।

কিন্তু সরকার সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ভীত হয়ে নিজেদের সরকারের অধীনে অনুগত প্রশাসনের মাধ্যমে দিনের ভোট রাতে অনুষ্ঠিত করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কলঙ্কিত ও ব্যর্থ করে দিয়েছে।

আমরা এখনও সরকারকে আহবান জানাই-এতই যদি জনপ্রিয়তা বেড়ে থাকে তাহলে এখন ক্ষমতা ছেড়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে জনপ্রিয়তা যাচাই করুন।

এদেশের জনগণ আপনাদের জনপ্রিয়তা দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।

মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, অনৈতিক আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী-নেতাদের এখন লাজ-লজ্জা বলতে কিছু নেই। তাদের নির্লজ্জ মিথ্যাচার করতে লজ্জাবোধ হয়না।

আওয়ামী লীগ শুধু দুর্নীতি-দু:শাসন-লুটপাট আর অর্থ পাচার নয়, মিথ্যাচারেও সমান পারদর্শী। আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কালের নাৎসি সরকারের কুখ্যাত তথ্যমন্ত্রী জোসেফ গোয়েবলসের মিথ্যার থিউরিতে ডুবে আছে।

বিএনপির বিরুদ্ধে প্রতিদিন চিরাচরিত মিথ্যাচারের ভাঙ্গা রেকর্ড বাজিয়ে বিষোদগার করাই হচ্ছে তাদের এজেন্ডা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন-বিএনপি হত্যার রাজনীতির উত্তরাধিকার বহন করছে।

তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই-হত্যার রাজনীতি শুরু হয়েছিল মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের আমলেই, সিরাজ সিকদারকে হত্যাসহ স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে রক্ষীবাহিনী সৃষ্টি করে অগণিত মুক্তিযোদ্ধা, বিরোধী দলের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষকে হত্যার ইতিহাস এদেশের জনগণের মানসপট থেকে এখনও বিলীন হয়নি।

তিনি বলেন, আসলে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর গুডবুকে থাকতে এখন আওয়ামী নেতা-মন্ত্রীরা মিথ্যাচারের প্রতিযোগিতায় নেমেছে।

একবার মন্ত্রীত্ব হারিয়ে এবার মন্ত্রীত্ব ফিরে পাওয়া বর্তমান তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমানের বিরুদ্ধে বিষোদগার ও মিথ্যাচার করতে অত্যন্ত পারদর্শী।

এই হাসান মাহমুদ সাহেবকেই আওয়ামী লীগের প্রবীণ প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ উপ-নেতা বেগম সাজেদা চৌধুরী কোন এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাকে প্রকাশ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বেয়াদব হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন।আমরা এর চেয়ে আর বেশী কি বলতে পারি।

সরকারের তথ্য প্রতিমন্ত্রী শহীদ জিয়াউর রহমানের হত্যাকান্ডের সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার সম্পর্ক আবিস্কার করে নতুন আষাঢ়ে গল্প ফেঁদেছেন-যা গোয়েবলসকেও হার মানায়।

নতুন করে আবার ২১ আগস্ট নিয়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে মিথ্যাচার শুরু হয়েছে, অথচ ঢাকার সাবেক মেয়র হানিফ পুত্র সাঈদ খোকন হাটে হাাঁড়ি ভেঙ্গে দিয়ে বলেছেন-তারা আগে থেকেই এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীকে সাবধান করেছিলেন, কিন্তু তিনি তা শোনেননি।

এমনকি, সরকার বা প্রশাসনকেও অবহিত করেননি। সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের এই বক্তব্য খুবই রহস্যজনক বলে জনগণ মনে করে।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, অবৈধ মিডনাইট সরকার দেশকে আইয়্যামে জাহেলিয়াতের মতো পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে।

বর্তমানে সারাদেশে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা ধর্ষণ, নারী নির্যাতন-খুন-দখল ও গুমের উৎসবে মেতে উঠেছে।দেশে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে।

কোভিড-১৯ করোনা মহামারিতে দ্বিগবিদিক জ্ঞানশুন্য মানুষ চরম অসহায় ও দুর্বিপাকগ্রস্ত হয়ে পড়লেও সরকার করোনা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ তো করছেই না, বরং জোর করে ক্ষমতা ধরে রাখতে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার ও তাদের ওপর জুলুম নির্যাতন বাড়িয়ে দিয়েছে।

দেশ পরিচালনার মতো করোনা মোকাবেলাতেও সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এখন টিকা সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনাতেও ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে।

করোনা নিয়ে সরকারের ব্যর্থতা, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, সমন্বয়হীনতা দেশ-বিদেশে সমালোচিত হচ্ছে। অথচ বিএনপি নিজস্ব সামর্থ্য নিয়ে করোনা রোগীদের সহযোগিতায় ঔষধ, অক্সিজেন, খাদ্যসহ অন্যান্য সহায়তা দিচ্ছে।

বিএনপি’র এই মানবিক উদ্যোগেও আওয়ামী দুর্বৃত্তরা হামলা চালাচ্ছে, বাধা দিচ্ছে। বিনা ভোটে ক্ষমতা দখলকারী ব্যর্থ সরকার কোন কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।

সব কিছুই এখন তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হওয়ায় জনগণের নিকট তাদের কোন জবাবদিহিতা নেই। করোনায় অসহায় মানুষকে রক্ষা নয়, বরং জনগণ তাদের বিপক্ষে বলেই তারা জনগণকে শত্রু ভেবে বিভিন্ন কায়দায় জনগণের ওপর প্রতিশোধ নিতে ব্যস্ত রয়েছে।

বরিশালে প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্বের বিষয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, বরিশালে প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামী নেতাদের ব্যানার-ফেস্টুন উচ্ছেদের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও তাদের অনুগত প্রশাসনযন্ত্রের মাঝে শুরু হয়েছে টানাপোড়েন।

শুধু তাই নয়-এর আগেও দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারী প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ওপর আওয়ামী নেতারা বিভিন্নভাবে হামলা, রক্তাক্ত ও তাদেরকে হেনস্তা করেছিল। সরকারী কর্মকর্তারা বিবৃতি দিয়ে আওয়ামী দুর্বৃত্তদের দুর্বৃত্তপনা বিষয়ে বলতে বাধ্য হয়েছেন।

বরিশালের ঘটনা সারাদেশে আওয়ামী দুর্বৃত্তায়নের ক্ষুদ্রাংশ মাত্র। অথচ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর দিনের ভোট আগের রাতে অনুষ্ঠিত করা হয়েছিল এই অনুগত প্রশাসনের মাধ্যমেই।

এখন তারা নিজেরা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনে দেশে এখন কোন শ্রেণী-পেশার মানুষ আওয়ামী লীগের হাতে নিরাপদ নয়। আমরা অবিলম্বে প্রশাসনের প্রতি আওয়ামী দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় এনে বিচার দাবী করছি।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এড. আব্দুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, সহ-দফতর সম্পাদক মোহাম্মদ মনির হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য খান রবিউল ইসলাম রবি, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি একেএম আবুল কালাম আজাদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক কাজী ইফতেখারুজ্জামান শিমুল, শ্রমিক দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাফিজুল করিম মজুমদার, মোরশেদ আলম।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
মোহাম্মদ দলিলুর রহমান ২৪ আগস্ট, ২০২১, ৫:৫৮ পিএম says : 0
হিন্দিতে বলে (লাঢ়কি লোকের এতনা হিম্মত কোথায় হবে,আওয়ামী লীগের সবাই লাঢ়কিকা সেম সেম ইসলিয়ে ডরতাহে শাহেত হুকুমতছে নিকালেগাতে ও লোগেকে জনগণ তালাক দিয়ে দেয়গা,ঐ ডরছে ঐ লোক নি নিকালরাহে ,আবি এ লাঢ়কি লোক কে জনগণ তালাক দেনাকা জরুরি হে ।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন