লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী তরুণী ধর্ষণের শিকার হয়ে ৭মাসের অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়েছেন। উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের মধ্য হাজি বাড়ির আকরাম হোসেন শাহেদ মিয়ার ঘরে রং মেস্ত্রী মামুন কর্তৃক এ ঘটনা ঘটায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বুদ্ধি প্রতিবন্ধী তরুণীর মা বাদী হয়ে কমলনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। গৃহকর্তা সাহেদের পরামর্শ তৎপরতায় ধর্ষিতা প্রতিবন্ধির জবানবন্ধিতে উপজেলার চরফলকন ইউনিয়নের মোহাম্মদ আলীর ছেলে মো. মামুন হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করা হলেও বিষয়টি মানতে নারাজ ওই ভুক্তভোগী পরিবার। তাদের দাবি শাহেদ মিয়ার পরিবারের যে কেউ এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তড়িগড়ি করে বুদ্ধি প্রতিবন্ধিকে বাদী বানিয়ে থানায় অভিযোগ করিয়েছেন সাহেদ। স্থানীয় ও ভুক্তভোগী পরিবার সুত্রে জানা যায়, দুই বছর আগে একই ইউনিয়নের প্রতিবন্ধি এ তরুনীকে গৃহপরিচারিকার কাজে নেয় আকরাম হোসেন শাহেদ। গত ২০-২৫দিন আগে শাহেদ মিয়া তরুনী অসুস্থ বলে তার মামা ও নানীকে ওই বাড়িতে ডেকে নেয়। ওই সময় শাহেদ তরুনীর পেটে টিউমার হয়েছে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে বলে মামা ও নানীকে বলেন। পরে দ্রুত সে মামাকে সাথে নিয়ে লক্ষ্মীপুরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই সময় তার আল্ট্রাস্নোগ্রাম করানো হলে তার পেটে ৭ মাসের একটি সন্তান রয়েছে বলে রিপোর্ট আসে। পরে শাহেদ মিয়া বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে অবৈধ গর্ভপাত করানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। উপায়ন্ত না পেয়ে সে তরুনীর পরিবারকে তাদের মেয়েকে নিয়ে যেতে চাপ প্রয়োগ করে।এতে তরুনীর মামা ও নানী অস্বীকৃতি জানায়। এর কিছু দিন পরে শাহেদ স্থানীয় হাজিরহাট ইউপি চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন ও চরফলকন ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন বাঘাসহ তার আরো কিছু শুভাকাঙ্খিদের নিয়ে তার বাড়িতে একটি বৈঠক বসে। ওই বৈঠকে শাহেদ মিয়া জানায় ৭মাস আগে তার বাড়িতে চরফলকন ইউনিয়নের মোহাম্মদ আলীর ছেলে মো মামুন হোসেন রংয়ের কাজ করেছে। ওই রং মিস্ত্রি তার গৃহপরিচারিকাকে তাদের অজান্তে ধর্ষণ করেছে এবং বর্তমানে সে অন্ত:সত্ত্বা । বর্তমানে ছেলেটি প্রবাসে রয়েছেন।তখন শাহেদ মিয়া নিজ উদ্যোগে ৫০হাজার টাকা দিয়ে তরুনীকে বিদায় করে দিতে উপস্থিত সবাইকে অনুরোধ করেন।সে সময় ভুক্তভোগী পরিবার তাদের এ প্রস্তাব মেনে না নিয়ে তারা চলে যায়।
বুদ্ধি প্রতিবন্ধি তরুনীর নানী জানান, তার মেয়ের জামাই (গৃহ পরিচায়িকার বাবা) দুই সন্তান রেখে অল্প বয়সে মারা যায়। অনেক কষ্ট করে তার মেয়ে ও দুই নাতিনকে বড় করেছেন তিনি। অভাব- অনটনের কারণে তার নাতিনকে শাহেদ মিয়ার বাসায় কাজে দিয়েছেন। তার বাসায় এত বড় ঘটনা ঘটলো!আর সাত মাস পরে তাদেরকে জানানোর প্রয়োজন হলো! শাহেদ মিয়ার ঘরে তার নাতিনের সর্বনাশ হয়েছে। তিনি এর সঠিক বিচার চান।
এদিকে আকরাম হোসেন শাহেদের মুঠোফোনে বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও সে ফোন রিসিভ করেনি।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন জানান, ভুক্তভোগীর বক্তব্যের আলোকে একজনকে আসামী করে মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়াও আর কেউ জড়িত কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন