শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

সাতক্ষীরায় চেক জালিয়াতি মামলায় বিজ্ঞাপন প্রতিনিধিকে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন

সাতক্ষীরা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০২১, ৬:০৪ পিএম

সাতক্ষীরায় জেলা পরিষদের চেক জালিয়াতি মামলায় পত্রিকার বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি আমিনুর রশিদ সুজন (৪৫) কে সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করেছে ডিবি পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইনস্পেক্টর মোঃ জহিরুল ইসলাম বুধবার (২৫ আগষ্ট) দুপুরে সাতক্ষীরা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই আবেদন করেন।

আটক আমিনুর রশিদ সুজন সদর উপজেলার আলিপুর ইউনিয়নের বুলারআটি গ্রামের ডাঃ সৈয়দ আলমের ছেলে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাকে আটক করা হয়। আমিনুর রশিদ সুজন দৈনিক কালের কন্ঠ ও ডেইলি সানের সাতক্ষীরার বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ইনস্পেক্টর মোঃ জহিরুল ইসলাম জানান, ২৩ জুলাই ২০২০ তারিখ সোনালী ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখা হতে একটি চেকে ৬ লাখ টাকা উত্তোলন করেন জনৈক আশরাফ হোসেন নামের এক ব্যক্তি। এরপর ২৭ আগষ্ট ২০২০ তারিখ ৬ লাখ ১০ হাজার টাকা উত্তোলন করতে একই ব্যাংকে আসেন জনৈক ব্যক্তি। চেকের পাতায় প্রেরকের নাম লেখা হয়েছে আবুল হোসেন। বিষয়টি সাতক্ষীরা সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হলে তারা জেলা পরিষদ কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। এসময় ব্যাংককে জানানো হয়, এই নামে কাউকে চেক প্রদান করা হয়নি। তখন ব্যাংক চেকটি ডেভিট না করে প্রেরককে খুঁজতে থাকে কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কথা চালাচালি বুঝতে পেরে ততক্ষণে সটকে পড়েন টাকা তুলতে আসা জনৈক আবুল হোসেন। এঘটনার পর সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা খলিলুর রহমান বাদী হয়ে ২৯ আগষ্ট ২০২০ তারিখ সদর থানায় অজ্ঞাত আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, জেলা পরিষদের তিনটি চেক হারিয়ে গেছে।
সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তার দায়েরকৃত মামলাটির তদন্ত আসে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) অফিসে। ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে এই মামলায় আমিনুর রশিদ সুজনকে আটক করা হয়। ডিবি কার্যালয়ে জেলা পরিষদের কর্মকর্তা ও সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমিনুর রশিদ সুজনকে সনাক্ত করার পর তাকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়। একই সাথে আরো জিঙ্গাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে। আদালতের আদেশে পরবর্তীতে রিমান্ড শুনানী হবে। তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশে ইতিমধ্যে ৬ লাখ ১০ হাজার টাকার চেকটি জব্দ করা হয়েছে।

এদিকে, সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেকে টাকা উত্তোলন ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা খলিলুর রহমানের মামলা দায়েরের বিষয়টি সচেতন মহলে মিশ্র পতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। প্রশ্ন উঠেছে চেকগুলো কি আদৌ হারিয়েছে ? না-কি জেলা পরিষদের কোনো কর্মকর্তার যোগসাজোসে টাকা উত্তোলন ও উত্তোলনের চেষ্টা করা হয়েছে। জেলা পরিষদের চেকে সই- সিল করা আছে পরিষদের চেয়ারম্যান ও নির্বাহি কর্মকর্তার। আর এডভাইসে সই-সিল রয়েছে এই দুই কর্মকর্তা ছাড়াও একাউন্টটেন্ট আবু হুরাইয়ার। চেকগুলো যদি হারিয়ে বা চুরি হয়েই যায় তাহলে, নিয়ম অনুযায়ি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা। একই সাথে ব্যাংককে নো পেমেন্ট বলে জানিয়ে রাখা। কিন্তু এক্ষেত্রে এসবের কিছুই করা হয় নি। তাহলে কি সরষের ভেতরে ভুত ! জেলা পরিষদের কেউ জড়িত থাকলে তাকেও আইনের আওতায় আনার দাবী তুলেছেন সচেতন মহল।

এবিষয়ে জানার জন্য মামলার বাদী জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা খলিলুর রহমান ও একাউন্টেন্ট আবু হুরাইয়ার ফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা কেউ রিসিভ করেন নি। যেকারণে তাদের বক্তব্য দেওয়া সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের নানান দূর্ণীতি ইতোমধ্যে জেলায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। খেয়াঘাটের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতসহ বিভিন্ন ধরণের মামলায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে জেলা পরিষদ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন