মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে জুলহাস হাওলাদার নামে এক অটোরিকশা চালককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার কুমারভোগ ইউনিয়নের পদ্মা সেতুর রেলওয়ের ৩ ও ৪ নম্বর পিলারের নিচে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকা ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিহত জুলহাস হাওলাদার উপজেলার কুমারভোগ পুনর্বাসনের বাসিন্দা মৃত হাসান হাওলাদারের ছেলে। জুলহাস হাওলাদারের স্ত্রীসহ দুইটি সন্তান রয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল সকাল সাড়ে ৬টার দিকে পদ্মা সেতুর কাজে নিয়োজিত নিরাপত্তা কর্মীর ১৫-১৮ জনের একটি দল জুলহাসকে চুরির অভিযোগে রড দিয়ে হাত-পা বেঁধে এলোপাথাড়ি মারধর করে। পরে নিরাপত্তা কর্মীর সিপ্ট ম্যানেজার মো. সেলিম জুলহাসের বাসায় খবর দিলে ছুটে আসে স্বজনরা। এসে দেখে হাত-পা বাঁধা রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছে। এ অবস্থা দেখে জুলহাসকে চন্দ্রেরবাড়ি বাজারে একটি হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং তারা অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে বললে জুলহাসকে ইয়াসমিন দেলোয়ার হাসপাতালে নিলে সেখানেও ডাক্তার পায়নি তারা। পরে শ্রীনগর সরকারি হাসপাতাল ষোলঘরে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জুলহাসকে মৃত ঘোষণা করে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। সেই সাথে এ ঘটনায় লৌহজং থানায় একটি মামলার প্রস্তুতিও চলমান রয়েছে।
এদিকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে গ্রেফতার করে। পরে ওদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন-সেলিম, রাব্বি, তপু, আল-আমিন, আরিফ, আব্দুল মান্নান, ইসরাফিল। বাকি তিন জনের পরিচয় অজ্ঞাত রয়েছে। এরা সকলেই পদ্মা সেতুর নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে কর্মরত।
গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। সেই সাথে পুলিশ এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার অভিযান চলমান রেখেছে। এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন জেলার অতিরিক্ত সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীনগর সার্কেল) মো. আসাদুজ্জামান ও লৌহজং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলমগীর হোসাইন।
এদিকে এ ঘটনায় লৌহজংয়ে কুমারভোগ পুনর্বাসন কেন্দ্রসহ মাওয়ায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা বলছেন, পদ্মা সেতুর চারপাশে সারাক্ষণ সেনাবাহিনী থাকে কিন্তু এ ঘটনাটি ঘটলো অথচ সেনাবাহিনীর চোখে পড়লো না। এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সেই সাথে দ্রুত আসামিদের আইনগত শাস্তি প্রদানের দাবি জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন