জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ যমুনা সার কারখানায় (জেএফসিএল) বিধিবহির্ভূত নিয়োগকৃত শ্রমিকদের বেতন বন্ধ হওয়ায় তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ হয়েছে। গতকাল বিক্ষোভ চলাকালে সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে মারধর করেছে শ্রমিক সরবরাহকারী ঠিকাদারের লোকজন। অভিযোগ রয়েছে, নিয়োগপ্রাপ্ত ৪৮৬ জন শ্রমিকের অধিকাংশই নীতিমালা অমান্যসহ দায়িত্বে অবহেলা করে আসছেন। এরমধ্যে ৬১জন খন্ডকালীন শ্রমিক বিধিবহির্ভূতভাবে নিয়োগ নিয়ে কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে মাসের পর মাস বেতন উত্তোলন করায় সম্প্রতি তাদের বাদ দেওয়া হয়।
জেএফসিএল সূত্র জানায়, যমুনা সারকারখানায় দরপত্র বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দৈনিক ৩৭৫ টাকা হাজিরা (কাজ নাই তো মজুরি নাই) ভিত্তিক ৪২৫জন শ্রমিককে নিয়োগ দেয় কর্তৃপক্ষ। শ্রমিক সরবরাহের কার্যাদেশ পায় সরিষাবাড়ী বাসস্ট্যান্ডের মেসার্স জান্নাত এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত জনবলের বাইরে অতিরিক্ত আরো ৬১ জন শ্রমিককে নিয়োগ ও মাসের পর মাস বেতন দেওয়ায় কারখানায় নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) অডিটে তাদের বেতন বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পক্ষে কারখানার মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মঈনুল হক গত ২৯ আগস্ট ৬১ জন শ্রমিককে বাতিল করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পত্র দেন।
এদিকে পত্র পাওয়ার পর ঠিকাদারের লোকজন ও বাতিলকৃত শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সোমবার থেকে তাঁরা কারখানা এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিক্ষোভ চলাকালে শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি আব্দুস সালাম ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান প্রশাসনিক ভবনের সামনে আসামাত্র বিক্ষুব্ধরা তাদের গতিরোধ করে। এ সময় সিবিএ›র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে টিকাদারের লোকজন হামলা চালিয়ে তাদের মারধর করে।
সিবিএ নেতাদের মারধরের অভিযোগ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে ঠিকাদার মো. সাখাওয়াত আলম মুকুলকে গতকাল দুপুরে মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। তবে মঙ্গলবার তিনি জানিয়েছিলেন, আমি ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ঠিকাদারি করছি, খন্ডকালিন ৬১ জন শ্রমিককে আমার আগের ঠিকাদার নিয়োগ দিয়েছিল। কর্তৃপক্ষ আমার সাথে কথা না বলেই ওদের বাদ দিয়েছে, এতে এলাকার কিছু লোক কর্মহীন হয়ে পড়ল।
এ ব্যাপারে যমুনা সারকারখানার মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মঈনুল হক বলেন, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সুপারিশ ও মৃত্যুজনিত শূন্যপদের বিপরীতে নিয়োগ অতিরিক্ত ৬১ জনকে খন্ডকালীন নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু কারখানার নিয়মে অনুমোদন রয়েছে ৪২৫ জনের, তাই বাকিদের বাদ দেয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন