বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সোনালি আসর

কাশবনের ঘাসফড়িং

প্রকাশের সময় : ১০ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

হা সা নু জ্জা মি ল মে হে দী
শরৎকালে কত সুন্দর মেঘ ভাসে আকাশে, যেন পেঁজা তুলো। নিপুর ই‘েছ হয় উড়াল দিয়ে মেঘ ধরতে, কিন্তু কিভাবে ধরবে, পাখা তো নেই! একদিন তো বাবার কাছে বায়না ধরেই ফেললো- ‘বাবা আমায় পাখা কিনে দাওনা, আমি উড়াল দিয়ে মেঘ ধরে আনবো!’ ছোট্ট মেয়ে নিপু, সে কি আর এতসব বুঝে? এরকম কত বায়নাই তো শুনতে হয় বাবাকে। এইতো যেমন কয়েকদিন আগে তো বলেই ফেললো, বাবা আমায় একটা আকাশ কিনে দাওনা।
নিপুর ছোটকাকু ঢাকায় পড়ে, এবার ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসার সময় সুন্দর এক প্যাকেট রং পেন্সিল আর আঁকার খাতা নিয়ে এসেছে নিপুর জন্য। প্রিয় উপহার পেয়ে নিপু কি যে খুশি! স্কুল থেকে এসেই শুরু করে দেয় আঁকিবুকি। কখনো আঁকে গাছের পাখি, কখনো পানির মাছ, কিংবা ডাঙ্গার ব্যাঙ। এতসব আর্ট করেও যেন তার মন ভরছিলোনা, মন চাইছিলো শুধুই মেঘ ছুঁতে, আকাশে উড়ে বেড়াতে। তাই একদিন নিপুকে ওর মা বললো, তুমি তো আঁকতে পারো আকাশের ছবি, উড়ে যাওয়া মেঘে। নিপুর মুখে যেন ফুটে উঠলো এক ঝলক সুখের হাসি। মনে মনে ভাবলো, তাইতো! আমি তো নীল আকাশ আর ভেসে যাওয়া সাদা মেঘের ছবি আঁকতে পারি। যেই বলা সেই কাজ, আকাশের ছবি আঁকতে হবে।
সময় তখন বিকেল। সূর্যটা যেমন ক্রমেই পশ্চিমে ছুটে চলছে তেমনি ধূসর হয়ে উঠছে। শরৎতের বিকেল থাকে স্নিগ্ধ, আকাশ থাকে ঝকঝকে পরিষ্কার। নিপু তার আঁকার খাতা আর রং পেন্সিলের বাক্স নিয়ে বাড়ির বাইরে চলে এলো, আকাশে তাকালো, দেখত পেলো সাদা মেঘের দম কেমন উড়ে চলছে। আর দেরি না করে নিপু আঁকতে শুরু করলো। আঁকলো আকাশ, মেঘ, কয়েকটা পাখিও। এত মনোযোগ দিয়ে আঁকছিলো যেন কল্পনায় আকাশে ভেসে চলছ, শরৎতের সাদা মেঘের মত। ওদের বাড়ির একটু দূরেই বিল, বিলটাও দেখতে পাচ্ছে নিপু। শরৎকালে বিলের ধারের কাঁশবনে সুন্দর কাঁশফুল ফোটে তা তো আর বলার অপেক্ষা করেনা। ওখানেও ফুটে আছে সারি সারি সাদা কাঁশফুল, দক্ষিণা বাতাসে দোল খা‘েছ। উপরে সাদা মেঘ, নিচে ধবধবে সাদা কাঁশফুল, কি অপরূপ। আর অপেক্ষা না করে পেন্সিল হাতে নিয়ে তার আঁকা আকাশের নিচে আঁকতে লাগলো বাতাসে দোল খাওয়া কাঁশফুল। মাকে বললো, মা চল কাঁশফুল দেখতে যাবো। বলেই নিপু দৌড়াতে শুরু করলো কাঁশবনের দিকে, পিছে পিছে যাচ্ছে মা। নিপু একটি কাঁশফুল হাতে নিয়ে নাড়তে লাগলো, ঝড়ে পড়া সাদা পাপড়িগুলো উড়ে বসতে লাগলো নিপুর গায়। আর দু চার পা এগোতেই পায়ের শব্দে উড়তে থাকলো অসংখ্য সুন্দর সুন্দর ঘাসফড়িং। একটি ঘাসফড়িং এসে বসলো নিপুর আঁকার খাতায়। নিপু তার আঁকা কাঁশবনে একে দিলো কয়েকটি উড়ন্ত ঘাসফড়িং। ততক্ষণে আকাশে উড়ার কথা ভুলে গেছে সে। ছবিটির নাম দিলো ‘কাঁশবনের ঘাসফড়িং’। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে, মা বললো, চল যাই। নিপু বললো -‘মা আমি কাঁশবনের ঘাসফড়িং হবো!’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন