লাল তালিকাভুক্ত ‘এ’ ক্যাটাগরির ১২টি লিজিং কোম্পানির ৯৬ শতাংশ থেকে সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণখেলাপি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গত কয়েক বছরের বিভিন্ন অডিট প্রতিবেদনে এমনই তথ্য উঠে এসেছে। এসব প্রতিষ্ঠানে দু’বছর আগেও বিনিয়োগ করে এখন মূল টাকা ফেরত পাওয়াই অনিশ্চিত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের।
এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারিকে দায়ী করছেন ভুক্তভোগী ও অর্থনীতিবিদ। পেনশন, সবার জীবনের একটি সময়ের বিশেষ নিরাপত্তা। কিছুটা বাড়তি অর্থনৈতিক নিরাপত্তার কথা ভেবে লিজিং কোম্পানিতে যারা সেই অর্থলগ্নি করেছিলেন এখন অসহায় তারা। অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে বাংলাদেশ বাংকের ১২টি লাল তালিকাভুক্ত এ ক্যাটাগরির লিজিং কোম্পানি রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি ৯৬ শতাংশ, পিপলস লিজিং ৬৭ শতাংশ, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ও ফাস্ট ফাইন্যান্স ৪৯ শতাংশ ঋণখেলাপি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়েও এসব প্রতিষ্ঠানের উন্নতি হয়নি। দুদক আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলছেন, এর দায় এড়াতে পারে না বাংলাদেশ ব্যাংক। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক লাইসেন্স দিচ্ছে, লাইসেন্সের মধ্যে অনেক নিয়মনীতি থাকে। সে যদি টাকার অনিয়ম করে, লন্ডারিং করে তাহলে ওই নিয়মনীতির মধ্যে সেগুলো পড়ে যাচ্ছে অটোমেটিকভাবে। লন্ডারিং তদন্ত করবে দুদক অথবা সিআইডি।
নিয়মনীতিগুলো ঠিকমতো হচ্ছে কিনা সেটা দেখবে কিন্তু ব্যাংলাদেশ ব্যাংক। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ধস এড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারি ও দক্ষ জনবল বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছেন সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি আরো বলেন, আমার মনে হয় এক্ষেত্রে নজরদারি কম, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারি বাড়াতে হবে। বিশেষ একটি শাখা আছে সেখানে আরও কর্মতৎপরতা বাড়াতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রতিদিন অডিট করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
কারণ এখানে জনগণের আমানত ও ব্যবস্থা বাণিজ্য ওতপ্রোতভাবে জড়িত। দ্বিতীয়ত হলো বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক পর্ষদগুলোকে আরো দক্ষ হতে হবে, আরও কর্মদক্ষতা বাড়াতে হবে, সৎভাবে করতে হবে। এটার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা বিভাগের যে আইনগুলো আছে সেগুলো পালন করতে হবে, সেগুলো করে কিনা দেখতে হবে। না করে থাকলে তারপরে ব্যাংকের পরিচালকরা, ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে। খুব কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে যখন এরা ব্যতিক্রম করে, প্রয়োজন হলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইন অনুসারে ব্যবস্থা নিতে হবে। বিভিন্ন তদন্ত সংস্থার তথ্য বলছে, লিজিং কোম্পানিগুলোর অর্থ লোপাটে জড়িত থাকার অভিযোগে শতাধিক কর্মকর্তা অভিযুক্ত রয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন