শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

বিশ্ব কি আরেকটি স্নায়ুযুদ্ধের কবলে পড়তে যাচ্ছে?

নজরুল ইসলাম ভুঁইয়া | প্রকাশের সময় : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত অকাস চুক্তি নিয়ে উত্তাল আন্তর্জাতিক বিশ্ব। চুক্তি মতে, অস্ট্রেলিয়াকে পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিন তৈরির প্রযুক্তি দেবে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন। দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের প্রভাব মোকাবেলার প্রচেষ্টা হিসেবে এই চুক্তিকে দেখা হচ্ছে। এখানে অস্ট্রেলিয়ার স্বার্থের চেয়েও যুক্তরাষ্ট্রের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত হিসাব-নিকেশ কাজ করছে। সেই হিসাব-নিকেশকে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য এতটাই গুরুত্ব দিচ্ছে যে, তাদের ন্যাটো মিত্র ফ্রান্সকেও ক্ষেপিয়ে তুলতে দ্বিধা করেনি। অস্ট্রেলিয়া ফ্রান্সের সঙ্গে ১২টি ডিজেলচালিত সাবমেরিন কেনার জন্য ২০১৬ সালে স্বাক্ষরিত চার হাজার কোটি ডলারের চুক্তিটি বাতিল করছে। আমেরিকা, ব্রিটেন, ইউরোপ আর এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা একে বলছেন, এক মোড়-বদলকারী ঘটনা, যা পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত-মহাসাগরীয় অঞ্চলের কৌশলগত হিসাব-নিকেশ পাল্টে দেবে। পৃথিবীতে এখন মাত্র ছয়টি দেশের হাতে পারমাণবিক সাবমেরিন আছে। দেশগুলো হলো, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও ভারত। পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিন শত্রুপক্ষের চোখ এড়িয়ে গভীর সমুদ্রের নিচে ডুবে থাকতে এবং দ্রুত চলাচল করতে পারে, আর তার উপস্থিতি চিহ্নিত করাও অনেক কঠিন। সাধারণ সাবমেরিনের সীমাবদ্ধতা হচ্ছে, এগুলো হয় ডিজেল বা বৈদ্যুতিক শক্তিচালিত। ডিজেল ইঞ্জিনে জ্বালানি পোড়ানোর জন্য বাতাস দরকার, আর ইলেকট্রিক ইঞ্জিনের জন্য ঘন ঘন রিচার্জ করা দরকার। এ কারণে সবচেয়ে উন্নত ধরনের ‘কনভেনশনাল’ সাবমেরিনও এক নাগাড়ে কয়েক দিনের বেশি পানির নিচে ডুবে থাকতে পারে না। তাদের জ্বালানির জন্য পানির ওপর ভেসে উঠতে হয় বা বাতাস নেবার নলটিকে পানির ওপরে ভাসিয়ে রাখতে হয়। ফলে তার শত্রুপক্ষের চোখে ধরা পড়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। অন্যদিকে, এখন যেসব পারমাণবিক সাবমেরিন তৈরি হচ্ছে, সেগুলো কোনো রিফুয়েলিং ছাড়াই মাসের পর মাস পানির নিচে থাকতে পারে। এগুলো অনেক বেশি ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে পারে এবং তা অনেক বেশি দূর পর্যন্ত নিক্ষেপ করতে পারে। সুতরাং পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিনের মালিক হবার পর অস্ট্রেলিয়ান সামরিক বাহিনীর সক্ষমতা অনেক বেড়ে যাবে। তারা অস্ট্রেলিয়ার আশপাশে প্রশান্ত মহাসাগরের বহুদূর পর্যন্ত এলাকায় গোপন নজরদারি ও টহল দিতে পারবে। অস্ট্রেলিয়া মনে করছে, এ অঞ্চলে চীনের প্রভাব ও হুমকি এতটাই বেড়ে গেছে যে, তা মোকাবিলা করতে হলে ঠিক এই জিনিসটাই তাদের দরকার। অস্ট্রেলিয়া পারমাণবিক অস্ত্রমুক্তকরণ চুক্তিতে স্বাক্ষর দানকারী একটি দেশ। তাই তাদের পক্ষে পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হওয়া বা তা মোতায়েন করা নিষিদ্ধ। সে কারণে বাইডেন এবং মরিসন উভয়েই বলেছেন যে অস্ট্রেলিয়ার এই সাবমেরিনে পারমাণবিক অস্ত্র বহন করা হবে না। মনে করা হচ্ছে, খুব সম্ভবত এই পারমাণবিক সাবমেরিনে প্রচলিত সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপযোগ্য ক্রুজ মিসাইল, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং অন্যান্য প্রযুক্তিও থাকবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেহেতু এটি পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন, তাই এতে যদি শুধু প্রচলিত অস্ত্রই থাকে এবং এতে কোন বিদেশি ক্রু না-ও থাকে, তার পরও এটা প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় নৌশক্তির ভারসাম্য বদলে দিতে পারবে। এগুলো তৈরি হবে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার এডিলেইডে। কমপক্ষে আটটি সাবমেরিন তৈরি হবে, তবে এগুলো কোথায় মোতায়েন হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক সাবমেরিন তৈরি করতে দেবার মধ্যে দিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের দাবিকে চ্যালেঞ্জ করতে এক বিশাল পদক্ষেপ নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। পারমাণবিক অ্যাটাক সাবমেরিন পাওয়া এক বিরাট ব্যাপার এবং তা এক বিরাট বার্তা দিচ্ছে। পাঁচ বছর আগে এটা কল্পনা করাও কঠিন ছিল, আর ১০ বছর আগে তা ছিল অসম্ভব ব্যাপার। এ থেকে ওই অঞ্চলে চীনের আচরণ কেমন, তারও একটা আন্দাজ পাওয়া যায়। ওয়াশিংটন ও লন্ডন থেকে অবশ্য বলা হচ্ছে, এই পদক্ষেপের লক্ষ্য চীন নয়। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, অস্ট্রেলিয়াকে এ প্রযুক্তি দেয়ার পেছনে চীনকে ঠেকানো ছাড়া আর কোনো কারণ থাকতে পারে না। এশিয়াতে সত্যি সত্যিই এক নতুন স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হতে যাচ্ছে এবং তাতে যুক্তরাষ্ট্রই জিতবে বলে অস্ট্রেলিয়া বাজি ধরেছে। চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত ব্যবস্থার সাথে অস্ট্রেলিয়া যুক্ত হলো এবং এটা হলো তাকে আরো গভীর করার এক সিদ্ধান্ত। চীন ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে বড় বাণিজ্যিক অংশীদারিত্ব আছে এবং বহু চীনা ছাত্র অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করে। কিন্তু এই সাবমেরিন চুক্তির পর অস্ট্রেলিয়া এখন নিজেকে চীনের বৈরী দেশে পরিণত করলো। করোনাভাইরাস মহামারির উৎস সন্ধানের এক বৈশ্বিক তদন্তে অস্ট্রেলিয়া সমর্থন দেবার পরই দু’দেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক খারাপ হয়। এরপরই দেখা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে মিত্রতা গভীরতর করতে চাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। পারমাণবিক সাবমেরিন পেলেই অস্ট্রেলিয়া যে চীনের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়ে যাবে, তা নয়। তবে এতে ওই অঞ্চলের ক্ষমতার ভারসাম্য পাল্টে যাবে।

অন্যদিকে পিঠে ছুরি মারার মতোই ফ্রান্সকে না জানিয়ে চুক্তি করায় ফ্রান্স ক্ষুব্ধ হয়ে বলছে, এই নিরাপত্তা চুক্তির মাধ্যমে দেশ দুটি ফ্রান্সের সঙ্গে বিশ্বাসভঙ্গ ও অপমানজনক আচরণ করেছে। নতুন এই চুক্তি মিত্রদেশগুলোর সম্পর্কের মধ্যে ‘মারাত্মক সংকট’ সৃষ্টি করেছে। ফ্রান্স শুধু অস্ট্রেলিয়ার ওপর ক্ষুব্ধ নয়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের ওপরেও ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। কারণ, ফ্রান্সের দীর্ঘদিনের পুরোনো মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে ফ্রান্সের ক্ষতি করে অস্ট্রেলিয়াকে বাগিয়ে নেওয়ার ঘটনা নিশ্চয়ই বন্ধুর মতো কাজ নয়। অস্ট্রেলিয়ার সাবমেরিন চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার পদক্ষেপ পশ্চিমা মিত্রদের মধ্যে একটি অভূতপূর্ব কূটনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করে দেশ দু’টির বিরুদ্ধে ‘দ্বৈততা, ঘৃণা ও মিথ্যাচার’ করার অভিযোগ এনেছে। কারণ, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে তার সাবমেরিন বিক্রির চুক্তি বাতিলে শতকোটি ইউরো অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে ফ্রান্স।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস জাতিসংঘের অধিবেশন সামনে রেখে সম্ভাব্য নতুন ‘শীতল যুদ্ধ’ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনকে সতর্ক করে দুই দেশকে তাদের সম্পর্ক পুনর্গঠনের আহবান জানিয়ে বলেন, আমাদের যে কোনোভাবে এ স্নায়ুযুদ্ধকে এড়িয়ে যেতে হবে, যা আগের স্নায়ুযুদ্ধ থেকে হবে আলাদা। এটা হবে সম্ভবত আরও বেশি জটিল ও সমাধান করার ক্ষেত্রে কঠিন। দুর্ভাগ্যবশত আমরা কেবল সংঘাতে লিপ্ত। আমাদের দুই পরাশক্তির মধ্যে চলনশীল সম্পর্ক পুনস্থাপন করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার ত্রিদেশীয় নতুন জোট ও চুক্তি ঘিরে চীনও উদ্বেগে রয়েছে। আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল চীনের। এর ওপর নতুন করে সাবমেরিন চুক্তি ঘিরে চীন এখন নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে বাইরের শক্তির হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে সতর্ক করে দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিইও) সম্মেলনে সি চিন পিং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর প্রধানদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘যেকোনো অজুহাতে আমাদের অঞ্চলের দেশগুলোতে বাহ্যিক শক্তির হস্থক্ষেপকে প্রতিরোধ করুন এবং আপনার দেশের উন্নয়ন ও উন্নতির ভবিষ্যৎকে নিজের হাতে ধরে রাখুন।’ এর আগে বিরুদ্ধ জোট গঠনের নিন্দা জানিয়ে চীন জানায়, এই তিন দেশের জোট ‘অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন’ ও ‘ছোট মানসিকতার’। এটা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন হুমকি। স্নায়ুযুদ্ধের সময় ইউরোপে রাশিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে যে পদ্ধতি নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, এবার এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনকে দমন করতে ঠিক একই কৌশল নেওয়া হয়েছে। এটি শীতল যুদ্ধেরই মানসিকতা। চীন অস্ট্রেলিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ঘুঁটি’ হিসেবে বর্ণনা করেছে এবং এর মধ্যে দিয়ে অস্ট্রেলিয়া বিচার-বিবেচনাহীনভাবে আমেরিকার স্নায়ুযুদ্ধের বাজিতে অর্থ জোগানোর পথ বেছে নিয়েছে। এছাড়া এই অঞ্চলে সামরিক শোডাউন হলে অস্ট্রেলিয়া সবচেয়ে বিপজ্জনক পরিণতির মুখোমুখি হতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে। অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন সক্ষমতা অর্জনে চীনের ক্ষুব্ধ হওয়ার বিষয়টিকে উড়িয়ে দিয়েছেন। মরিসন চীনের সাবমেরিন সক্ষমতার দিকে ইঙ্গিত করে আকাশ ও পানিসীমায় আইনের শাসন রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন, নিজের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী করা তাদের অধিকার।

উত্তর কোরিয়াও এই চুক্তির নিন্দা জানিয়ে বলেছে, অকাস চুক্তির ফলে নতুন করে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যেতে পারে। অকাস চুক্তি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কৌশলগত ভারসাম্যকে বিপর্যস্ত করবে। পক্ষান্তরে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলে, চুক্তিটি চীনকে প্রতিপক্ষ করার উদ্দেশ্যে করা হয়নি। তবে বরিস জনসনের এ উদ্যোগ যুক্তরাজ্যকে চীনের সঙ্গে যুদ্ধে টেনে নিতে পারে বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।

অস্ট্রেলিয়ার পারমাণবিক সাবমেরিনের উচ্চাকাক্সক্ষা ঘিরে সতর্ক রয়েছে নিউজিল্যান্ড। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন বলেছেন, তাঁর দেশের পানিসীমায় পারমাণবিক শক্তিচালিত নৌযান চলাচলের ব্যাপারে যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তা বহাল থাকবে। এ কারণে প্রতিবেশী দেশ অস্ট্রেলিয়া যে নতুন সাবমেরিন তৈরি করতে যাচ্ছে, তা দেশটির পানিসীমায় ঢুকতে পারবে না। ইন্দোনেশিয়াও এই অঞ্চলে অব্যাহত অস্ত্র প্রতিযোগিতা এবং ক্ষমতা প্রদর্শন নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে একটি স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে এ স্নায়ুযুদ্ধের। স্নায়ুযুদ্ধের কারণে সেসময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে মেরুকরণ দেখা গিয়েছিল। এখন বিশ্ব নতুন করে আরেকটি স্নায়ুযুদ্ধের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বলেই ধারণা করা যায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন