শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার ছয়গাঁও ইউনিয়নের নাজিমপুর গ্রামে রিনা বেগম নামে এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে গতকাল রোববার ভোর রাতে বসত ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে হত্যা করে পালিয়ে গেছেন স্বামী সেকান্দার কাজী।
ভেদরগঞ্জ থানা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ভেদরগঞ্জের নাজিমপুর গ্রামের দেলোয়ার কাজী কৃষি শ্রমিক। সাংসারের খরচ মেটাতে তার স্ত্রী রিনা বেগম মাটিকাটা শ্রমিকের কাজ করতেন। তাদের চার সন্তান রয়েছে। সংসারে অভাব-অনটন থাকায় প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হত। করোনার কারণে এলাকায় কাজ কমে গেলে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। এ নিয়ে সংসারের অশান্তি আরো বেরে যায়। এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে এক মাস আগে দেলোয়ার বিষ পান করে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন।
গত ১৫ দিন যাবৎ দেলোয়ার কোন কাজ করছিলেন না। তাই প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় সংসার চলছিল। গত শনিবার এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীতে ঝগড়া হয়। গতকাল ভোর রাতে দেলোয়ার বসত ঘরের খাটে ঘুমন্ত রিনাকে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। বাবার এমন পরিস্থিতি দেখে ছেলে সাব্বির চিৎকার করে। তখন প্রতিবেশীরা ছুটে আসলে দেলোয়ার পালিয়ে যায়। প্রতিবেশীরা তখন স্থানীয় ছয়গাঁও ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য নীল চাঁন কাজীকে খবর দেন। নীল চাঁন কাজী সকাল ৯টার দিকে পুলিশ নিয়ে ওই গৃহবধূর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠান।
দেলোয়ারের ভাতিজি তাহমিনা আক্তার বলেন, আমাদের এলাকায় কৃষি জমি এক ফসলি। তাই এলাকায় কাজ ছিল কম। এ কারণে তাদের সংসারে অনেক অভাব ছিল। আমরা বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করতাম। এ নিয়ে চাচার সাথে চাচীর প্রায়ই ঝগড়া হত। করোনার মধ্যে তারা আরো সমস্যায় পরে যায়। চাচা অনেক সময় অস্বাভাবিক আচরণ করতেন। এভাবে চাচীকে হত্যা করবেন তা ভাবতে পারিনি।
রিনা বেগমের ভাই সোহাগ সরদার বলেন, ২২ বছর আগে বোনের বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর থেকেই তাদের সংসারে অভাব-অনটন চলছে। আমরা বিভিন্ন সময় সাহায্য করতাম। কিন্তু সে এভাবে বোনকে কুপিয়ে মেরে ফেলবে বুঝতে পারিনি। আমরা তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করব।
ভেদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পরিবারে আর্থিক দৈন্যতার কারণে স্বামী-স্ত্রীর কলহ চলছিল। বেশ কিছু দিন যাবৎ দেলোয়ার পরিবারের সদস্যদের সাথে অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন। গতকাল ভোর রাতে রিনা বেগমের মাথায় কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। পুলিশ তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন