রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খেলাধুলা

তবুও ‘কিছু’ পাওয়ার আশায় বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০০ এএম

অনেক আশা নিয়ে যাওয়া টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের প্রাপ্তি এখনও বলতে গেলে শূন্য। বরং হারাতে হয়েছে বেশ। প্রথম ম্যাচেই স্কটল্যান্ডের কাছে নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে। প্রথম রাউন্ডে যেখানে অনায়াসেই তিন ম্যাচ জিতে গ্রুপ সেরা হওয়ার কথা, সেখানে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষায় থেকে গ্রুপ রানার্স-আপ হয়েছে সুপার টুয়েলভে পা রাখতে পারে বাংলাদেশ। এই পর্বেও এখনও পর্যন্ত মেলেনি ভালো কিছু। শ্রীলঙ্কার কাছে হার দিয়ে শুরু। এরপর ইংল্যান্ডের কাছে উড়ে যাওয়া। সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হৃদয়ভাঙা হারা। গতপরশু শারজায় জেতার একদম কাছে গিয়েও হেরে যাওয়ার পর চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পরিণতি একরকম নির্ধারিত হয়ে গেছে। গাণিতিক হিসেবে যদিও আছে সেমিফাইনালের আশা। লিখে দেওয়া না গেলেও অনেকগুলো যদি, কিন্তুর সমীকরণে সেটা প্রায় অসম্ভব ব্যাপারই।
প্রথমত নিজেদের কাজটি করতে হবে আগে। বাকি থাকা দুটো ম্যাচেই জিততে হবে অস্ট্রেলিয়া আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। এরপর তাকিয়ে থাকতে হবে বাকিদের ম্যাচের মারপ্যাচেও। প্রথমত, ইংল্যান্ডের কাছে হারতে হবে অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা আর দক্ষিন আফ্রিকাকে। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছেও হারতে হবে অজিদের। তৃতীয়ত, লঙ্কানদের হারাতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। আর সর্বশেষ, এই শ্রীলঙ্কাকেই আবার জিততে হবে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে। তবেই সেমির স্বপ্ন জিইয়ে থাকবে রাসেল ডমিঙ্গোর দলের।
এমনিতে এই কন্ডিশনে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানো কিংবা অস্ট্রেলিয়াকে কঠিন সময় উপহার দেওয়া বাংলাদেশের জন্য অসম্ভব হওয়ার কথা নয়। কিন্তু দলের যা ছন্নছাড়া অবস্থা, তাতে সেই আশা করাও এখন কঠিন! অধিনায়ককে তবু আশা করতেই হয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারার পর সামনে তাকিয়ে নতুন আশার গান শোনালেন মাহমুদউল্লাহ। শুক্রবার শারজায় ক্যারিবিয়ানদের কাছে ৩ রানে হেরে আসার পর ক্লান্ত, বিধ্বস্ত কন্ঠে জানালেন, ‘এখনও অনেক কিছু পাওয়ার আছে। সেমি-ফাইনালের আশা হয়তো কিছুটা ক্ষীণ হয়ে গেছে। কিন্তু দুটি ম্যাচ আছে। আমরা যদি ম্যাচ দুটি জিততে পারি, দলের জন্য ভালো কিছু হবে।’ এবারের বিশ্বকাপে আশা নিভে গেলেও শেষ দুই ম্যাচের গুরুত্ব বাংলাদেশের কাছে চড়া। অধিনায়ক জানালেন বাকি দুই ম্যাচেও তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে, ‘আমরা চেষ্টা করছি সবাই। মরিয়া হয়েই চেষ্টা করছি সবাই মিলে। মাঠে শতভাগ নিবেদন দেওয়ার চেষ্টা করছি। ভুল হচ্ছে। তবে আমরা দুটি ম্যাচ জয়ের চেষ্টা করব।’
দুটো ম্যাচ জিতলে নিশ্চিতভাবেই কিছুটা ক্ষতে প্রলেপ তো পড়বেই। হয়ে যাবে ইতিহাসও!। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে যে বাংলাদেশের এখনো পর্যন্ত জয় মাত্র একটাই। টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষেও জয় ওই একটাই। তাও সেটা এসেছিল ২০০৭ সালে একদম প্রথম আসরে। এরপর বাছাইয়ের আদলে হওয়া প্রথম পর্বে জিতলেও মূল পর্বে আর জিততে পারেনি বাংলাদেশ। বাকি দুই ম্যাচ জিততে সাত বিশ্বকাপের মধ্যে সেরা সাফল্যও এসে যাবে। শুনতে অদ্ভুত শোনালেও এটাই সত্য। কারণ আগের বিশ্বকাপগুলোতে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল এমনই নাজুক।
তবে এই দুই ম্যাচ জিততে পারলে আরেকটি বড় কাজ হবে মাহমুদউল্লাহর দলের। ২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়াতে অনুষ্ঠিত পরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য নতুন নিয়ম আগেই জানিয়েছে আইসিসি। চলতি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভে উঠা সবগুলো দলই পরের বিশ্বকাপে সরাসরি অংশ নেবে। তবে এই ১২ দলের ৮ দল সরাসরি খেলবে সুপার টুয়েলভে। বাকি চার দলকে পেরুতে হবে এরবারের মতো বাছাইয়ের আদলে হওয়া প্রথম রাউন্ডের বাধা।
এই বিশ্বকাপে ফাইনালে উঠা দুই দলের সঙ্গে র‌্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে ঠিক হবে বাকি ছয় দল। বিশ্বকাপ শুরুর আগে র‌্যাঙ্কিংয়ে ছয় নম্বরে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু র‌্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকা স্কটল্যান্ডের কাছে হারের পর নেমে যায় আটে। পরে শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হারে রেটিং পয়েন্ট আরও কমে গেছে। আট নম্বরে অবস্থান ধরে রাখলেও পরের বিশ্বকাপের সরাসরি সুপার টুয়েলভে খেলা সম্ভব। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারলে সেই জায়গাটা নিশ্চিতভাবেই থাকবে না। আগামী মঙ্গলবার আবুধাবিতে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা, বৃহস্পতিবার দুবাইয়ে খেলা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন