বরখাস্ত ডিআইজি (প্রিজন্স) পার্থ গোপাল বণিকের জামিন বাতিলের আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। গতকাল রোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত আপিল বিভাগীয় বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
রাজধানীর নর্থ রোডের ফ্ল্যাট থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধারের মামলায় তৎকালীন কারা উপ-মহাপরিদর্শক পার্থ গোপাল বণিককে বিশেষ আদালত জামিন দিয়েছিলেন। আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলে হাইকোর্ট জামিন বাতিল করে দেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে পার্থ গোপাল বণিক আপিল করলে সুপ্রিম কোর্ট আবেদনটি নাকচ করে দেন। হাইকোর্টের আদেশই বহাল রাখেন। এর ফলে এই মামলায় এখনই তার মুক্তিলাভের কোনো সম্ভাবনা নেই। গতকাল পার্থ গোপালের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এ এফ হাসান আরিফ। দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, পার্থ গোপাল বণিকের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। অর্থাৎ হাইকোর্ট জামিন বাতিল করে যে রায় দিয়েছিলেন সেটি বহাল রয়েছে।
এর আগে গত ১৭ জুন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেনের ভার্চুয়াল আদালত পার্থ গোপাল বণিকের জামিন মঞ্জুর করেন। এতে তিনি কারামুক্ত হন। পরে এ বিষয়ে সংবাদ প্রচার করে একটি বেসরকারি টেলিভিশন। ওই জামিনের বিরুদ্ধে পরে উচ্চ আদালতে আপিল করে দুদক। গত ২৮ জুন পার্থ গোপাল বণিকের জামিন বাতিল চেয়ে দুদকের করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। পরে ২ সেপ্টেম্বর শুনানি শেষে রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে দুদকের আপিল মঞ্জুর করে পার্থ গোপাল বণিকের জামিন বাতিল করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
এদিকে, ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ থেকে মামলাটি বিচারের জন্য দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এ পাঠিয়েছেন। আগামী বছর ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে বলেছেন। এছাড়া মামলার প্রত্যেক রায় ও আদেশ উন্মুক্ত আদালতে দিতে বলেছেন। আর ভবিষ্যতের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেনকে সতর্ক করেন হাইকোর্ট। পরে ১৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন পার্থ গোপাল বণিক। আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
প্রসঙ্গত: ২০১৯ সালের ২৮ জুলাই সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের পরিচালক মুহাম্মদ ইউছুফের নেতৃত্বে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় পার্থ গোপাল বণিককে। ঘুষ ও দুর্নীতির কয়েক লাখ নগদ টাকা তার বাসায় রয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে এদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পার্থ গোপাল বণিকের বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৮০ লাখ টাকা জব্দ করা হয় এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক (বর্তমানে উপ-পরিচালক) মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে বণিকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় তিনি এখন কারাগারে রয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন