জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস গ্লাসগোর কপ২৬ সম্মেলনে বিশ্ব নেতাদের সতর্ক করে বলেছেন, আবহাওয়া পরিবর্তন রোধে দ্রুত কাজ করতে না পেরে “আমরা নিজেরাই আমাদের কবর খুঁড়ছি।” তিনি বলেন, “জীবাশ্ম জ্বালানিতে আমাদের আসক্তি মানবতাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে।” এই জ্বালানির ব্যবহার নিয়ে গুতেরেস আরও বলেন, “হয় আমাদেরকে এটি বন্ধ করতে হবে, নাহলে এটিই আমাদেরকে থামিয়ে দেবে। এখন একথা বলার সময় হয়েছে যে, কার্বন দিয়ে আমাদেরকে যথেষ্ট মেরে ফেলেছি আমরা।” “প্রকৃতির সঙ্গে আমরা টয়লেটের মতো আচরণ করছি- সেটিও যথেষ্ট হয়েছে। জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো, ড্রিলিং এবং খনিতে যথেষ্ট খনন করে আমরা গহ্বরে নিমজ্জিত হচ্ছি। আমরা নিজেরাই আমাদের কবর খুঁড়ছি।” জাতিসংঘ মহাসচিবের কথার প্রতিধ্বনি ফুটে উঠেছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কণ্ঠেও। কপ২৬ সম্মেলনের বক্তব্যে সোমবার তিনি বলেছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের এই ‘বোমা’ নিষ্ক্রিয় করতে আশু ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। বিশ্বের জন্য আবহাওয়া পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় দ্রুতই ফুরিয়ে আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মধ্যরাতের বাকি আর এক মিনিট’। প্রতীকী অর্থে এই হুঁশিয়ারি দিয়ে মধ্যরাতের পরেই আরেকটি কঠিন দিনের ইঙ্গিত দিয়েছেন জনসন। আর এর প্রেক্ষিতে বিশ্বনেতাদের সক্রিয় হওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন তিনি। বিবিসি-কে তিনি বলেন, বিশ্ব উষ্ণায়ন কমিয়ে আনতে হবে। বিশ্বনেতাদের উচ্চাকাঙ্খা থেকে কাজের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। এই প্রথমবার কয়লা নিয়ে কঠিন বিবৃতি দিলেন বরিস জনসন। এতে কয়লা নিয়ে আলোচনার পট প্রস্তুত হতে পারে। কারণ, জাতিসংঘের এই গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনের জন্য যুক্তরাজ্য সরকার যেসব মূল লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, তার অন্যতম হচ্ছে কয়লার ব্যবহার বন্ধ করতে দেশগুলোকে উদ্বুদ্ধ করা। বিশ্বের দেশগুলো গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরন কমাতে যথেষ্ট কাজ না করায় বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বাড়ছে- এ নিয়ে বিজ্ঞানীদের উদ্বেগের মধ্যেই যুক্তরাজ্য আয়োজন করেছে কপ২৬ আবহাওয়া সম্মেলন। এর আগে ২০১৫ প্যারিসে আবহাওয়া সম্মেলনে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে ধরে রাখার আহ্বান জানানো হয়েছিল। বেশির ভাগই ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে এই তাপমাত্রা ধরে রাখাকে গুরুত্ব দিয়েছিল। রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন