রাজধানীতে গণপরিবহণে যে যেভাবে পারছে সেই ভাবে ভাড়া আদায় করছে। রাজধানীর গুলিস্তান থেকে কাজলার ভাড়া ছিলো ৫ টাকা সেই ভাড়া এখন ১৫-২৫ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। লোকাল ১৫ টাকা আরবার সিটিং ২৫। সিটিং নামে সেই বাসগুলোতেও দাঁড়িয়ে যাত্রী নেওয়া হয়। কোনো যাত্রী প্রতিবাদ করলে পরিবহন শ্রমিকরা মারমুখো হয়ে নানা ভাষায় গালাগাল করে। ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জের ভাড়া ছিলো ৩০ টাকা এখন নেওয়া হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। অতিরিক্ত ভাড়া দিতে না পেরে অনেক গরীব মানুষ কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এদিকে রাজধানীর গাবতলী, মহাখালী ও যাত্রাবাড়ী বাস কাউন্টারগুলোতে দূরপাল্লার পরিবহনে ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। নির্ধারিত ভাড়ার চাইতে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে টিকিট বিক্রি করতে দেখা গেছে। অতিরিক্ত ভাড়া নিলেও দেখার যেন কেউ নেই। তবে, বাড়তি ভাড়া আদায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে এ নৈরাজ্য বন্ধে সরকারের মনিটরিং দরকার বলে মনে করছেন যাত্রীরা। এ জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) সরেজমিনে গাবতলী দূরপাল্লার বাস কাউন্টারে দেখা গেছে, সরকারি নির্ধারিত ভাড়ার চাইতে টিকিট কাউন্টারে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। যার কাছে যেভাবে পারছে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। কাউন্টারগুলো তো এক ধরনের মাছ বাজারে পরিণত হয়েছে। দু'একটি কাউন্টারের সামনে নতুন ভাড়ার চার্ট টাঙানো থাকলেও অধিকাংশ কাউন্টারে দেখা যায়নি। ভাড়ার তালিকা না থাকায় ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে।
ফরিদপুর যেতে সৌখিন পরিবহন থেকে ৩০০ টাকার টিকিট ৪০০ টাকায় কিনেছেন খালিদ হোসেন। তিনি জানান, ফরিদপুরের টিকিট প্রথমে ৫৫০ টাকা চেয়েছিল, দামাদামি করে সেটি ৪০০ টাকায় নিয়েছি। অথচ সরকার নির্ধারিত নতুন ভাড়া অনুযায়ী ফরিদপুরের ভাড়া আসে ৩৮০ টাকা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৌখিন পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা জানান, মালিক যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছে সেভাবেই দাম রাখা হচ্ছে।
কুষ্টিয়া যেতে সোহাগ নামে এক ব্যক্তি গ্রীন এক্সপ্রেস পরিবহনের টিকিট কাউন্টার থেকে ৪০০ টাকার টিকিট কিনেছেন ৫৫০ টাকায়। নিয়মিত সোহাগ পরিবহনে যাতায়াত করেন বলে বাড়তি ভাড়া দিয়ে টিকিট কিনেছেন তিনি।
গ্রীন এক্সপ্রেসের টিকিট বিক্রেতা জাহাঙ্গীর জানান, সরকার নির্ধারিত নতুন ভাড়ার চাইতে কম রাখা হয়েছে। নতুন তালিকা অনুযায়ী ৬০০ টাকার বেশি ভাড়া আসে বলেও জানান তিনি।
উত্তরবঙ্গের চলাচল করা পরিবহন এস আলম কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা সুজিত জানান, নতুন চার্ট অনুযায়ীই বাসের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে।
পাশেই শ্যামলী পরিবহন থেকে কুষ্টিয়া যেতে ৫৫০ টাকায় টিকিট দিয়েছেন আব্দুল হাকিম। টিকিটের গায়ে ৫০০ টাকা লেখা থাকলেও ৫০ টাকা অতিরিক্ত আদায় করা হয়েছে। তিনি জানান, গত এক সপ্তাহ আগে কুষ্টিয়ার বাস ভাড়া ৪০০ টাকা নিলেও এখন ৫৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে, চুয়াডাঙ্গার রোডে চলাচলরত ডিজি চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স, রয়েল এক্সপ্রেস, ঈগল পরিবহনের টিকিট বিক্রেতারা নির্ধারিত নতুন ভাড়া চেয়েও কম দামে টিকিট বিক্রি করছেন বলে দাবি করেন।
এদিকে রাজধানীর সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী থেকে ছেড়ে যাওয়া সব বাসের ভাড়া অতিরিক্ত ১০০ থেকে ১৫০ করে নেওয়া হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন