শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

খালেদা জিয়ার কিছু হলে দায়-দায়িত্ব সরকারের

বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেয়ার দাবি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে তার দায়-দায়িত্ব সরকারকে বহন করতে হবে বলে হুশিয়ারী দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, এই নেত্রী (খালেদা জিয়া) গণতন্ত্রের নেত্রী এবং তার যদি কিছু হয়ে যায় সমস্ত দায়-দায়িত্ব কিন্তু এই সরকারকে বহন করতে হবে। এই কথা খুব পরিস্কার। এদেশের ডাক্তারো ইতোমধ্যে বলেছেন, তার অসুখগুলোর যদি সত্যিকার অর্থে সুষ্ঠু চিকিৎসা করতে হয় তাহলে এই দেশে সেই ধরনের কোনো মেডিকেল সেন্টার বা হাসপাতাল নেই যা এই মাল্টি ডিসেপ্ল্যানারি ডিজিজের চিকিৎসা করতে পারে। এজন্য অবিলম্বে অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেয়ার দাবি জানান। গতকাল নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আশু সুস্থতা কামনা এই দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। পরে বিশেষ মোনাজাত অংশ নেন কয়েক‘শ নেতা-কর্মীর।

মির্জা ফখরুল বলেন, আপনাদের (সরকার) শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। দয়া করে আপনারা মানবতার স্বার্থে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বাইরে চিকিৎসার সুযোগ করে দেন। ইতোমধ্যে তার পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। বার বার বলা হয়েছে এবং তার পরিবারের থেকে আবেদন করা হয়েছে যে, অন্তত মানবতার স্বার্থে তাকে বাইরে চিকিৎসা করবার সুযোগ দেয়া হোক। আমরা এই বিষয়ে বার বার করে বলেছি, কিন্তু তাকে চিকিৎসার সেই সুযোগ দেয়া হচ্ছে না।

তিনি বলেন, বিচারের প্রহসনে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে সাজা প্রাপ্ত হয়ে দেশনেত্রীকে অন্তরীন করে রাখা হয়েছে এবং আওয়ামী সরকারের বিরাজনীতিকরণের যে নীতি, ম্যাডাম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার যে চক্রান্ত সেই চক্রান্তের একটা অংশ হিসেবে আজকে তিনি অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে আছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ম্যাডাম খালেদা জিয়াকে কেন্দ্রীয় কারাগারের পরিত্যক্ত গৃহে অন্তরীন করে রেখেছিলো প্রায় আড়াই বছর। সেই সময়ে তার কোনো চিকিৎসা হয়নি। জনগণের চাপে পড়ে যখন তাকে পিজি হাসপাতালে নিয়ে আসলো। এরপরে তাকে করোনা শুরু হওয়ার সময়ে কিছু ভীত হয়ে তাকে বাসায় যাওয়ার অনুমতি দেয়া হলো।
খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, তিনি অত্যন্ত অসুস্থ, অনেক বেশি অসুস্থ। আমি ঠিক আপনাদের বলে বুঝাতে পারবো না।

খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া কামনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা পরম করুনাময় আল্লাহতালার কাছে এই দোয়া জানাব, তিনি যেন তাকে সুস্থ করেন শুধু বিএনপির জন্য নয়, তার পরিবারের জন্য নয়, এদেশের ১৬ কোটি স্বাধীনতাকামী মানুষের জন্য তাকে আমাদের বড় প্রয়োজন। তিনি হচ্ছেন সেই নেত্রী যিনি হেমিলনের বংশীবাদকের মতো। যিনি তার সারাটা জীবন ধরেই সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন।

দলের প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর পরিচালনায় দোয়া মাহফিলে বিএনপির শাহজাহান ওমর, আবদুল আউয়াল মিন্টু, আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, শাহিদা রফিক, অধ্যাপক সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, রুহুল কবির রিজভী, জহির উদ্দিন স্বপন, নাজিম উদ্দিন আলম, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, এবিএম মোশাররফ হোসেন, মীর সরফত আলী সপু, শামীমুর রহমান শামীম, বেলাল আহমেদ, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, আমিরুজ্জামান শিমুল, হায়দার আলী লেলিন, আমিরুল ইসলাম আলীম, আকরামুল হাসান, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আবদুল কাদির ভুঁইয়া, শহিদুল ইসলাম বাবুল, রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, রফিকুল ইসলাম মাহতাব, অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তালুকদার, আবুল কালাম আজাদ, মামুন হাসান, এসএম জাহাঙ্গীর প্রমূখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

নরসিংদী থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, বিএনপির চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় নরসিংদী জেলা বিএনপি গতকাল মঙ্গলবার বাদ আছর দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ দোয়া মাহফিলে বক্তব্য রাখেন নরসিংদী জেলা বিএনপিসাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন মাস্টার। সভাপতিত্ব করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদীর সাবেক সংসদ সদস্য খায়রুল কবির খোকন। দোয়া পরিচালনা করেন চিনিশপুর মসজিদের ইমাম ফয়জুল করিম। উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির নেতা আকবর হোসেন, আমীনুল হক বাচ্চু, হাবিবুর রহমান মিলন, শাহজাহান মল্লিক ও ছাত্র-দল, যুবদল, শ্রমিকদল, তাঁতী দলসহ সকল অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

খায়রুল কবির খোকন বলেন, এ সরকার দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচন দিয়েও পরাজিত হচ্ছে। বহুপ্রার্থী জামানত হারাচ্ছে। নিজেরা নিজেরাই মারামারি খুনাখুনি করছে। এসব মিলিয়ে সরকার এখন দিশেহারা হয়ে গণতন্ত্রের ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। সরকারের পায়ের নিচে এখন মাটি নেই। সরকার গণতন্ত্রের ভাষা হারিয়ে অগণতন্ত্রের ভাষায় কথা বলছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন