কাশ্মীরের শ্রীনগরে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ৪ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো। পুলিশ বলছে, নিহতদের মধ্যে ২ জঙ্গি, তাদের এক আশ্রয়দাতা এবং এক বেসামরিক নাগরিক রয়েছে। সোমবার স্থানীয় সময় হায়দারপোরায় একটি বহুতল ভবনের ভেতর এ গোলাগুলি হয় বলে তারা জানালেও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা একে ‘সাজানো বন্দুকযুদ্ধ’ বলে দাবি করেছে। নিহতদের মধ্যে একজনকে ‘মানবঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে বলেও দাবি তার এক আত্মীয়ের। “২ জঙ্গি, এদের মধ্যে হায়দার নামের একজন বিদেশি এবং তার স্থানীয় সহযোগী, সম্ভবত জম্মুর বানিহাল এলাকার বাসিন্দা, তারা নিহত হয়েছে। আমরা স্থানীয়জনের লাশ শনাক্তে বানিহাল থেকে একটি পরিবারের সদস্যদের ডেকেছি,“ বলেছেন কাশ্মীর পুলিশের মহাপরিদর্শক বিজয় কুমার। নিহতদের মধ্যে ভবনের মালিক, বারজুল্লার বাসিন্দা আলতাফ ভাটও আছে। বহুতল ওই ভবনেই তার অফিস ছিল বলে জানিয়েছে দ্য হিন্দু। পুলিশ বলছে, আলতাফ দুই পক্ষের গুলি বিনিময়ের মধ্যে পড়ে মারা গেছেন। “নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের গুলি নাকি জঙ্গিদের গুলিতে তার মৃত্যু হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি; জঙ্গিদের কাছেও পিস্তল ছিল। তার (আলতাফ) মৃত্যুর কারণ তদন্তের পর স্পষ্ট হবে,” বলেছেন কুমার। নিহত চতুর্থজনের নাম মুদাসির গুল বলে জানিয়েছে পুলিশ; শ্রীনগরের রাওয়ালপোরার বাসিন্দা মুদাসির দন্তচিকিৎসক থেকে পরে ব্যবসায়ী হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেন। “সম্ভবত তিনি হায়দার ও তার সহযোগীকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। তিনি জঙ্গিদের আশ্রয় দিতেন এবং এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পৌঁছে দিতেন। “মুদাসির হায়দারকে শ্রীনগরের জামতলার একটি হামলার স্থান থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ায় জড়িত ছিলেন; (রোববার) জামতলার ওই হামলায় এক পুলিশ গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। মুদাসির ছিলেন ‘ওভারগ্রাউন্ড’ কর্মী, যিনি জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়ায় সরাসরি জড়িত ছিলেন,” বলেছেন পুলিশের এ মহাপরিদর্শক। বন্দুকযুদ্ধের স্থল থেকে দুটি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, আধা ডজন মোবাইল ফোন ও কয়েকটি কম্পিউটার উদ্ধার করা হয়েছে, বলছে পুলিশ। হায়দারপোরার এই হাইটেক আস্তানার কাজ কী ছিল, একটি বিশেষ তদন্ত দল তা খতিয়ে দেখবে। “ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ফোন ও কম্পিউটারগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোনো দেশের যোগসাজশ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে,” বলেছেন তিনি। কুমার জানান, আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সমস্যার আশঙ্কায় নিহত বেসামরিকের লাশ শেষকৃত্যের জন্য তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। পরিবারের সদস্যরা আলতাফ ও মুদাসিরকে ‘নিরীহ বেসামরিক’ অভিহিত করে বলেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদেরকে খুন করে ঘটনাকে বন্দুকযুদ্ধ হিসেবে সাজিয়েছে। “প্রত্যক্ষদর্শীরা আমাদের বলেছেন, আমার বাবাকে তিনবার ভবনের ভেতরে নেওয়া হয়েছে। তাকে দুইবার বেরিয়ে যেতে দেওয়া হয়েছিল, তৃতীয়বার মেরে ফেলা হয়েছে। কোনো বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেনি। মুসলমান বলেই তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। এনডিটিভি, দ্য হিন্দু।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন